নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহর লাল নেহরুর জন্মদিনটি সেই দেশে ‘শিশুদিবস’ হিসাবে পালিত হয়। অন্যদিকে একটি স্বাধীন দেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনটি আমাদের দেশে পালিত হচ্ছে শিশু দিবস হিসাবে। ১৯৯৭ সালের ১৭ মার্চ প্রথম বারের ন্যায় এই দিনটি শিশু দিবস হিসাবে উদযাপিত হয় সরকারিভাবে। ২০০১ সালের পর মধ্যখানে চার দলীয় জোট সরকারের হস্তক্ষেপে এই দিনটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত না হলেও দলীয় ও বেসরকারিভাবে উদযাপিত হয়েছে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর এই দিনটিও আগের মতো যথাযথ মর্যাদায় উদযাপিত হয়ে আসছে। আজ পুরো বাঙালিরাও উপলব্দি করে, এই দিনটি শিশুদের দিন হিসাবে নির্দিষ্ট করিবার যথেষ্ট কারণ ও যুক্তি রহিয়াছে। কেননা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিশুদের অত্যন্ত আদর করিতেন। ভালোবাসিতেন মনে-প্রাণে। তিনি বিশ্বাস করিতেন আজিকার শিশুরাই আগামীদিনের ভবিষ্যত্। আগামীতে দেশ গড়িবার নেতৃত্ব তাদেরই দিতে হবে। এইজন্য তিনি চাইতেন শিশুরা জ্ঞানে-বিজ্ঞানে, মর্যাদা ও মহিমায় সমৃদ্ধ হউক। সৃজনশীল ও মুক্তমনের মানুষ হিসাবে গড়ে উঠুক। বঙ্গবন্ধু কোনো শিশুদের সমাবেশে গেলে বা শিশুরা বঙ্গভবনে তাহার সংস্পর্শে আসিলে তিনি তাহাদের সঙ্গে মিলিয়া মিশিয়া যেন একাকার হইয়া যাইতেন। কেননা বঙ্গবন্ধুর ছিল একটি শিশুসুলভ মন। এই কোমল মনের কারণেই তিনি কোমলমতি শিশুদের আনন্দ-খুশিতে শরিক হইতে পারিতেন অবলীলায়।
বর্তমানে দেশের ১৬ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে ৬ কোটিই শিশু। তাই শিশুদের উন্নয়ন ব্যতীত বাংলাদেশের প্রকৃত উন্নয়ন অসম্ভব। আমরা এখন একটি উন্নত দেশের স্বপ্ন দেখছি। ইহা বাস্তবায়ন করতে হলে আগে শিশুদের সমস্যার সমাধান করতে হবে। কিন্তু যেভাবে শিশু অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড যেভাবে বাড়িতেছে, তাতে আমরা আতঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন। শিশু অধিকারও নানাভাবে পদদলিত হচ্ছে। গ্রামে-গঞ্জে এখনও শিশুর অপুষ্টি একটি প্রধান সমস্যা। এইসব সমস্যা কেটে উঠার জন্য এবং ঘরে-বাহিরে শিশুর নিরাপত্তা ও উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য আমাদের সর্বপ্রকার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সকলকে এই ব্যাপারে হতে হবে সজাগ ও সচেতন। তবেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন পূরণ হইবে। তাহার জন্মদিনটি জাতীয় শিশু দিবস হিসাবে পালনও মূলত একটি সার্থক, সুন্দর ও তাত্পর্যপূর্ণ প্রয়াস।