নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( আড়াইহাজার প্রতিনিধি ) : আড়াইহাজারে পরপুরুষের সঙ্গে মায়ের অনৈতিক সম্পর্ক দেখে ফেলায় দুই সন্তানকে মা শেফালী ও তার প্রেমিক রাশেদুল ইসলাম মোমেন পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে অভিযোগ উঠেছে। এদের মধ্যে দগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় তৃতীয় শ্রেণিতে পড়–য়া বড় ছেলে হৃদয়। তবে ভাগ্যক্রমে ওই রাতে বেঁচে যায় ছোট ছেলে জিহাদ। ১৩ এপিল (শুক্রবার) উপজেলার বাড়ৈপাড়া এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মা শেফালীকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে রাশেদুল ইসলাম মোমেন। এ ঘটনায় হৃদয় (৯) কে পুড়িয়ে হত্যা ও জিহাদ (৭) কে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ এনে ওই সহোদরের দাদা বিল্লাল হোসেন বাদী হয়ে শুক্রবার রাতেই পুত্রবধূ শেফালী ও তার কথিত প্রেমিক রাশেদুল ইসলাম মোমেনের নামে আড়াইহাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।
মোমেন ওই এলাকার বিল্লাল হোসেনের ছেলে। শেফালী ঢাকার কেরানীগঞ্জের ইসলামপুর এলাকার সুন্দর আলীর মেয়ে। মামলাটি তদন্ত করছেন উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল কাশেম। এদিকে, গ্রেফতারের পর পুলিশের প্রাতমিক জিজ্ঞাসাবাদে শেফালী হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে আড়াইহাজার থানার ওসি তদন্ত শফিকুল ইসলাম আটক শেফালীর বরাত দিয়ে বলেন, পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শেফালীর সাথে দীর্ঘদিন ধরেই মোমেনের পরকীয়া চলে আসছিল। এনিয়ে এলাকায় বেশ কয়েকবার বিচার-শালিশও হয়েছে। শুক্রবার গভীর রাতে মোমেন শেফালীর থাকার ঘরে প্রবেশ করে।
শেফালীর সঙ্গে ঘরের মেঝেতে দৈহিক সম্পর্ক হয়। কিন্তু এক পর্যায়ে মোমেন শেফালীকে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করে। পরে সে অচেতন হয়ে পড়ে থাকাবস্থায় খাটে ঘুমন্ত শিশু সন্তান হৃদয় ও জিহাদের গায়ে আগুন ধরিয়ে মোমেন পালিয়ে যায়।
শফিকুল আরও বলেন, তবে আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে শেফালীর জবানবন্দী হলে আসল সত্য বের হয়ে আসবে।
এদিকে এ ঘটনায় পরদিন ১৪ এপ্রিল (শনিবার) নারায়ণগঞ্জ ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতের বিচারক মেহেদি হাসানের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় শেফালী বেগম। আর এ জবানবন্দি নিয়ে সৃষ্টি হয় ধুম্রজাল ।
বিভিন্ন গনমাধ্যমে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই কাসেমের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকতা এসআআই কাশেম গনমাধ্যমে প্রকাশিত বক্তব্য তিনি দেননি বলে জানান। এসআই কাশেম তার তার বক্তব্য প্রতাহার কিংবা অস্বীকার করায় এ হত্যাকান্ড নিয়ে আরো রহস্যের সৃষ্টি হয়।
এসআই কাসেম বলেন, আমি কোনো সাংবাদিকের কাছে ১৬৪-এ আসামি শেফালী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে কি জবানবন্দি দিয়েছেন তা বলেনি। তারা আমার নাম উল্লেখ্য করে যে সংবাদটি প্রকাশ করেছেন তা সঠিক নয়। জবানবন্দির ব্যাপারে এ ধরনের কোনো কথাই আমি কারোর কাছে কিছুই বলেনি।
আড়াইহাজার থানার ওসি এম এ হক বলেন, এ ঘটনায় নিহতের দাদা বাদী হয়ে দুজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছেন। নিহতের মা শেফালীকে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। তবে কি জবানবন্দি দিয়েছে তা তিনি জানাতে পারেনি।
এ বিষয়ে কোর্ট পরিদর্শক মোহাম্মদ আলী সোমবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে জানান, এখন পর্যন্ত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির নথি তিনি পাননি। পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নথি পেলেই জানা যাবে শেফালী কি বলেছেন। কিভাবে এ হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে।