নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : মানবতার দৃষ্টান্তকে দেশ পেরিয়ে সাত সমুদ্রের ওপারে নিয়ে গেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। এবার তার মানবিক কাজের প্রশংসা করেছেন নেদারল্যান্ডসের এক সাবেক পার্লামেন্ট সদস্য। জোরাম ভ্যান ক্লাভেরে নামের ওই পার্লামেন্ট সদস্য তার ভেরিফাইড ফেইসবুক পেইজে করোনা সঙ্কটকালে কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের মানবিক কাজটি তুলে ধরেছেন। শুধু তাই নয়, একজন ভিন্ন ধর্মের লোকের শেষকৃত্যের দৃষ্টান্ত থেকে প্রতিবেশী দেশ ভারতকে শিক্ষা গ্রহণের পরামর্শও দেন তিনি।
বুধবার তিনি তার ফেইসবুক পেইজে লিখেন, ছবিগুলো বাংলাদেশের একটি শেষকৃত্য অনুষ্ঠান থেকে নেয়া। একজন হিন্দু ধর্মাবল্বী ব্যক্তি করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। কিন্তু তার আত্মীয় স্বজনরা কেউ শেষকৃত্য করতে এগিয়ে আসেনি। পরে মুসলমান ধর্মের একদল মানুষ তার শেষকৃত্য করে। এটাই ইসলামের সৌন্দর্য। এটা থেকে ভারতকেও শিখতে হবে।
১৯৭৯ সালে জন্ম নেয়া ডাচ্ এই রাজনীতিক ও পার্লামেন্টরিয়ান ২০১০ সালে নিজের দল পিপলস পার্টি ফর ফ্রিডম এন্ড ডেমোক্রেসি থেকে পার্লামেন্ট সদস্য মনোনীত হন। পরে রাজনৈতিক দর্শনের বিরোধে তিনি দল ত্যাগ নিজেই ( ভিএনএল ) নামে রক্ষণশীল একটি দল গঠন করেন। একসময় ঘোর ইসলামবিরোধী বক্তা হিসেবে পরিচিত এই ডাচ্ পার্লামেন্টরিয়ান ২০১৯ সালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। এখন তিনি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ নামে পরিচিত।
৮ এপ্রিল নিজ ওয়ার্ড জামতলায় করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যুর পরে ভয়ে আত্মীয় স্বজনরা কেউ এগিয়ে আসেনি। ওই ব্যক্তির লাশ দাফন দিয়ে শুরু হয় মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের লাশ দাফন কার্যক্রম। ২২ এপ্রিল পর্যন্ত তিনি হিন্দু মুসলমান মিলিয়ে ২২জনের দাফন ও শেষকৃত্য করেন।
তার এই কাজ দলমত নির্বিশেষে সকলের কাছেই গ্রহণযোগ্যতা ও মানবিক বলে স্বীকৃতি পায়। কঠোর সমালোচকরাও তার প্রশংসায় নামেন। এমনকি নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ সেলিম ওসমান তাকে বীর বাহাদুর উপাধিও দেন।
দেশে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে শুরুতেই প্রাকৃতিক উপায়ে লক্ষাধিক হ্যাণ্ডস্যানিটাইজার বানিয়ে ও বিতরণ করে দেশব্যাপী আলোচিত হন। নিজের ওয়ার্ডে ত্রাণ কার্যক্রমেও মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বেশ প্রশংসিত।