নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজলকে কুখ্যাত রাজাকারের বাচ্চা এবং জেলা যুব মহিলালীগের যুগ্ম আহবায়ক সারমিন শাকিল মেঘলাকে ভাড়া করা গুন্ডা আখ্যা দিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. মাহমুদা মালা। তার এই স্ট্যাসাসের নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়।
এবার অ্যাড. মাহমুদা মালার স্ট্যাটাসের পাল্টা জবাব দিয়ে শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) ১২ টার দিকে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন জেলা যুব মহিলালীগের যুগ্ম আহবায়ক সারমিন শাকিল মেঘলা।
তিনি পোস্টে উল্লেখ করেন, গতকাল মাহমুদা আপার (সাংগঠনিক সম্পাদক না.গঞ্জ মহানগর আওয়ামিলীগ) ফেসবুক স্ট্যাটাস এবং এই স্ট্যাটাস বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায় দেখে খুবি মর্মাহত হয়েছি। ওনি ওনার স্টেটাসে কাজল ভাইকে নিয়ে আপত্তিকর জনক কথা বলেছে, তিনি মহানগর আওয়ামিলীগ এর গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে কীভাবে বিবেক বুদ্ধিহীনিদের মত কথা বললেন! কোথায় পেলেন গোলাম রাব্বানী চাচা রাজাকার মুনতাসীর মামুনের বইয়ে??? সেখানে ভুল তথ্য থাকতে পারে। যদি ওনি রাজাকার হয়ে থাকতেন তাহলে ওনার দ্বারা সাধারণ মানুষের ক্ষয়ক্ষতি আগুন দিয়ে ঘরবাড়ি পোড়ানোর ঘটনা ঘটত, কিন্তু এমন কোন ঘটনার কোন সংবাদ পাওয়া যায়নি এছাড়াও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের কমান্ডার ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সাহেব বলেছেন, কাজলের পিতা রাব্বানী ভাই রাজাকার ছিলেন না। তিনি শান্তি কমিটিতে ছিলেন। তিনি যদি রাজাকার হতেন তবে ১৯৭৩ সালে প্রয়াত জননেতা সামসুজ্জোহা ভাই, প্রয়াত পৌর পিতা আলী আহাম্মদ চুনকা ভাই ও রাব্বানী ভাইকে এক মঞ্চে অনুষ্ঠান করেছিলেন কি করে। সেই অনুষ্ঠান আমি স্বচক্ষে দেখেছি।
তিনি আরো লিখেছেন, কাজল ভাই আপাদমস্তক আওয়ামী লীগ এর সেবক তিনি আওয়ামিলীগ এর কোন পদে না থেকে না.গঞ্জ আওয়ামিলীগ সহ সকল অংগ সংগঠন গুলো কে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে আসছেন তিনি, তার এক ভাই জাতিয় পার্টির রাজনীতির সাথে জড়িত। কাজল ভাই মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বহুতল ভবনের স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন (বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী সাহেবের ভাষ্য মতে)। কাজল ভাইকে ঝগড়াঝাটি মারামারি হানাহানি ঘটনায় দেখা যায়নি ওনি একজন মিষ্টিভাষি মিশুক মানুষ তাহলে কীভাবে তাকে নিয়ে বিবেকহীন ভাবে কথা বলে। তিনি এই স্ট্যাটাসে আমার নাম সহ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেছেন, সেখানে তিনি আমাকে ভাড়াটে গুন্ডা হিসাবে আখ্যা দিয়েছেন। আমার একটা পরিচয় রয়েছে আমি না.গঞ্জ জেলা যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহবায়ক, ব্যক্তিগত ভাবে আমি একজন ফ্যাশন ডিজাইনার। গত ২৯শে জানুয়ারি না.গঞ্জ বারের নির্বাচন উপলক্ষে না.গঞ্জ আওয়ামিলীগ সহ সকল অংগ সংগঠন সেখানে (কোর্ট এড়িয়াতে) গিয়েছিলেন, সেই সুবাদে আমিও গিয়েছিলাম এটা দোষের কিছু নয় তার মানে এই নয় যে আমাকে নেয়া হয়েছে ভাড়া করে মারামারি করার উদ্দেশ্যে। তাছাড়া আমার উপস্থিত কালিন সময়ে এমন কোন অপ্রিতিকর ঘটনা আমি দেখিনি শুনিওনি। আপনি বলছেন আপনি আদালতে যেতে ভয় পাচ্ছেন, আবার বলেছেন আপনি ভিতু নন এবং আত্নহত্যাও করতে চান তাই আপনার উচিত ভাল চিকিৎসক এর পরামর্শ নেয়া।
