আ.লীগের দুই গ্রুপ ও পুলিশের সংঘর্ষ, নিহত-১

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ (রূপগঞ্জ প্রতিনিধি ) :  বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রায়কে ঘিরে রূপগঞ্জের কাঞ্চন এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এসময় রূপগঞ্জ আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায়-দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করলে আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের সঙ্গে পুলিশেরও সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষ চলাকালে গুলিতে গন্ধর্বপুর এলাকার মনু মিয়ার ছেলে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সুমন মিয়া ঢাকা মেডিকেল কলেজে মারা গেছে। ত্রিমুখী সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিকসহ উভয়পক্ষের প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (০৮ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে কাঞ্চন-কুড়িল বিশ্বরোডে উপজেলার হাবিবনগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে কাঞ্চন এলাকা ও আশপাশের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৫শত রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে খবর রয়েছে। বর্তমানে গোটা উপজেলায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও আওয়ামীলীগের উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীদের দেওয়া তথ্যমতে, খালেদা জিয়ার রায়কে ঘিরে বিএনপি নেতাদের প্রতিহত করতে সকাল থেকেই রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা কাঞ্চন সেতু এলাকায় জড়ো হতে থাকে। একপর্যায়ে দু’পক্ষের মধ্যে দফায়-দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের ঘটনায় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ এগিয়ে আসলে আওয়ামীলীগের দু’পক্ষের সঙ্গে পুলিশেরও সংঘর্ষ বাঁধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে ব্যর্থ হয়ে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষ চলাকালে সুমন মিয়া নামে এক স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা গুলিবিদ্ধ হয়। গুরুতর অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ত্রিমুখী সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিক, উভয়পক্ষের নেতাকর্মীসহ প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছে।

পুলিশ জানায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্ণীতি মামলার রায়কে কেন্দ্র করে কাঞ্চন সেতু এলাকার কাঞ্চন-কুড়িল বিশ^রোড সড়কে স্থানীয় এমপি গোলাম দস্তগীর গাজীর (বীর প্রতিক) সমর্থিত নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়। অপর দিকে, কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা আলহাজ¦ রফিকুল ইসলাম রফিক সমর্থিত নেতাকর্মীরা প্রায় একশত গজ দূরে অবস্থান নেয়। সকাল ১০টা থেকেই উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। একপর্যায়ে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়।

এদিকে, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সুমন মিয়া নিহতের ঘটনায় রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের একপক্ষ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন মোল্লা বলেন, কাঞ্চন সেতুর পাশে আমাদের স্পট ছিলো। ঐখানে একটি পক্ষ অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে তারা অতর্কিত হামলা চালায় আমাদের উপড়। তাদের গুলিতে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সুমন নিহত হয়। আমরা এর সুষ্ঠ বিচার চাই। এসময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতিক), উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফেরদৌসি আলম নীলা, শেখ সাইফুল ইসলাম, তোফায়েল আহম্মেদ আলমাস, কামাল আহম্মেদ রনজু প্রমুখ।

রূপগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত রফিকুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে ৫শত রাউন্ড গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করা করেছে।

জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ফারুক আহাম্মেদ জানান, আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনার পরিস্থিতি সামাল দিতেই গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

add-content

আরও খবর

পঠিত