নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( আড়াইহাজার প্রতিনিধি ) : আড়াইহাজার উপজেলায় সাব রেজিষ্ট্রার সংকটে জমি কেনা বেচার চরম দুর্ভোগান্তিতে পড়েছেন ক্রেতা বিক্রেতারা। সময়মত দলিল রেজিষ্ট্রি করতে না পারায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ভূক্তভোগীরা। পাশাপাপশি সরকার ও মোটা অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
জানা গেছে ভয়ভীতির কারনে সাবরেজিষ্টার এখানে আসছে না। ক্ষমতাসীন দলের পরিচয়ধারী কিছু দলিল লিখকের হুমকি ধামকির কারণে ইতিপূর্বে সাব রেজিস্ট্রার সৈয়দ নজরুল, গোলাম মাহবুব, রায়হান মন্ডল, কাউসার শেখ এখান থেকে চলে যান। মিজানুর রহমান নামের এক সাব রেজিষ্ট্রার এখানে যোগদানের মাত্র দুই সাপ্তাহের ব্যবদানে এখান থেকে চলে যান। গত বিশ দিনের মধ্যে মাত্র চার দিন অফিস করে সাব রেজিষ্ট্রার রেজাউল করিম বকশি চলে যান। ১১ (এপ্রিল) সহিদুল ইসলাম খন্ড কালীন সাব রেজিষ্ট্রার হিসেবে যোগ দান করেন তিনি বা কতদিন থাকেন তার কোন নিশ্চয়তা নেই। বার বার সাব রেজিষ্ট্রার পরিবর্তনের কারনে অফিসের দিন দিন ভোগান্তি বেড়েই চলছে।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাব রেজিষ্ট্রার অফিসের এক কর্মচারী অভিযোগ করেন, স্থানীয় ক্ষমাতাসীন দলের পরিচয়ধারী কিছু দলিল লেখক প্রতিনিয়তই সাব রেজিষ্ট্রির চাপে রেখে অবৈধ কাজ করানোর চোষ্টা করেছেন। তাদের কথা মত কাজ না হলে সাব রেজিষ্ট্রারের সাথে নানা ভাবে হয়রানীমূলক কর্মকান্ডে লিপ্ত হচ্ছে তারা। এর কারনে দলিল লেখক ও সাব রেজিষ্ট্রার অফিসে কার্যক্রম স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। একটি প্রভাবশালী মহলের নির্দেশে দীর্ঘদিন উপজেলার ১৩টি মৌজার দলিল করায় বাধা ছিল। বাধা উপেক্ষা করে এক দলিল লিখক দলিল সম্পাদন করায় তার ওপর হামলা করে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী। এমনকি দলিল লেখক নামধারী ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় একটি চক্র নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে ক তফসিলের জমির জোরপূর্বক সাব রেজিষ্ট্রার দিয়ে রেজিষ্ট্রি করে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে করে আঙ্গল ফুলে কলাগাছ হয়েছে এ চক্রের সদস্য দলিল লেখক নুরুল আমিন, কাজল ও ফয়সাল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দলিল লেখক মুঠোফোনে জানান ক্ষমতাশীন দলের নেতা ও দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমীনের সহযোগীতায় দলিল লেখক নামধারী সাজ্জাদ পারভেজ. জাকারিয়া ইকবাল, কাজল ঢালী ও ফয়সাল নানা ভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে সরকারের খাস জমি রেজিস্ট্রি করতে সাব রেজিষ্ট্রারকে বাধ্য করেছেন। এ অনৈতিক কাজের জন্য সাবেক সাব রেজিষ্ট্রার ও এসোসিয়শনের মহাসচিব কাউসার শেখ দলিল লিখক নুরুল আমীনকে তিন মাসের জন্য সাময়িক বহিস্কার করেন। পরে সে অফিসে ডুকতে পারেননি। এ চক্রের একক আধিপত্তের কারনে দলিল লেকক সমিতির প্রায় দুইশতাধিক দলিল লেখক তাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। তাদের ইচ্ছার বাইরে দলিল করায় এরই মধ্যে অনেকেই উপরে নেমে আসছে খড়া। এ চক্রের দলিল লিখক সমিতিতে চলছে চরম অস্থিরতা।
জানা গেছে, সম্প্রতি জাল জালিয়াতি দলিল করার কারনে পুলিশ দলিল লিখক সাজ্জাদ পারভেজ গ্রেফতার করেন। পরে তাকে ছাড়িয়ে নিতে স্থানীয় প্রভাবশালীরা থানায় গিয়ে প্রচন্ড হট্রগোল করেন এবং এক পর্যায়ে আসামীদের বহনকৃত গাড়ির চাবি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়। তার বিরুদ্ধে কেউ প্রকাশে কথা বলার সাহস পাচ্ছে না। তার দ্বারা যে কোন অপরাধমূলক কর্মকান্ড সম্ভব। অজ্ঞাত কারনে অফিস সহকারি মুসলেউদ্দিন কেও অফিস করতে দেখা যায় নি। আড়াইহাজারে বিজ্ঞ মহলের প্রশ্ন সাব রেজিষ্ট্রার কেন আসতে চান না? আসলেও কেন থাকেন না ? এর অন্তরালে রহস্য কি? যারা এই অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করেছে তাদের কেন বিচার হচ্ছে না? এক প্রশ্নের জবাবে জেলা রেজিষ্ট্রার সাবিকুন্নাহার জানান আড়াইহাজার সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে এক অশান্ত পরিবেশ বিরাজ করছে তা শান্ত করার চেষ্ট চলছে। এ বিষয়টি আইন মন্ত্রনালয় সহ উর্ধতন কর্তিপক্ষের নজরে রয়েছে। দুষি দের বিরুদ্ধে কোন বেবস্থা নেয়া হবে কি না এ প্রশ্নের জবাব তিনি কৌশলে এরিয়ে যান। সাব রেজিষ্ট্রার অফিস সম্পর্কে কোন রিপের্ট না লিখারও অনুরোধ করেন তিনি। এর কারন যানতে চাইলে তিনি বলেন আড়াইহাজারে কোন সাব রেজিষ্ট্রিার আসতে চান না। পত্র-পত্রিকায় লেখা-লেখি হলে সমস্যা আরো বেড়ে যাবে। বিজ্ঞমহলের মতে, অচিরেই দোষি দের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিলে সংকটে পড়বে আড়াইহাজার বািস।
দলিল লিখক হাবিব জানান, সময় মত দলিল রেজিষ্ট্রি করতে না পাড়ায় দলিল লিখকরা ক্ষতির মুখে পড়েছে। দলিল লিখক সমীতিতে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে ভোগান্তি। অবৈধ ও অর্নিবাচিত দলিল লিখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমীন, পারভেজ কে নিয়ে পুরো সাব-রেজিষ্ট্রিার অফিস ও দলিল লিখক সমিতিতে একক অধিপাত্য বিস্তার করে রেখেছে। জনস্বার্থে দ্রুত সাব-রেজিষ্ট্রার অফিস ও দলিল লেখক সমিতিতে সুস্থ্য একটি পরিবেশে ফিরে আনার জোরদাবি জানিয়েছেন তিনি। তারা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দলিল লিখক নুরুল আমিন, সাজ্জাদ পারভেজ কাজল ঢালি ও ফয়সাল।