তিনি লিখেছেন, আমার কথা পছন্দ না হলে কাল সকালে আবার আমাকে রাজাকারের নাতি, সন্তান, স্ত্রী কিংবা চরিত্রহীন বানাবেন না আশাকরি। কারণ আমি এমন পরিবারের সন্তান নই।
এর আগে শুক্রবার (৩১ জানুয়ারী) বিকেল ৪টায় চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজলকে কুখ্যাত রাজাকারের বাচ্চা বলে উল্লেখ করে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. মাহমুদা মালা ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
মাহমুদা মালা তার ওই পোস্টে দাবি করেছেন, ২৮ জানুয়ারি আদালতের দোতলায় খালেদ হায়দার খান কাজল তার ভাগনি সুইটি ইয়াসমিনকে দিয়ে অপদস্থ করার চেষ্টা করেন। এবং খালেদা হায়দার খান কাজল তাকে প্রকাশ্যে পেটানোর হুমকি দিয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভোটগ্রহণের দিন (২৯ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে পাবলিক প্রসিকিউটরের (পিপি) রুমে। এদিন কাজল তার নাম ধরেই বলছিলেন, মেঘলা, মনি এবং বিপ্লবকে এনেছে তাকে মারধর করার জন্য।
মাহমুদা মালা সাংসদ শামীম ওসমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, আপনার কাছে বিনীত নিবেদন, যদি আপনার আমার কোন কাজ পছন্দ না হয় আমাকে আপনি ধমক দিতে পারেন চাইলে চড় দিতে পারেন, কিন্তু কুখ্যাত রাজাকার গোলাম রাব্বানীর ছেলে কাজল আমাকে তার ভাগনীকে ও তার সহযোগীকে দিয়ে ২৮/১/২০২০ তারিখে আদালতের দোতলায় আমাকে অপদস্থ করার চেষ্টা করে কিন্তু আমার সিনিয়র ও অন্যান্য আইনজীবীর কারনে দৌড়ে সে পালিয়ে যায়। রাজাকারের বাচ্চা প্রকাশ্যে আদালতে আমাকে পিটানোর হুমকি দেয়। পিপির রুমে ২৯/১ তারিখে দুপুর ১.৩০ মিনিটে সে আমার নাম ধরে কাজল ভাই বলে সে সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে দুটা মেয়ে এনেছে মেঘলা আর মনি এবং তল্লার বিপ্লবকে এনেছে আমাকে পিটানো জন্য। যদিও বিপ্লবের সাথে আমার দেখা হয়েছে সে আমার পিছনে পিছনে এসেছে কিন্তু কোন কথা বলেনি।
মালা আরও লিখেছেন, ২০১৭ সালে এই কাজল রাইফেল ক্লাবের ভিতরে শিউলি নামে একটি মেয়েকে ঠিক করে আমাকে পিটানোর জন্য। মেয়েটি আমাকে পরে বলে দিয়েছে। তার জোড় সে আপনার বন্ধু।
মালা লিখেন, আওয়ামী লীগের মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক আমি, আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আর পিটায় রাজাকারের বাচ্চা। আমার আত্মহত্যা করা উচিৎ। আপনি বঙ্গবন্ধুর সহোচর, ভাষা সৈনিক মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শামসুজ্জোহা সাহেবের সন্তান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আদরের ছোট ভাই, আপনি থাকতে আমি রাজাকারের ছেলের হুমকী খাচ্ছি যেটা আমি মানতে পারছিনা, আপনি হয়তো জানেননা মুনতাসির মামুন, রীতা ভৌমকের বইসহ অনেক বইতে এই রাজাকারের নাম লিপিবদ্ধ আছে। আমি একজন আইনজীবী আমি তার জন্য আদালতে যেতে পারছিনা, আমি ভীতু নই, কিন্তু চোরাগুপ্তা হামলা হলে কিংবা রাজাকারের ছেলে যেহেতু কোন জঙ্গি হামলা করবে কারন সাপ আর রাজাকার এদের বিশ্বাস করা যায়না। আমি জানি আপনি এর বিহিত করবেন। কারন আপনি একজন দেশপ্রেমিক মানুষ।