নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ) : ঈদের আগে মাসিক বেতনের সাথে ছুটির বেতন চাওয়ায় স্ক্যানডেক্স নীটওয়্যার লিঃ ইউনিট- ২ ইপিজেড, আদমজীনগর, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ এর মালিক পক্ষ ক্ষুব্ধ হয়ে শ্রমিকদের সাথে অসামাজিক আচরণ করে। শ্রমিকরা বলেন, আমরা আমাদের আইন সংঘত প্রাপ্য চেয়েছি। এখানে আপনারা মালিক কর্তৃপক্ষ আমাদের সাথে এহেন আচরণ করা শ্রম আইন পরিপন্থি। এই বলে শ্রমিকরা চলে যায়।
এক পর্যায়ে গত ০৬ই জুন উক্ত ফ্যাক্টরী কর্তৃপক্ষ ৭০ জন অধিক শ্রমিকদের ঠিকানায় বিভিন্ন প্রকার মিথ্যা কথা বলে, সাময়িক বরখাস্ত করে ৭ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। শ্রমিকগণ নোটিশ পেয়ে হতবাক হয়ে যায়। পরে তারা যথা সময়ে গত ১১ই জুন কারণ দর্শানোর নোটিশ এর জবাব ও সাময়িক বরাখাস্ত প্রত্যাহার সহ তারা নির্দোষ বলে দাবী করেন। এ ব্যাপারে মালিক কর্তৃপক্ষ ২ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি করেন, শ্রমিকদের দাবী মালিক শ্রমিক যৌথ ভাবে তদন্ত কমিটি করা হউক।
মালিক কর্তৃপক্ষ কোন প্রকার তদন্ত না করে ১২ জন শ্রমিকদের নাম সহ অজ্ঞাতনামা আরো ২০/২৫ জনকে আসামী করে মামলা দেয়। পরবর্তীতে শ্রমিকগণ আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আদালতে হাজির হয়ে জামিন নেয়। পরে শ্রমিক নেতা এড. মাহাবুবুর রহমান ইসমাইল এর সহযোগীতায় ঈদের আগে বেতন, বোনাস, ছুটির টাকা নিয়ে শ্রমিকরা ঈদের ছুটিতে চলে যায়। এই হয়রানী মূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও শ্রমিকদের চাকুরীতে পূর্ন বহালের দাবীতে অদ্য ২৮/০৬/২০১৮ইং তারিখে সকাল ৭:৩০ ঘটিকায় শ্রমিকগণ আদমজীনগর ইপিজেডের গেটের সামনে প্রতিবাদ ও মানব বন্ধন করেন, নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন।
সমাবেশ চলাকালে ব্যাপজা পরিচালনা ব্যক্তিবর্গ ও মালিক পক্ষের গুন্ডা-পান্ডারা এলাকার কাউন্সিলর পরিচয় দিয়ে প্রায় শতাধিক মাস্তান বাহিনী শ্রমিকদের ন্যায় সংগত প্রতিবাদ কর্মসূচীতে বাধা দেয় ও উৎশৃঙ্খল আচরণ করতে থাকে। পরবর্তীতে হাজার হাজার শ্রমিক ঐ সমস্ত মাস্তান বাহিনীর সামনে এসে প্রতিরোধ গড়ে তুললে গুন্ডা পান্ডারা পালাতে শুরু করে। পরোক্ষণে পুলিশ এসে সমাবেশ সংক্ষিপ্ত করার জন্য অনুরোধ করিলে, কেন্দ্রীয় শ্রমিক নেতা এড. মাহাবুবুর রহমান ইসমাইল এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।
সে শ্রমিকদের মাঝে বক্তব্য রাখেন, তার বক্তব্যে বলেন, ব্যাপজায় ইপিজেড শ্রমিকদের প্রতি মালিকদের পক্ষের সন্ত্রাস মাস্তান বাহিনী লেলিয়ে দেয়া অনাকাংক্ষিত এই ঘটনা, আমাদের সংগঠনের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী, শ্রমমন্ত্রী ও বায়ারদের কাছে যদি নালিশ করি। তবে উক্ত মালিকের শ্রমিক দিয়ে ফ্যাক্টরী চালানো সম্ভব হবে না। গুন্ডা মাস্তান দিয়ে ফ্যাক্টরী চালাতে হবে। সে মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান অনতি বিলম্বে শ্রমিকদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে তদন্তে যদি শ্রমিকরা নির্দোষ হয় তবে শ্রমিকদের চাকুরীতে পূর্ন বহাল করা হউক। অন্যথায় শ্রম আইন অনুযায়ী তাদের প্রাপ্য পাওনা পরিশোধ করার আহ্বান জানান। পাশাপাশি সকল মালিকদের উদ্দেশ্যে গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের পক্ষ থেকে নিম্নতম মজুরী ১৬,০০০ (ষোল হাজার) টাকার দাবী প্রসঙ্গে যুক্তিসংগত ব্যাখ্যা দিয়ে মেনে নেয়ার দাবী জানান।
ইপিজেডের এই ঘটনা অবগত হয়ে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ও বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের জেলার সভাপতি শ্রমিক নেতা মাহামুদ হোসেন বলেন, গার্মেন্টস সেক্টরে এ ধরণের ঘটনা ঘটেই চলছে। মালিকরা শ্রমিকদের অধিকার হরণ করার জন্য সন্ত্রাস গুন্ডা লালন পালন করে থাকে। সে স্ক্যানডেক্স নীটওয়্যার লিঃ এর এহেন ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে শ্রমিকদের হয়রানী মূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও শ্রমিকদের চাকুরীতে পূর্ন বহাল রাখার আহ্বান জানান। অন্যথায় গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের পক্ষ থেকে শুধু ইপিজেড নয়। সারা বাংলাদেশ, ঢাকা গাজীপুর, আশুলিয়া, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ সহ শ্রমিক অসন্তোষ বিরাজ করিলে বেপজা কর্তৃক স্ক্যানডেক্স নীটওয়্যার লিঃ এর মালিককে এর দায়ভার বহন করিতে হইবে বলে হোসিয়ারী দেন।
মানববন্ধন সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন, শ্রমিক নেতা মোঃ ফারুক, বক্তব্য রাখেন শ্রমিক নেতা সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, শ্রমিক নেতা সুমন হাওলাদার, সভাপতি, পঞ্চবটি শাখা এবং স্ক্যানডেক্স নীটওয়্যার লিঃ এর শ্রমিক মোঃ মামুন, মোঃ শামিম, জিয়াসমিন, কুলসুম, তানিয়া, রুনা সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।