নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( এম এ হাকিম ভূঁইয়া ) : নাহিদুল ইসলাম মিহাদ। জম্ম থেকে সে অটিজম (বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী)। স্বাভাবিকভাবেই তার চলাফেরা আচার-আচরণ অন্য দশজন শিক্ষার্থীর মতো নয়। অন্যের সহযোগিতা নিয়ে তাকে চলাফেরা করতে হয়। স্থানীয়ভাবে আলাদা ব্যবস্থা না থাকায় অন্য স্বাভাবিক শিশুদের সাথেই বেড়ে উঠছে সে। তবে সে পরিবারে বোঝা হয়ে থাকতে চায় না। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখে। সে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের লাসরদী এলাকার মইনুল ইসলাম মিলনের ছেলে। তার বাবা ঢাকার শ্যামপুর সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষকতা করছেন। মা শেফালী বেগম গৃহীণি। মইনুল দম্পতির দুই সন্তানের মধ্যে সবার বড় মিহাদ। বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হয়েও পড়ালেখার প্রতি রয়েছে তার প্রবল ইচ্ছা। সকল বাঁধা অতিক্রম করে সহপাঠীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জীবন গড়ার প্রত্যয়ে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় দক্ষিনপাড়া ৪৯নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির গন্ডি পেরিয়ে এখন শাহ্জালাল মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। অংশ নিয়েছে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায়।
১৪ নভেম্বর বৃহম্পতিবার ছিল তার গণিত বিষয়ক পরীক্ষা। স্থানীয় রোকন উদ্দিন মোল্লা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়ে যাচ্ছে। তবে অটিজমদের সরকারি বিভিন্ন সুযোগ দিলেও সে কোনো সুবিধা পাচ্ছে না। সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রতিবন্ধী কার্ড হলেও পাচ্ছেনা ভার্তা। তার নিজের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেও পাচ্ছে না আর্থিক কোনো সুবিধা।
রোকন উদ্দিন মোল্লা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারি প্রধান শিক্ষক ও সহকারি কেন্দ্র সচিব রফিকুল ইসলাম বলেন, নাহিদুল মেধাবী ছাত্র। তার প্রতি আমাদের যথেষ্ঠ আন্তরিকতা রয়েছে। আমরা তাকে সহযোগিতা করে যাচ্ছি। নাহিদুলের বাবা মইনুল ইসলাম বলেন, একমাত্র ছেলে চিকিৎসা চালাতে গিয়ে আমি হিমশিম খাচ্ছি। তার পরও বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে তার চিকিৎসা ও পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ছেলের নামে সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রতিবন্ধী কার্ড থাকলেও কোনো সুবিধা পাচ্ছে না। সরকারের সহযোগিতা পেলে আমি সন্তানের চিকিৎসা কার্যক্রম ও পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারব। শাহ্জালাল মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবু জহুল লাল ঘোষ বলেন, তার পরিবার থেকে লিখিত আবেদন পেলে বিদ্যালয় থেকে সাধ্যমতো সুবিধা দেয়ার চেষ্টা করব। উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মুহাম্মদ জব্বার বলেন, তার পরিবারের কাছ থেকে একটি আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। মাসিক ভার্তা প্রদানের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।