সম্পত্তি দখলে নিতে কাউন্সিলর দুলালের প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টার ) : নাসিক ২৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন আহমেদ দুলাল প্রধানের বিরুদ্ধে সম্পত্তি দখলে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ উঠেছে। ৬৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ অসুস্থ্য বিধবা ফরিদা বেগম সহ এমনকি বাদ দেয়নি মানসিক প্রতিবন্দী ছোট ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানের জমিও। বৃহস্পতিবার ( ২৫ এপ্রিল ) সকাল সাড়ে ১১টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী। বিধবা ফরিদা বেগম বন্দর থানাধীন সামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ রোড রওশোন বাগ, নবীগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন,স্বামীর মৃত্যুর পর আমার চার ছেলে দুই মেয়ে নিয়ে শান্তিতে বসবাস করে আসছিলাম। কিন্তু আমার তৃতীয় ছেলে তানভীর আহমেদ সোহেল একদিন হঠাৎ ২০১২ সালে আমাকে এসে বলে যে তার ও আমার বড় ছেলে শফিউর রহমান ডেনটির (বর্তমানে জাপানে অবস্থানরত) সম্পতি আমার ও আমার অন্যান্য সন্তানদের নামে লিখে দেওয়ার কথা বলে সকলের কাছ থেকে সাক্ষর নেয়। এমনকি ওই দলিলে কি লেখা আছে তা আমাদের বুঝতেও দেয়নি। পরবর্তিতে এ ঘটনার প্রায় ২ বছর পরে জানতে পারি যে, সম্পত্তি আমাদের নামে না দিয়ে উল্টো প্রতারণার মাধ্যমে আমার বড় ছেলে শফিউর রহমান ডেনটির নামে লিখিয়ে নেয়। পরে আমার তৃতীয় ছেলে তানভীর আহমেদ সোহেলের নামে ওই সম্পত্তি লিখিয়ে নেয়া হযেছে।

বিধবা বৃদ্ধ মাকে তার স্বামীর ঘর থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, বাড়িতে প্রবেশ করতে দেয় না ছেলে সোহেল। ঢুকতে চাইলে আমার ছেলের স্ত্রী (সোহেলের) সায়মা আহমেদ আমাকে বলে তোর হাত পা কেটে দেব, আর এই ঘরে ঢুকতে গেলে হাত পা কেটে গুম করে ফেলবো। বর্তমানে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েই সোহেলের ব্যবসায়ীক পার্টনার নাসিক ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন আহমেদ দুলাল প্রধান ও শারমিন আমিরের সহযোগীতায় সম্পত্তি বিক্রি করতে শুরু করে। এছাড়াও র‌্যাবের মহা পরিচালক বেনজির আহমেদ, মাননীয় প্রধান মন্ত্রির মেয়ে পুতুল, শেখ রেহানা মেয়ে টিউলিব এদের নাম বিক্রি করে আমাকে নানা ভাবে হুমকি ও হয়রানী করছে। এদের পরিচয় দিয়ে আমার দ্বিতীয় ছেলে সাব্বির আহমেদ হিমেল এর নামে বন্দর থানায় একের পর এক মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করে।

অসুস্থ্য বিধবা ফরিদা বেগমের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে বড় মেয়ে মুন ইসলাম শাকিল জানান, তৃতীয় ছেলে তানভীর আহমেদ সোহেলের স্ত্রী সায়মা আহমেদ আমার দেবরের মেয়ে শারমিন আমির এবং নাসিক ২৩ নং ওয়ার্ড কান্সিলর দুলাল প্রধান প্রভাব বিস্তার করে নানাভাবে ভয় ভিতি দেখায় এবং অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে যাচ্ছে। আমাদের নানাভাবে হুমকি ও হয়রানি করছে। তাদের এরুপ কর্মকান্ড দেখে সম্পত্তি ফিরে পেতে নারায়ণগঞ্জ আদালতে একটি মামলা করা হয়। যার মামলা নং: দেওয়ানী কার্যবীদী ৯২-২০১৮। আমি এখন বাঁচতে চাই। সাংবাদিক ও প্রশাসনের কাছে সহযোগীতা ও আমার স্বামীর সম্পত্তি ফিরে পেতে চাই। সেই সাথে অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার সহ আমার অন্যান্য ছেলে-মেয়েদের সম্পত্তি ফেরত চাই।

এ ব্যপারে নাসিক ২৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন আহমেদ দুলাল প্রধান নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ এর প্রতিবেদককে জানান, সোহেল আমার একজন ভালো বন্ধু, সে সুবাধে ওর মা আমারও মায়ের সমতুল্য। আমি কখনও কোন হুমকী বা হয়রানী করিনি। শুধুমাত্র একজন জনপ্রতিনিধি হওয়ায় সমাজে হেয় করতে আমাকে জড়িযে এ ধরণের মিথ্যা অভিযোগ উঠিয়েছে। যার কোন প্রামানিক দলিল ও তথ্য উনাদের কাছে নেই। উনাদের এটা পারিবারিক বিষয়। এটা কখনও আশা করিনি মা হয়ে ছেলের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করবে। আর আমি উনাদের হুমকী দিব প্রশ্নই আসেনা।

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, মায়ের উপরে কোন কিছু নাই। মা ওই বাড়িতে থাকবে এবং তাকে কোন রকমের হুমকি বা অত্যাচার যেন না করা হয় সে বিষয়েও সোহেলকে বলে দিয়ে আসছি। তিনি যদি অত্যাচারের শিকার হন তাহলে আমাকে অভিযোগ দিতে বলেন, আমি কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

সংবাদ সম্মেলনে এসময় উপস্থিত ছিলেন, ভুক্তভোগীর বড় মেয়ে মুন ইসলাম শাকিল, ছোট ছেলে মানসিক প্রতিবন্দী মোস্তাফিজুর রহমান, ছেলে সাব্বির হিমেলের স্ত্রী রুমা।

add-content

আরও খবর

পঠিত