নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : স্কুল শিক্ষিকাকে নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেফতার নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব ও সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী আব্দুল মজিদ খোন্দকারের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার ১৪ ফেব্রুয়ারি সকালে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আশেক ইমামের আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
নারায়ণগঞ্জ বারের সদস্য বিজ্ঞ আইনজীবী গোলাম ফারুক মিন্টু মারা যাওয়ার কারনে মঙ্গলবার আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় শিক্ষিকা লাঞ্ছনার দায়ে গ্রেফতার এড. মজিদ খোন্দকারকে বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের নির্দেশে আদালতের গারদ খানা থেকেই সরাসরি কারাগারে প্রেরণ করা হয়। পরবর্তীতে বুধবার আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেছেন বলে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন নারায়ণগঞ্জ কোর্ট ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ আলী ।
এরআগে গত ১২ ফেব্রুয়ারী রাতে সদর উপজেলার হাজীগঞ্জ এলাকায় স্কুল শিক্ষিকা শাহীনুর পারভীন শানুকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় অভিযুক্ত জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব ও আইনজীবী আব্দুল মজিদ খোন্দকারকে গ্রেফতার করে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ।
জানাগেছে, নির্যাতনের শিকার শাহীনুর পারভীন স্থানীয় প্যাসিফিক ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে এক যুগেরও বেশী সময় ধরে শিক্ষকতা করছেন। গত ১১ ফেব্রুয়ারী রাতে স্কুল শিক্ষিকা শাহীনুর পারভীনের বাসায় গিয়ে তাকে আইনজীবী আব্দুল মজিদ খোন্দকার ও তার স্ত্রী রোকেয়া খোন্দকার তাদের নাতিকে প্রাইভেট পড়ানোর প্রস্তাব দেন। কিন্তু সেই প্রস্তাব শিক্ষিকা প্রত্যাখান করায় ক্ষুব্ধ হয়ে স্বস্ত্রীক অভিযুক্ত জাপা নেতা শিক্ষিকাকে মারধরসহ জুতাপেটা করেন।গুরুতর আহত অবস্থায় শাহীনুর পারভীনকে নারায়ণগঞ্জ খানপুর ৩শত শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: তাহমিনা নাজনীন জানান, শাহীনুর পারভীনকে যখন হাসপাতালে আনা হয় তখন তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। বিশেষ করে তাঁর গলায় আঘাতের চিহ্ন বেশি ছিল।
পরবর্তীতে চিকিৎসা শেষে ১২ ফেব্রুয়ারী সকালে শিক্ষিকা শাহীনুর পারভীনকে বাড়িতে আনা হয়। তারপর ঐদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নির্যাতিতার বাবা সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় অভিযুক্ত জাপা নেতা ও তার স্ত্রী রোকেয়া খোন্দকারের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।
এরপর দুপুরে শিক্ষিকার বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) শরফুদ্দীন। পরবর্তীতে সন্ধ্যায় নিজ বাসা থেকে মজিদ খোন্দকারকে গ্রেফতার করে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। কিন্তু তার স্ত্রী পলাতক রয়ে যায়।
এ ব্যাপারে বাড়ির মালিক ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার এডভোকেট নুরুল হুদা বলেন, আমার অনুমতি ছাড়া আমার বাড়িতে ঢুকে আমার ভাড়াটিয়ার গায়ে হাত তোলা ও জুতাপেটা করে দন্ডনীয় সামাজিক অপরাধ করেছেন মজিদ খন্দকার। তার উচিত ছিল আগে আমার সঙ্গে কথা বলা। কিন্তু একজন আইনজীবী এ রকম বেআইনী কাজ করে অপরাধ করেছেন। আমরা স্থানীয় পঞ্চায়েত কমিটির পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি।