জাতির জনককে হত্যা করেছে আওয়ামীলীগ : ব্যারিস্টার মওদুদ

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব সংবাদ দাতা ) : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহাম্মেদ বলেছেন, আওয়ামীলীগ দেশ স্বাধীনের পর নির্যাতন, নিপিড়ন, অপশাসন, করেছিল। যখন বিএনপি সৃষ্টি হয়নি, ছিল জাসদ। তৎসময়ে রক্ষিবাহিনী করে জাসদের ৩০ হাজার তরুনকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে। তাদের কারনে তৎসময়ে লাখ লাখ মানুষ না খেয়ে প্রান হারিয়েছে। জাতির জনককে কারা হত্যা করলো? জাতির জনককে হত্যা করেছে আওয়ামীলীগ।

আওয়ামীলীগের নেতারাইতো তখন ক্ষমতায় ছিলো। যাদের অনেকেইতো এখনও আছে পার্লামেন্টে। এখনও তারা জীবিত আছেন, যারা দলের সাথে এবং দেশের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলো। একই দেন ধারানায় বিশ্বাসী হয়ে তারা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু করেছে। ২০ জানুয়ারী শনিবার বন্দর উপজেলার সোনাকান্দা হেভেন কমিউনিটি সেন্টারে মহানগর বিএনপি কর্তৃক আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অথিতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, আগামী নির্বাচনে দলীয় সরকারের অধিনে একদলীয় নির্বাচন করতে দিব না। আমাদের কতোদিন বাড়ির মধ্যে আটকে রাখবেন। ধৈর্য্য ধরেন। যে বাধ তারা সৃষ্টি করেছে, সে বাধ আর থাকবে না। এক দফা এক দাবি, ছাড় দিব না। কাউকে এবার ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেওয়া হবে না। এবার দেশে গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ১৯৭১ সালের ২ শে মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সাধারন মানুষের প্রতি নির্যাতন শুরু করে র্ববর হত্যাযজ্ঞ চালায়। তখন শহীদ জিয়া মেজর ছিলেন চট্রগ্রামে। একমাত্র তিনি স্বাথীনতা ঘোষনা দিয়েছিলেন। আমরা তখন তার কন্ঠই শুনেছি, আর কারো কন্ঠ শুনি নেই।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি সভাপতি আলহাজ্ব এ্যাডঃ আবুল কালামের সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপি সাধারন সম্পাদক এটিএম কামাল, সহ-সভাপতি ও বন্দর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আতাউর রহমান মুকুল, এড. জাকির হোসেন, হাজী নূরউদ্দিন, ফখরুল ইসলাম মজনু, আশেয়া সাত্তার, এড. সরকার হুমায়ন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর সবুর খান সেন্টু, এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আওলাদ হোসেন প্রমুখ।

পঞ্চম ষোড়শ সংশোধনি নিয়ে সাবেক এই আইনমন্ত্রী বলেন, শহীদ জিয়া সংবিধানে সংশোধন করে এক দলীয় নির্বাচন বাতিল করেছেন। গণমাধ্যমের স্বাধিনতা দিয়েছেন। বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তন করেছেন। বিচারপতি খায়রুলের আদালত পঞ্চম ষোড়শ সংশোধনি বাতিল করেছেন। কিন্তু বহুদলীয় গণতন্ত্র, বিচার বিভাগের স্বাধিনতা, গণমাধম্যের স্বাধিনতা এগুলো বাতিল করেননি। এগুলো ভালো কাজ তারাই বলেন। কিন্তু তারা এগুলো  বাতিল করেনি। সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বাদ করেনি।

