নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে চারবারের নির্বাচিত সাংসদ প্রয়াত নাসিম ওসমানের ৫ম মৃত্যুবার্ষিকীতে পরিবারের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বন্দরে নাসিম ওসমান মডেল হাইস্কুল মাঠে মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠানে জনপ্রিয় এ নেতার স্মৃতিচারন করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধিরা। নাসিম ওসমান সম্পর্কে স্মৃতিচারন করতে গিয়ে সকলেই তাদের বক্তব্যে আবেগাপ্লুত হয়েছেন।
জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের এর সভাপতিত্বে আয়োজিত উক্ত মিলাদ ও দোয়া পূর্বক আলোচনায় নাসিম ওসমান সম্পর্কে বলতে গিয়ে বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম.এ রশিদ বলেছেন, আজকের এই নাসিম ওসমান মডেল হাইস্কুলটি নাসিম ভাইয়ের হাত ধরে যাত্রা শুরু। স্কুলটির শুরু থেকে এখন অবদি আমি স্কুলটির সাথেই আছি। এখানে একটি ডোবা ছিল। নাসিম ভাই দেখতে এসে ২৭বান টিন বরাদ্দ দিয়ে স্কুলটি নির্মাণ শুরু করেন। আপনারা সবাই নাসিম ওসমানের আত্মা যেন বেহেস্ত নসিব হয় দোয়া করবেন, সেই সাথে সেলিম ওসমান এবং উনার সহধর্মিনীর মিসেস নাসরিন ওসমানের সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ুর জন্য দোয়া করবেন।
মহানগর জাতীয় পার্টির আহবায়ক সানাউল্লাহ সানু বলেন, সবাইকেই একদিন চলে যেতে হবে। কিন্তু নাসিম ভাইয়ের অকালমৃত্যুতে উনি যে কাজ গুলো অসমাপ্ত রেখে গেছেন উনারই ছোট ভাই সেলিম ওসমান সেগুলোর বাস্তবায়ন করছেন। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি সারা বাংলাদেশে ৩০০জন এমপির মধ্যে আর একজন সেলিম ওসমান পাবেন না যিনি এলাকার উন্নয়নের জন্য নিজের পকেট থেকে ১০০ কোটি টাকার উপরে খরচ করেছেন। আপনারা সবাই উনাদের সকলের জন্য দোয়া করবেন।
জেলা সেচ্ছাসেবক পার্টির সভাপতি কুতুবউদ্দিন বলেন, নাসিম ওসমান যে আমাদের মাঝে নেই সে কথা আমাদের বিশ্বাস হয়না। উনার ছোট ভাই সেলিম ওসমানের কাজের মাধ্যমেই আমাদের মনে হয় নাসিম ওসমান আছেন থাকবেন। নাসিম ওসমানরা কোনদিন হারায় না চিরদিন আমাদের মাঝে বেচে থাকবে।
সিটি কর্পোরেশনের ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হান্নান সরকার বলেন, নাসিম ওসমান আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন এটা সত্য। কিন্তু এই স্কুলটির মাধ্যমে এবং উনার কর্মকান্ড গুনে উনি আমাদের মাঝে কেয়ামত পর্যন্ত বেঁচে থাকবেন।
সিটি কর্পোরেশনের ২২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুলতান আহম্মেদ আপসোস করে বলেন, নাসিম ওসমান আমার লিডার। উনার গুনের কথা বলে শেষ করার যাবেনা। আজকে আমাদের আপসোস উনার হাত দিয়ে যে স্কুলটির জন্ম। আজকে উনি এই স্কুলটির আধুনিক রূপ দেখে যেতে পারলেন না।
মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম.এ সালাম বলেন, নাসিম ওসমান বন্দর বাসীর মাঝে ছিলেন আছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন। উনাকে হারিয়ে গত ৫টি বছর আমরা বুঝেছি আমরা কি হারিয়েছি। আল্লাহ যেন উনাকে বেহেস্ত নসিব করেন।
ধামগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুম আহম্মেদ বলেন, প্রয়াত নাসিম ভাইয়ের মাঝে মানুষকে কাছে টানার অসাধারণ গুন ছিল। শত শত নেতাকর্মীর চেহারা দেখেই উনি নাম ধরে ডাক দিতে পারতেন। উনি আমাদের মনে রেখেছেন আমরা উনাকে মনে রাখবো। উনাকে হারিয়ে উনার ভাইকে পাওয়ার মধ্য দিয়ে আমরা যেন উনাকে আবারো ফিরে পেয়েছি।
মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন বলেন, নাসিম ওসমানের বিকল্প কোন নেতা হয়না, আর হবেনা এবং উনার ছোট ভাই সেলিম ওসমানের মত একজন এমপিও আর হবে না। উনার ছোট ভাই সেলিম ওসমানের মাধ্যমে উনার অসমাপ্ত স্বপ্ন বাস্তবায়ন হচ্ছে। এ স্বপ্ন বাস্তবায়নের মাধ্যমে নাসিম ওসমান আমাদের মাঝে চিরদিন বেঁচে থাকবেন।
বন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন বলেন, নাসিম ভাই আমাদের হৃদয়ের স্পন্দন বুঝতেন। উনার পরিবর্তে উনার ভাই সেলিম ওসমানকে আমরা পেয়েছি। তাই আমি বলবো কে বলে ভাই নাসিম নাই, নাসিম মোদের সেলিম ভাই।
কলাগাছিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান বলেন, নারায়ণগঞ্জে রাজনীতির ইতিহাসে নাসিম ওসমানের মত আর কোন নেতা হবেনা। নাসিম ওসমানকে আল্লাহ বেহেস্ত নসিব এবং সেলিম ওসমানকে দীর্ঘায়ু দান করুক।
মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রয়াত সাংসদ নাসিম ওসমানের মেঝ ভাই সেলিম ওসমান সহ আরো উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি এর সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি বাচ্চু মিয়া, ১৮নং ওয়ার্ড জাতীয় পার্টির সভাপতি পলি বেগম, জেলা শ্রমিক পার্টির সভাপতি আবুল খায়ের ভূইয়া, জেলা মহিলা পার্টির সভানেত্রী আঞ্জুমান আরা ভূইয়া, ১৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফয়সাল আহম্মেদ সাগর, ২৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামসুজ্জোহা সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা।