নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : সিদ্ধিরগঞ্জে অক্সফোর্ড হাই স্কুলের একাধিক ছাত্রীকে ধর্ষণের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম আরিফ। মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুপুর ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ হুমায়ুন কবীরের আদালতে ১৬৪ ধারার এ জবানবন্দি দেন তিনি।
কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক হাবিবুর রহমান বলেন, জবানবন্দি গ্রহণের পর বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ মামলায় প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জুলফিকারকেও রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একাধিক শিক্ষার্থীকে ফাঁদে ফেলে, পরীক্ষায় ফেল করানো ভয় দেখিয়ে, কাউকে বেশি নম্বর দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে, আবার ফেল করা শিক্ষার্থীকে বাসায় ডেকে এনে অন্যের খাতা দেখে লেখার সুযোগ দিয়ে ধর্ষণ করে বলে স্বীকার করেছেন ওই শিক্ষক।
র্যাব-১১ এর এডিশনাল এসপি মো. আলেপ উদ্দিন জানান, আরিফুল ইসলামের মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপসহ বিভিন্ন ডিভাইস উদ্ধার করে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ২০ জনেরও বেশি ছাত্রীকে ধর্ষণ এবং যৌন নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন স্কুলের নির্যাতিত সব ছাত্রীর পরিবার এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অপর মামলাটি করে র্যাব।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মীর শাহীন শাহ পারভেজ জানান, কান্দাপাড়া এলাকার অক্সফোর্ড হাই স্কুলের সহকারী শিক্ষক আরিফুল আপত্তিকর ছবি তুলে ও গোপন ভিডিও ধারণ করে ২০ জনেরও বেশি ছাত্রীকে ব্ল্যাকমেইল করে প্রত্যেককে একাধিকবার ধর্ষণ করে। ২৪ জুন আরিফুল ইসলাম স্কুলের নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে টার্গেট করে তাকে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক স্থাপনের জন্য প্রস্তাব দেয়। ওই শিক্ষার্থী বিষয়টি তার বাবা-মা ও স্থানীয়দের জানায়।
পরে তারা বিষয়টি র্যাবকে জানালে ২৭ জুন স্কুলে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় ডিএডি আব্দুল আজিজ বাদী হয়ে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে আরিফুল ইসলাম ও তাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়ার অভিযোগে প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জুলফিকারকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এছাড়া এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় তাকে আসামি করে মামলা করেন।
ওসি জানান, দুটি মামলায় আরিফুল তিনদিন করে ছয়দিনের রিমান্ডে ছিল। রিমান্ডের তিনদিনের মাথায় তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবিন্দ দিতে রাজি হওয়ায় তাকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ হুমায়ুন কবিরের আদালতে হাজির করা হয়।