বাংলা সনের উদ্ভাবক ফতেহ্উল্লাহকে সম্মান-অধিকারের দাবিতে ফতুল্লায় মানববন্ধন

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : বাংলা সনের উদ্ভাবক কবি ফতেউল্লাহ্ সিরাজীকে সম্মান ও স্বীকৃতি দেয়ার দাবিতে গত বৃহস্পতিবার সকালে ফতুল্লার কবির মাজারের সামনে মানববন্ধন করেছে বাংলা সনের উদ্ভাবক কবি ফতেউল্লাহ্ সিরাজীর স্বীকৃতি আন্দোলন নামের একটি সংগঠন।

ফতুল্লা বাজার কমিটির সভাপতি কাজি দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক ও মনন সাহিত্য সংগঠনের সভাপতি কবি ও গীতিকার এসএ শামীম, সমন্বয়ক কাজি আনিসুল হক হীরা, এসএম সাহাবুদ্দিন,  শেখ মোঃ মনসুর আলী, নজরুল ইসলাম শান্ত, মোঃ আল মনির, জামাল খ্াঁন, আহমেদ রউফ ও ফাহমিদা এমি। এছাড়াও মানববন্ধসে অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন আবুল কালাম চৌধুরী, রাকিব চৌধুরী শিশির, মোঃ ইকবাল হোসেন, মোঃ আক্তারুজ্জামাস, শফিকুল ইসলাম, মোঃ মুহিদ, সোহেল, মোঃ রাব্বি, হৃদয় ও রাবেয়া আক্তার রিয়াসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

এ সময় নেতৃবৃন্দগণ বলেন, ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো….’ গানের সুরে বাঙ্গালি কিংবা বাংলাদেশি‘র হৃদয়ে দোলা দেয় প্রতি বছর নববর্ষ। যার পরিক্রমায় এবার পালিত হচ্ছে ১৪২৩ বঙ্গাব্দ। তবে এই বঙ্গাব্দ উদ্ভাবক হযরত শাহ্ ফতেউল্লাহ্ (রঃআঃ) ঘুমিয়ে আছেন নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা এলাকায়। তার নাম অনুসারে ফতুল্লা নামকরন করা হয়। অথচ বাংলাদেশ সরকার কিংবা বাংলা একাডেমী কেউ এখনো পর্যন্ত কবি ফতেউল্লাহ্ সিরাজী{হযরত শাহ্ ফতেউল্লাহ্ (রঃআঃ)} রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান করে নাই। যা আমাদের জন্য নিতান্ত্যই দু:খজনক। নারায়ণগঞ্জ এর মাটিতে ঘুমিয়ে থাকা কবি ফতেউল্লাহ্ সিরাজী{হযরত শাহ্ ফতেউল্লাহ্ (র:)} যেমন আমাদের জন্য পরম পাওয়ার, তেমনি পহেলা বৈশাখ কিংবা বাংলা নববর্ষ পালনে তাকে যথাযোগ্য সম্মান-মূল্যায়ন না করাও দু:খজনক।

ভারতবর্ষে মুঘল স¤্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পর স¤্রাটরা হিজরী পঞ্জিকা অনুসারে কৃষি পণ্যের খাজনা আদায় করত। কিন্তু হিজরি সন চাঁদের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় তা কৃষি ফলনের সাথে মিলত না। এতে অসময়ে কৃষকদেরকে খাজনা পরিশোধ করতে বাধ্য করতে হত। খাজনা আদায়ে সুষ্ঠুতা প্রণয়নের লক্ষ্যে মুঘল স¤্রাট আকবর বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। তিনি মূলত প্রাচীন বর্ষপঞ্জিতে সংস্কার আনার আদেশ দেন। স¤্রাটের আদেশ মতে তৎকালীন বাংলার বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও চিন্তাবিদ কবি ফতেউল্লাহ্ সিরাজী{হযরত শাহ্ ফতেউল্লাহ্ (রঃআঃ)} সৌর সন এবং আরবি হিজরী সনের উপর ভিত্তি করে নতুন বাংলা সনের নিয়ম বিনির্মাণ করেন। ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১০ই মার্চ বা ১১ই মার্চ থেকে বাংলা সন গণনা শুরু হয়। তবে এই গণনা পদ্ধতি কার্যকর করা হয় আকবরের সিংহাসন আরোহণের সময় (৫ই নভেম্বর, ১৫৫৬) থেকে। প্রথমে এই সনের নাম ছিল ফসলি সন, পরে বঙ্গাব্দ বা বাংলা বর্ষ নামে পরিচিত হয়।
বর্তমানে সারাদেশে নানা আনুষ্ঠানিকতায় পালন করা হয় পহেলা বৈশাখ কিংবা বাংলা নববর্ষ। অদৃশ্য কারনেই কবি ফতেউল্লাহ্ সিরাজী{হযরত শাহ্ ফতেউল্লাহ্ (রঃআঃ)} রয়ে গেছে পর্দার আড়ালে। তাই এবারে “বাংলা নববর্ষে এই হোক আমাদের অঙ্গিকার, উদ্ভাবক কবি ফতেউল্লাহ্ সিরাজী’কে দিতে হবে সম্মান-অধিকার”।

add-content

আরও খবর

পঠিত