নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব প্রতিনিধি ) : নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে গণধর্ষণের বিচার চেয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়াকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। এতে উভয় পক্ষের ৯ জনের নাম উল্লেখ করে ৩শ থেকে ৪শ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় ইউপি সদস্যসহ ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা সবাই আওয়ামী লীগের সমর্থক ও বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী বলে জানা যায়। ১৭ আগস্ট সোমবার সকালে আড়াইহাজার থানা পুলিশের উপ–পরিদর্শক (এসআই) পলাশ কান্তি রায় বাদী হয়ে মামলাটি করেন। দুপুরে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়।
এদিকে মামলার পর সোমবার সকালে আবারও উভয় গ্রুপের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ১৫টি ঘর–বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
গ্রেফতাররা হলেন, উপজেলার খাগকান্দা ইউনিয়নের বাহেরচর এলাকার মৃত করিম প্রধানের ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা তোফাজ্জল হোসেন (৪৭), মৃত আবুল কাসেমের ছেলে ও ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য লোকমান (৪৫), মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে আবু সিদ্দিক ওরফে খোকন (৫০), সিদ্দিকের ছেলে শাহিন (২০), কাইরাইল মোড়া এলাকার রশীদের ছেলে পিয়ারিস (২৩), মৃত বাতেনের ছেলে মুকবল হোসেন (৪৯), নুরুল ইসলামের ছেলে গিয়াসউদ্দিন (৩২), সোহবানের ছেলে মোশারফ হোসেন (৩২), কাকরাইল মোড়া এলাকার আলমাসের ছেলে নাঈম (২০), মৃত আউয়ালের ছেলে জাকারিয়া (৪২), বাহেরচর এলাকার মজিবুর রহমানের ছেলে ইসমাইল (২৫), শাহাবউদ্দিনের ছেলে আবু তাহের (৩৫) ও একই এলাকার আউয়ালের ছেলে হযরত আলী (৪০)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ আগস্ট উপজেলার কাকাইল মোড়া গ্রামে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় বিভক্ত হয়ে পড়ে কাকাইল মোড়া গ্রামের মানুষ। ধর্ষণের ঘটনার বিচার চেয়ে কয়েকদিন আগে ওই গ্রামের আগামী নির্বাচনে মেম্বার প্রার্থী জুলহাসের লোকজন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়। এতে বর্তমান মেম্বার লোকমান ও তার সহযোগী তোফাজ্জলসহ আরও কয়েকজনকে দায়ী করা হয়।
এ নিয়ে লোকমান ও জুলহাসের লোকজনের মধ্যে গত ১৬ আগস্ট রবিবার দিনভর সংঘর্ষ চলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ শর্টগানের ৩২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় আড়াইহাজার থানা পুলিশের কনস্টেবল আসাদুজ্জামান ও বজলুর রহমানসহ উভয় গ্রুপের ৩০ জন আহত হন। উভয় পক্ষের অন্তত ২০০ শতাধিক বসত–বাড়ি ও একটি মুদি দোকান ভাঙচুর করা হয়। ১৭ আগস্ট সোমবার সকালে ফের সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আড়াইহাজার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।