নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সোনারগাঁও প্রতিনিধি ) : নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অভিযোগভুক্ত পুলিশের সোর্স জয়নাল মীর। সোর্স পরিচয়ে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে নয়াপুর পশ্চিম পাড়ার নান্নু মিয়ার ছেলে জয়নাল। বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেফতারে পুলিশ জয়নালের সহযোগিতা নিয়ে থাকে বলে জানা যায়। কিন্তু সোনারগাঁয়ের অনেক নিরপরাধ মানুষকে গ্রেফতার করে স্পট থেকেই মোটা অংকের টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয় বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এক সময়ের দিন মজুর জয়নাল হয়ে গেছে আংগুল ফুলে কলাগাছ। পুলিশের সঙ্গে সখ্যতার সুযোগে সোর্স জয়নাল অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসাসহ এমন কোনো অপরাধ নেই, যা সে নিয়ন্ত্রণ করছে না। সোনারগাঁ থানা পুলিশের কয়েকজন এস আই এর সাথে সোর্স জয়নালের সখ্যতা থাকার কারনে দিন দিন তার অপকর্ম বেড়েই চলেছে স্থানীয়দের অভিযোগ।
সূত্র জানায়, সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তাঘাটে তল্লাশির নামে ফিটিং বাণিজ্য এখন ওপেন সিক্রেট। রাতে চলাচলরত মানুষকে তল্লাশির নামে পকেটে ইয়াবা কিংবা গাঁজার পুরিয়া দিয়ে ফিটিং দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে সোর্স জয়নালের বিরুদ্ধে। আবার কখনও কখনও মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়েও সে নিরপরাধ মানুষের অর্থকড়ি হাতিয়ে নেয়। সোনারগাঁ উপজেলায় তার এহেন অপকর্মে এক আতঙ্কের নাম হয়ে দাড়িয়েছে পুলিশের সোর্স জয়নাল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নয়াপুরের একব্যক্তি জানান, পুলিশের সাথে আতাত করে উদ্ধারকৃত মাদকের কিছু অংশ জয়নাল নয়াপুর-সহ বিভিন্ন এলাকার যুবসমাজের মাঝে সাপ্লাই দিয়ে ধ্বংস করে দিচ্ছে উঠতি বয়সের যুবকদের ভবিষ্যৎ।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, সোর্সদের ভুয়া তথ্যে পুলিশ সদস্যদেরও অনেক সময় অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়।সোর্সরা পুলিশের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে চাঁদাবাজি করে থাকে বলেও অভিযোগ রয়েছে। অন্যান্য অপরাধকাণ্ডেও তারা অপ্রতিরোধ্য। কোনো কোনো সময় নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়েও এরা বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে তল্লাশি চালায়।আবার মামলার আসামি কিংবা বাদীর পক্ষ নিয়ে প্রতিপক্ষকে হুমকি-ধামকি দেয়। বিভিন্ন থানায় এসআই পদমর্যাদার পুলিশের সঙ্গে এ সোর্সদের যোগাযোগ বেশি। এদের সহযোগিতা নিয়েই তারা বিভিন্ন মামলার তদন্তে যান।
সম্প্রতি একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, কিছু অসাধু পুলিশ সদস্য ও সোর্স মিলে চাঁদাবাজি করছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ডিএমপি সদর দফতর থেকে থানায় থানায় চিঠি দিয়ে সোর্স নামধারী অপরাধীদের ব্যাপারে ওসিদের সতর্ক হতে বলা হয়েছে। এরপরও থামছে না সোর্সদের তৎপরতা ।
এ ব্যাপারে সোনারগাঁ থানা পুলিশের সোর্স জয়নালের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সবকিছু অস্বীকার করে বলেন একটি কুচক্রী মহল আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে প্রচার চালাচ্ছে অথচ জয়নাল মীর নামে তার নিজের ফেসবুক আইডির প্রোফাইল এড্রেস ভিজিট করলে পেশা হিসেবে ফর্মার ম্যানেজমেন্ট অব জব লিখা আছে।
এ ব্যাপারে সাদিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ মোল্লা জানান,সাদিপুর তথা সোনারগাঁ থেকে যদি কোন অপরাধীর তালিকা তৈরি করা হয় তাহলে সোর্স জয়নালের নাম এক নাম্বারে আসবে। তিনি আরো বলেন সে নিরীহ মানুষকে গ্রেফতার করিয়ে মোটা অংকের টাকা কামানো-সহ মাদক ব্যাবসা ও বিভিন্ন অপকর্মই তার পেশা।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোর্শেদ আলম বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং ওর সাথে যদি কোন পুলিশ সদস্য জড়িত থাকে তার বিরুদ্ধেও আইনী ব্যবস্থা নিব।