নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নগরীর শতবছরের পুরোন স্কুল ভেঙ্গে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর বিরুদ্ধে। তবে মেয়রের দাবি, ভবনটির জমির মালিক নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন। আরএস, সিএসসহ সকল কাগজপত্র রয়েছে। এনসিসি তার প্রয়োজনে জায়গাটি চাইতেই পারে। তাছাড়া জমিটির ব্যাপারে বার বার স্কুলকে চিঠিও দেয়া হয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের দাবি, শনিবার বন্ধ থাকায় রাতের আধারে মর্গান গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ ভবনটির একটি স্থাপনা ভেঙ্গে ফেলেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন। নাসিক মেয়র তার বাবার নামে নির্মিত আলী আহমেদ চুনকা পাঠাগারটির জন্যই শত বছরের পুরাতন এই ভবন ভেঙ্গেছে।
এদিকে এমন ঘটনার পর স্কুলটির শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে চাপা ক্ষোভ। নগরীর সর্বত্রই বইছে সমালোচনার ঝড়। স্কুলটির গভর্নিং বডির সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন বলেছেন, মেয়র আইভী নিজেও এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে লেখাপড়া করেছেন, এটা সমিচীন হয়নি। এছাড়াও সচেতন নগরবাসী ও অভিভাবকবৃন্দদের অনেকেই মন্তব্য করে বলেছেন, স্কুল ভাঙ্গা হয়নি, চুড়মাড় হয়েছে লাখো কোটি সপ্ন। প্রবীন ও নবীন সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী সহ অভিভাবকদের জন্য এই নিন্দনীয় কাজ ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকবে।
এঘটনায় ২০ই মে রবিবার বিক্ষোভ মিছিল করেছে স্কুলটির শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। পরে কয়েকজনকে ভেতরে প্রবেশ করার অনুমতি দেয়া হয়। তারা নাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এহতেশামুল হকের সঙ্গে দেখা করে তাদের অভিযোগ জানান। এসময় সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এহতেশামুল হক বলেন, ভবনটি ভাঙা হয়নি। ভবনের পাশে সিটি কর্পোরেশনের জায়গায় উন্নয়ন প্রকল্প চলমান ছিল যেখানে এক্সাভেটর দিয়ে মাটি গভীর করতে হয়। অতি বৃষ্টির কারণে ভবনটি নিচ থেকে মাটি সরে ভেঙ্গে গেছে। তাদের ক্যান্টিন দরকার আমরা অস্বীকার করছিনা, পাশাপাশি আমাদেরও উন্নয়ন প্রকল্প দরকার সেটিও অস্বীকার করার সুযোগ নেই। সিটি কর্পোরেশন তাদেরকে স্কুল করার জন্য জায়গা প্রদান করেছিলো। কিন্তু ওই ভবনটি অবৈধ জায়গা ভোগ করছিলো। যেহেতু জায়গাটি আমাদের ও অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে সেটি ভেঙ্গে পড়েছে সুতরাং জায়গাটি আমাদের আয়ত্তেই থাকবে। তবে তাদের ক্যান্টিনের ক্ষয়ক্ষতির জন্য যদি তারা নিয়ম নীতি মেনে আবেদন করে তবে তাদের আবেদন বিবেচনা করা হবে এবং তারা যদি ক্ষতিপূরণ ও চায় তবে স্কুল ও বাচ্চাদের স্বার্থে সেটিরও ব্যবস্থা করা হবে।
তবে নাসিক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভি সাংবাদিকদের বলেন, যদি ক্ষতিপূরণ চায় সেটির ব্যবস্থা করা হবে কিন্তু সেখানে পুনরায় ভবন নির্মানের কোন সুযোগ নেই। এছাড়া আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপি নিয়ে তার কাছে গেলে মেয়র তাদের বলেন, তোমাদের তো তোতাপাখির মত বুলি শিখিয়ে দেয়া হয়েছে।এসময় মেয়েরা মেয়রকে প্রশ্ন করে ভেঙ্গে ফেলা ভবনের পুরো জায়গাটা নিয়ে নিবেন? তখন মেয়র তাদের বলেন, জায়গা পুরাটা দরকার হলে পুরোটা নিবো, সেটা তো তোমার দেখার বিষয় না। প্রতিনিধি দলের এক মেয়েকে মেয়র জিজ্ঞেস করেন তোমার বাসা কোথায়? এত বড় বড় কথা বলো, কে শিখিয়ে দিয়েছে তোমাকে এসব কথা? আর তোমরা কেনো আসছো? তোমাদের স্যারেরা কোথায়? এসময় মেয়েরা বলে স্যার দেখা করতে চেয়েছিল কিন্তু তাদের ভেতরে আসতে অনুমতি দেয়নি।