নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( মো. রাশিদ চৌধুরী ) : নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার সোনাকান্দায় শীতলক্ষ্যা নদীতে একটি বেসরকারি ডকইয়ার্ডে থাকা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত জাহাজ এমভি আকরাম সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনীর অস্ত্র ও গোলবারুদ বহনের সময় মুক্তিযোদ্ধারা চাদঁপুরের ডাকাতিয়া নদীতে জাহাজটি ডুবিয়ে দিয়েছিলেন।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বিকালে জাহাজটি পরিদর্শন করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এবং সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান। যুদ্ধকালীন জাহাজটি পরিদর্শনকালে জাহাজটি মেরামত করে জনসাধারনের প্রদর্শনের জন্য রাখা হবে বলে জানান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী। তিনি বলেন, জাহাজটিকে মেরামত করে জনসাধারণের কাছে প্রদর্শনের জন্য তৈরি করতে হবে। এই জাহাজ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহান বহন করে। আগামী প্রজন্ম এই জাহাজের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহান জানবে।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব এস-এম-আরিফুর রহমান, নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়ের সচিব মো. আবদুস সামাদ, জেলা মুক্তিযুদ্ধ ইউনিট কমান্ডের সাবেক কমান্ডার মোহাম্মদ আলী, বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান মাহাবুবুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. জসিমউদ্দিন, র্যার-১১ অধিনায়ক কর্ণেল কাজি শামসেরউদ্দিন, পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতীপ্রাপ্ত নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মনিরুল ইসলাম, বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিন্টু বেপারী প্রমুখ।
জানা গেছে, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনীর গোলাবারুদ বহনকারী জাহাজ এমভি আকরামকে চাঁদপুরের ডাকাতিয়া নদীতে ডুবিয়ে দিয়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা। জাহাজটি ১৯৬৫ সালে হল্যান্ডের রটারডাম বন্দরে নির্মিত হয়। ইউনাইটেড ট্রেডিং করপোরেশন ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল ব্যাংক অব পাকিস্তান জাহাজটির মালিকানায় ছিল। স্বাধীনতার পর এটি তৎকালীন বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংকের অধীনে চলে যায়।
২০০৮ সালের মাঝামাঝি বন্দর উপজেলার সোনাকান্দা এলাকার মোক্তার হোসেন শিল্প ব্যাংক থেকে নিলামে জাহাজটি কিনে নেন। এরপর ওই বছরের ১৪ নভেম্বর ডাকাতিয়া নদী থেকে জাহাজটি তোলে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার সোনাকান্দায় শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে শাহেন শাহ’র মালিকানাধীন ডকইয়ার্ডে এনে রাখা হয়। পরে জাহাজটি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি হিসেবে সংরক্ষণের জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে দাবি উঠলে ২০০৯ সালের ১৭ আগস্ট মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে এটি সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর থেকে জাহাজটি ওই ডকইয়ার্ডে রক্ষিত রয়েছে।