কর্মী সম্মেলনে ব্যারিষ্টার মওদুদ আরও বলেন, এই সরকার ইম্যাচিউরড সরকার। তারা ১৫৪ টি আসনে ভোট ছাড়াই নির্বাচিত হয়েছে। ৯১ থেকে ৯৬ সালে বিএনপি সরকারের আমল এই প্রধানমন্ত্রী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে দুই বছর আন্দোলন করেছে। তখন তারা দলীয় সরকারের অধিনে নির্বাচন করতে চায়নি। এখন তারাই বলে, দলীয় সরকারের অধিনেই নির্বাচন করতে হবে। আপনি ৯৬ সালে এক কথা বললেন, এখন আজকে আবার আরেক কথা বলেন। বাংলাদেশের মানুষ এতো বোকা না, বাংলাদেশের মানুষ সবই বোঝে। কেন আপনি সংবিধান সংশোধন করেছেন? কোন সরকার শেষ সরকার নয়। এই সরকারও শেষ সরকার নয়। আমাদের মনে আছে আইয়ূবের কথা তিনিও পারেনি।

সভা শেষে মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি আবুল কালাম একটি দাবি জানিয়ে বলেন, সারা দেশে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া যে সাংগঠনিক সফর করবেন সে সফর যেন নারায়ণগঞ্জের বন্দর থেকে শুরু করা হয়। এসময় মওদুদ আবুল কালামকে দাঁড় করিয়ে বলেন, ২৭ বছর আপনাদের জন্য কাজ করেছেন। অনেক উন্নয়ন তার হাত দিয়ে হয়েছে। তাই শুধু ঠিক বললেই চলবেনা। ডাক দিলেই নেমে যেতে হবে। আবুল কালামের জনপ্রিয়তা সম্পর্কে আমরা অবগত আািছ। আপনারা নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন।

সভাপতির বক্তব্যে আবুল কালাম বলেন, দলকে সুসংগঠিত করার জন্য সারা দেশের সকল নেতৃবৃন্দকে একত্রিত করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জিয়াউর রহমান। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা। আমরা তারই সৈনিক। আমি ৬ বার মনোনয়ন পেয়ে ৩বার নির্বাচিত হয়েছি। আন্দোলন সংগ্রামে মাঠে থাকার পাশাপাশি নির্বাচনেও মাঠে থাকতে হবে। এ দেশে গণতন্ত্র নাই। বাক স্বাধীনতা নাই। বিচার বিভাগ অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছে। কোথায় আমাদের অধিকার। কেন আমরা নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি না। এসব অধিকার ফিরে পেতে বিএনপি সরকারকে পূনরায় নির্বাচিত করতে হবে। আন্দোলন এবং নির্বাচন কোনটাতেই নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন পিছিয়ে নেই। আমি নেত্রীকে আশ্বস্ত করে বলতে চাই, আমার পরিবার দলকে ধরে রেখেছে। আমি না থাকলেও আমার নেতৃত্ব থাকবে।

এ সময় তিনি আরও বলেন, আমাদের একজন কর্মী আছে, যিনি নিজেকে নিজে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করে ফেলেছেন। উনার বক্তব্যে তেমন কথাই ফুটে উঠে। উনি স্বঘোষিত প্রার্থী। উনি এর আগের সম্মেলনে উপস্তিত ছিলেন না। এ সম্মেলনেও অনুপস্থিত। এ বিষয়টি আপনারা খেয়াল রাখবেন।

মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল বলেন, আজকের এই কর্মীসম্মেলণে অংশগ্রহণই প্রমাণ করেছে, নারায়ণগঞ্জ হচ্ছে বিএনপি’র ঘাটি। বর্তমান সরকার দলে বিশৃঙ্খলা রয়েছে। বোয়ালের ডিম বোয়ালে ভাঙ্গে। নিজেরাই কুকুরের মতো কামড়া কামড়ি করছে। তারাই নিজেদেও ঢোল ফাটিয়ে দিচ্ছে। আগামী নির্বাচনে আমাদের করণীয় নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতা যে দিকনির্দেশনা দিবেন, সেটি পালন করতে হবে।

কর্মী সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বন্দর থানা বিএনপি নেতা এ্যাড. আনিসুর রহমান মোল্লা, সাবেক ছাত্রনেতা আনোয়ার হোসেন আনু, আরিফ আহম্মেদ গোগা, মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সরকার আলম, নুরআলম সরদার, রানা, মনোয়ার হোসেন শোখন, মহানগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবুল কায়সার আশা সহ মহানগর বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

add-content

আরও খবর

পঠিত