নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( রূপগঞ্জ প্রতিনিধি ) : রূপগঞ্জের বরপা অন্তিম নিটিং এন্ড ডাইং কারখানার শ্রমিকরা কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখে ও বকেয়া বেতনের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এসময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ঢাকা সিলেট মহাসড়কে নামতে গেলে পুলিশ বাঁধা দেয়। একপর্যায়ে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নিতে পুলিশ ৬ রাউন্ড টিয়ার সেল ও ২ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করলে শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। পুলিশের লাঠিচার্জ ও টিয়ারসেলে কারখানার শ্রমিক ও আশপাশের তিনটি স্কুলের ছাত্রছাত্রীসহ ৫০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বৃহষ্পতিবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে ঘটনাটি ঘটে।
আহত শ্রমিক আমেনা, ফারজানা, আসলাম, কাউসার জানান, গত নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসের বকেয়া বেতন জানুয়ারী মাসের ১০ তারিখে দেওয়ার কথা ছিলো। সে অনুযায়ী ১০ তারিখে শ্রমিকরা কারখানায় যান। পরে তারা কারখানার গেইটে কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখে উত্তেজিত হলে কতৃপক্ষ পুনরায় জানুয়ারী মাসের ২৪ তারিখে বেতন দেওয়ার ঘোষণা দেন। মালিকপক্ষের ঘোষণা অনুযায়ী শ্রমিকরা বৃহস্পতিবার সকালে কারখানার সামনে এসে গেটে তালা ঝুলানো দেখেন। কারখানা কতৃপক্ষ নোটিশ টানিয়ে চলতি মাসের ৩১ তারিখে বেতন পরিশোধ করার ও ৩০ জানুয়ারী পর্যন্ত কারখানা বন্ধের ঘোষণা দেন।
নোটিশ দেখে শ্রমিকরা কারখানার সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ ও শিল্প পুলিশ অবস্থান নেন। কয়েকজন শ্রমিক সড়কে নামতে গেলে পুলিশ বাঁধা দেয়। ক্ষিপ্ত হয়ে শ্রমিকরা পুলিশের উপড় ঢিল ছোঁড়ে। একপর্যায়ে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ ৬ রাউন্ড টিয়ার সেল ও ২ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। পুলিশের টিয়ারসেল ও লাঠিচার্জে কারখানার ৩০ শ্রমিক আহত হয়। পুলিশ কারখানার বাহিরে গিয়ে টিয়ারসেল নিক্ষেপ করায় আশপাশের লিটল ফ্লাওয়ার প্রি-ক্যাডেট স্কুল, বরপা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ব্রিলিয়ান্ট মডেল স্কুলের ৩০ জন ছাত্রছাত্রী আহত হয়। গুরুতর আহত স্কুল ছাত্র ঈশিকা , শিফা, রাফিন, নাহিয়ান স্থানীয় ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে কারখানার উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল হক বলেন, এ কারখানার বিষয়ে নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে প্রতিবেদন দিয়েছি। শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম দেওয়ান বলেন, শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করা উচিত। সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শ্রমিকরা প্রথমে পুলিশের উপড় ঢিল ছোঁড়ে। পরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে তিনি জানান।