অপকর্ম ঢাকতে সেই শাহজাহানের নির্দেশে এবার মানববন্ধনের প্রস্তুতি

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টার ) : ফার্মেসী ব্যবসায়ীদের কাছে অভিযান পরিচালনার নামে বেআইনীভাবে জরিমানা টাকা আদায়ের সংবাদ প্রকাশের পর এবার সেই শাহজাহানের নির্দেশে ভুক্তভোগীদের ভয় দেখিয়ে মানববন্ধন করার খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে কাচঁপুর ও সুগন্ধা হাসপাতালের অস্থায়ী কার্যালয় সহ ইমন ম্যডিকেলেও দফায় দফায় আলোচনা করা হয়েছে। সোমবার (১৯ জুলাই) সকাল ১১টায় চিটাংরোড ইউর্টান সংলগ্ন ডাচ বাংলা ব্যাংক এর সামনে উল্লেখিত বিষয়কে মিথ্যা অপপ্রচার চালাতে মানববন্ধনে সাংবাদিকও প্রস্তুত করা হয়েছে বলেও খবর পাওয়া গেছে। তবে প্রকাশিত সংবাদে ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন তথ্য প্রমানস্বরুপ রের্কড ও ঘটনাস্থলে শাহাজাহান খান এর অবস্থানের একটি ভিডিওচিত্র সংরক্ষিত রয়েছে।

জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ কেমিষ্ট এন্ড ড্রাগিষ্ট সমিতির সভাপতি শাহজাহান খাঁন নিজেদের অপকর্ম ধামাচাপা দিতে কাচঁপুর আঞ্চলিক নেতাদের মুঠোফোনে এই নির্দেশনা দেয়। পরে ওইসভায় সফল করতে যোগ দেন, কাচঁপুর আঞ্চলিক সভাপতি আবেদ আলী মেম্বার ও সহ সভাপতি মনির হোসেন সহ অন্যান্যরা। এর আগে শাহজাহান খানের নির্দেশে সহ সভাপতি মনির হোসেন ফোন করে ভুক্তভোগীদের আসার জন্য নানারকম  ভয় ও হুমকী দেয়। এতে করে আতংকিত হয়ে মানববন্ধনে শিখানো বক্তব্য দিতে বাধ্য হবে বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ এর প্রতিবেদকের সাথে নারায়ণগঞ্জ কেমিষ্ট এন্ড ড্রাগিষ্ট সমিতির সভাপতি শাহজাহান খাঁন এর সাথে তখন মুঠোফোনে কথা হলে সকল অভিযোগ অস্বিাকার করে বলেছিলেন, আমরা নকলবাজ ঔষধ ব্যবসায়ীদের জন্য অভিযান পরিচালনা করি।  তবে এবার অভিযান চালাইনি। নামাজ পড়তে গিয়েছিলাম। নামাজ শেষে একটি দোকানে বসেছিলাম। কথা বার্তা বলেছি, চা খেয়েছিলাম। তাদের সকল অভিযোগ মিথ্যা।

জানা গেছে, শনিবার (১৮ জুলাই) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ কেমিষ্ট এন্ড ড্রাগিষ্ট সমিতির সভাপতি শাহজাহান খাঁন এর নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জের চিটাং রোড, কাচপুর এলাকা সহ বিভিন্নস্থানেই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এসময় বিভিন্ন ফার্মেসী দোকানীকে এমআরপি বাস্তবায়নের নামে তাদের কমিশন বানিজ্যের স্বার্থে নির্ধাারিত মূল্য থেকে কিছু কম মূল্যে ঔষধ বিক্রি করার কারণে জেলার প্রশাসনিক কর্মকতাদের মিথ্যা ভয় দেখিয়ে ফার্মেসী বন্ধ করে দেয়ার হুমকী দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে শাহজাহান গং। ওইসময় কাঁচপুর এলাকার শাহাদাৎ ম্যাডিকেল কর্ণার থেকে ১০ হাজার, বিসমিল্লাহ ফার্মেসী থেকে ৯ হাজার ৫০ এবং চিটাংরোডের আমুলিয়া ফার্মেসী, খাঁন ফার্মেসী, আল সাফা ড্রাগ হাউজ, মনোয়ারা ফার্মেসী, আল আমিন ফার্মেসী, ইনসাফ ফার্মেসী, ফার্মেসী প্লাস, মেডিসিন কর্নার থেকে ৫ হাজার করে ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে শাহজাহান গং।

ওই অনৈতিক কর্মকান্ডের শিকার হওয়া ভুক্তভোগী কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, র্সবনিম্ন পাঁচ হাজার থেকে, ৯ হাজার ৫০ টাকা, কেউ ১০ হাজার, আবার কেউ এরও অধিক টাকা দিতে বাধ্য হয়েছে শাহজাহান খাঁন গং এর কাছে। যাদের একজন ভুক্তভোগী বিসমিল্লাহ ফার্মেসীর মালিক আজিজুল জানান, আমি নিজেও অনেক ধার দেনা করে এই ফার্মেসী চালিয়ে জীবীকা নির্বাহ করে আসছি। আমার এখানে অনেক সময়ই গরীব অসহায় ভিখারীও ঔষধ ক্রয় করতে আসে। এদের কাছে ১০টাকাও যদি কম রাখি এতে করে তাদের জন্য উপকার হয়। আমরাওতো অনেককে দান করি। সে হিসেবে করোনাকালে আর্থিক সংকট বিবেচনা করে ঔষধের দামটা আমার নিজ ব্যবসা থেকে ভুর্তুকি দিয়ে গরীবদের কম দামে মাঝে মাঝে ঔষধ কিছুটা কম দামে দেই। আর এমন নিছক অযুহাতকে পুজিঁ করে আমাদেরকে এমআরপি বাস্তবায়নের কথা বলে নানা ভয় দেখিয়ে ৯ হাজার ৫০ টাকা নিয়ে গিয়েছে শাহজাহান খাঁন ও তার লোকেরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন ভুক্তভোগী জানিয়েছে, গত সপ্তাহে সকল দোকানদারকে ১ হাজার টাকা করে প্রতি ফার্মেসী দোকানারকে চাঁদা দিতে বলেছিল নারায়ণগঞ্জ কেমিষ্ট এন্ড ড্রাগিষ্ট সমিতির সভাপতি শাহজাহান খাঁন। আর তা দিতে অস্বিকার জানানোর কারণেই অভিনব কৌশলে এই চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। আর তা না হলে প্রশাসন দিয়েও হয়রানী করাবে বলেও হুমকী দিয়েছে শাহজাহান খান।

উল্লেখ্য, এমনই অভিযোগে অতিষ্ট হয়ে ইতমধ্যে ভুক্তভোগীরা নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার, জেলা প্রশাসক সহ জেলা ঔষধ প্রসাশন কর্মকর্তা ও বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগও দিয়েছে। তারপরেও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে বিভিন্নস্থানে অভিযানের নামে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে নারায়ণগঞ্জ কেমিষ্ট এন্ড ড্রাগিষ্ট সমিতির সভাপতি শাহজাহান খাঁন ও তার কতিপয় লোকজন। কিন্তু প্রশাসনিক কর্মকর্তা ছাড়া এমন অভিযান চালিয়ে জরিমানা করে টাকা আদায় করার কোন অধিবার নেই বলে জানিয়েছে বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্মকতাগণ।

add-content

আরও খবর

পঠিত