প্যানেল মেয়র মতিউর রহমানের উপর হামলার নেপথ্য!

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি যিনি বর্তমানে প্যানেল মেয়র ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগ সভাপতি হিসেবেও অত্যন্ত সৎ ও নিষ্ঠার সহিত দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তার আগে এ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন সিরাজুল ইসলাম মন্ডল। মাত্র বছর দুয়েক আগেই যিনি বিএনপি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগ দেন।

৩ জানুয়ারী মতিউর রহমান মতিকে রক্তাক্ত জখম করে সাবেক কাউন্সিলর সিরাজ মন্ডলের অধিনস্থ সাবেক বিএনপি নেতা হান্নান শেখ। ৯ শতাংশ জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে যুবলীগ সভাপতি মতিকে রক্তাক্ত জখম করে প্রতিপক্ষ সিরাজ মন্ডলের অধিনস্থ হান্নান শেখ ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা।

জানা গেছে, ২০১৪ সালের জুলাইতে নারায়ণগঞ্জে পুলিশের কনস্টেবল মফিজউদ্দিন হত্যা মামলায় ওই সময়ে নাসিক কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম মন্ডলসহ ১৫জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশীট দিয়েছে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। তখন পুলিশ জানিয়েছে, ২০১৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ভোরে সিদ্ধিরগঞ্জের মুক্তিনগর এলাকা থেকে নিখোঁজ হন কনস্টেবল মফিজউদ্দিন (কনস্টেবল নং ১৫৩২)।

গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ৫ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জের কয়েকজন তেল চোরাই সিন্ডিকেটের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল কনস্টেবল মফিজউদ্দিন। সে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকাতে থাকার কারণে ওই এলাকার অনেক তেল চুরি বন্ধ থাকায় তেল চোররা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এ কারণেই ১০ সেপ্টেম্বর মফিজউদ্দিনকে সিদ্ধিরগঞ্জের মুক্তিনগর এলাকা থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে ওইদিন রাতেই ঘাতকরা তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ দাউদকান্দির মতলব রোডের মানিককান্দি এলাকায় ফেলে দেয়।

কনস্টেবল মফিজউদ্দিন সর্বশেষ আড়াইহাজার থানায় কর্মরত থাকলেও পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন সিদ্ধিরগঞ্জের মুক্তিনগরে। সে নরসিংদীর রায়পুরা থানার দিঘলিয়া কান্দির একেএম ফারুকের ছেলে। আড়াইহাজার থানার আগে মফিজউদ্দিন সিদ্ধিরগঞ্জ ও ডিবি পুলিশে চাকুরী করেছিল।

নিহতের বাবা একেএম ফারুক জানান, নারায়ণগঞ্জ ডিবিতে কর্মরত থাকাকালীন সময়ে মফিজ সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল এসও এলাকার পদ্মা ও মেঘনার তেল চোরাকারবারীদের কাছে ছিল ত্রাস। এ কারণে তাকে সেখানে যেতে বারণ করে চোরাই ব্যবসায়ীরা বার বার হুমকিও দিয়েছে। ওই ঘটনায় ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে তখনকার সময়ে ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম মন্ডলকে বহিস্কারও করা হয়।

জানা গেছে, আদমজী নতুন বাজার এলাকায় বর্তমানে সাবেক কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম মন্ডলের সমর্থক আবদুল হান্নান ও ইসমাইলদের সঙ্গে প্যানেল মেয়র মতিউর রহমান মতির অনুগামী আবদুর রাজ্জাকের ৯ শতাংশ জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। ওই বিরোধ নিয়ে কয়েকদিন ধরেই শালিসী বৈঠকও হয়।

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ওই জমিতে হান্নান শেখের ভাই ইসমাইল ঘর তুলতে চাইলে রাজ্জাক বাধা দেয় এবং মালামাল অন্য জায়গা নিয়ে যায়। এসময় হান্নান শেখ ও ইসমাইলের সঙ্গে রাজ্জাকের কথা কাটাকাটি হয়। এসময় রাজ্জাক কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতিকে খবর দিলে তিনি নতুন বাজার এলাকায় এলে ক্ষিপ্ত হয়ে ইসমাইল তার হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে মতির মাথায় ও মুখে আঘাত করে এতে মতির মাথা ফেটে যায় ও মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়, পাশাপাশি তাকে আরও রক্তাক্ত জখম করেছে সিরাজ মন্ডলের অধিনস্থ হান্নান শেখ ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে আরো জানা গেছে, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক ভাঙচুর করে সিরাজ মন্ডলের লোকজন।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহীন শাহ পারভেজ জানান, একটি জমির মালিকানা নিয়ে আওয়ামী লীগের কর্মীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ ছিল। ওই বিরোধেই প্যানেল মেয়র মতিউর রহমান মতির উপর এ হামলা করা হয়।

কাউন্সিলর মতির একান্ত সহযোগী আশরাফ উদ্দিন বলেন, হান্নান শেখের সঙ্গে রাজ্জাকের জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। ওই বিরোধ মিমাংসা করার জন্য কাউন্সলর মতি কয়েকবার বৈঠকও করেছে। ঘটনার দিন কাউন্সিলর মতিকে হান্নান শেখ গালিগালাজ করে। পরে মতি ঘটনাস্থলে গেলে তাকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয় ও কুপিয়ে জখম করে সিরাজ মন্ডলের অধিনস্থ হান্নান শেখ ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা।

তিনি আরও জানান, সুবিধা নিতে নিজেদের বাড়িঘর ভাংচুর ও কার্যালয়ে নিজেরাই আগুন দিয়েছে।

সূত্র : ঢাকার নিউজ

add-content

আরও খবর

পঠিত