নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( মিলন হোসেন, নওগাঁ প্রতিনিধি ) : নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার বালুভরা ইউপির দোনইল গ্রামের প্রবীণ আবেজান বেওয়া ৯০ বছর বয়সেও বয়স্ক ভাতা পাননি। শরীরে যেন এক তোলাও শক্তি নেই, স্বাস্থ্যের অবস্থাও খুবই খারাপ। তারপরেও দু-বেলা দু-মুঠো খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকার তাগিদে লাঠির উপর ভর করে ধীরে ধীরে এবাড়ী ওবাড়ী যেতে হয় এ বৃদ্ধাকে। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়ালেও তার ভাগ্যে জোটেনি বয়স্কভাতা।
জানাযায়, উপজেলার বালুভরা ইউপির দোনইল গ্রামের মৃত কবির উদ্দীনের স্ত্রী আবেজান বেওয়া। আবেজান বেওয়ার ৪ ছেলে ১ মেয়ে। সংসার জীবনের মাঝামাঝি সময়ে স্বামীর মুত্যু ঘটে। ছেলেরা তাদের সংসার নিয়ে অতি কষ্টে জীবনযাপন করে আসছে। আবেজানের বয়স যতই ভার হয় ততই ঘনিয়ে আসে চলার পথ। শরীর চলে না তারপরেও মাঝে মাঝে বিশ্রাম নিয়ে ক্ষুধার তাড়নায় আবার ছুটে যায় গ্রামের এ বাড়ী ও বাড়ীতে।
প্রবীন এই বৃদ্ধা জানেন না তার বয়স কত কিন্তু তার আই ডি কার্ড অনুসারে তার জন্ম তারিখ ৭ জুলাই ১৯২৮ইং। বাংলাদেশ সংবিধান অনুসারে খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান এই ৪টি মানুষের মৌলিক অধিকার। প্রবীন এই বৃদ্ধা আবেজান তার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। অসুস্থ্য হলে চিকিৎসার সুব্যাবস্থা তার ভাগ্যে জোটেনা।
ছেলেদের কথা বললে তিনি বলেন, মানুষের বাড়ীতে দিন মজুরের কাজ করে ওরা তাদের ছেলে মেয়ে নিয়ে কোন রকমে সংসার চালায়। দোনইল গ্রামের সাবেক সেনা সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই জানায় একদিন আমার বাড়ি অন্যদিন আর কারো বাড়ী হাটা হাটি করলে দু-চারদিন গায়ের ব্যাথায় চলাচল করতে পারে না। আমি অনেক চেষ্টা করেও তার জন্য বয়স্কভাতার কার্ড মিলাতে পারিনি। ভোটার আইডি অনুসারে তার বয়স এখন ৯০ বছর।
আবেজান বেওয়ার ছেলে মকলেছার বলেন, আমাদের ওয়ার্ড মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে অনেক বার বলার পর কয়েক বার ছবি তুলে জমা দেওয়া হয়েছে কিন্তু কোন ফল হয়নি। আবেজান জানায় বয়স্কভাতা কেউ দিতে চায়না। তাছাড়া তার কথা কে শুনবে? এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের মেম্বার আ. সালাম জানায় আবেজান বেওয়া ভাতা পাওয়ার যোগ্য কিন্তু তুলনামুলক কার্ড কম আসায় দেওয়া যায়নি। এবার বয়স্কভাতার কার্ড আসলে ব্যবস্থা করা হবে।
বালুভরা ইউপির চেয়ারম্যান শেখ মো. আয়েন উদ্দীন এর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বললে, তিনি জানান সম্প্রতি বিষয়টি আমি জেনেছি, আগামীতে তালিকা প্রনয়ন হলে তার নাম দেওয়া হবে।