সাত খুন মামলার পিপির কন্যাকে বিষ খাওয়ানোর চেষ্টা, তদন্ত করছে পুলিশ

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলা পরিচালনার দায়িত্বে থাকা নারায়ণগঞ্জ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওয়াজেদ আলী খোকনের মেয়ে মাইশা ওয়াজেদ প্রাপ্তিকে (১৯) অপহরণের চেষ্টা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ওই সময়ে বিষ মেশানো বিষাক্ত কিছু প্রাপ্তির মুখে প্রবেশ করিয়ে অচেতন করে অপহরণের চেষ্টা কালে সে কোনমতে ছাড়া পায়। আশংকাজনক অবস্থায় তাকে  ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । চিকিৎসকদের জরুরী ব্যবস্থায় সে এখন শংকামুক্ত । ২৩ আগস্ট বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় নারায়ণগঞ্জ শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের বিপরীতে হাজী মঞ্জিল ভিলার নীচে এ ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় র‌্যাব-১১ এর সিও লেফট্যানেন্ট কর্ণেল কামরুল হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

সিও লেফট্যানেন্ট কর্ণেল কামরুল হাসান গনমাধ্যম কর্মীদের বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। এ সময় অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে । বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। চিকিৎসা শেষে ভিকটিমসহ তার স্বজনরা আসলে তাদের সাথে কথা বলার পর আরো তথ্য পাওয়া যাবে। সেগুলোর তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো যাবে।

এ ব্যপারে সদর মডেল থানার ওসি শাহীন শাহ পারভেজ বলেন, তারা খবরটি জানতে পেরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে ।

রাত সাড়ে ৮টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলেন, কলেজ ছাত্রী প্রাপ্তি এখন অসুস্থ। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।

তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে জানিয়েছে একটি প্রাইভেট কার যোগে আসা ৩ ব্যক্তির মধ্যে একজন প্রাপ্তিকে কিছু খেতে বাধ্য করে। যাতে নেশা জাতীয় বা বিষ জাতীয় কিছু মেশানো ছিল। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি।

ঘটনার সঙ্গে ৭ খুন মামলার কোন যোগ সূত্র রয়েছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে। কিন্তু ভিকটিম এখন অসুস্থ থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা যাচ্ছে না। সে কিছুটা সুস্থ হলে তার সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া এ বিষয় নিয়ে তার বাবা পিপি এ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকনের সঙ্গেও কথা বলবে পুলিশ।

প্রসঙ্গত, এ ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, হাজী মঞ্জিলের চতুর্থ তলায় তৌহিদুল ইসলামের ম্যাথ কোচিং সেন্টারে প্রাইভেট পড়ে  প্রাপ্তি। সে নারায়ণগঞ্জ এবিসি স্কুলের (ও লেভেলের) ছাত্রী। আর তৌহিদুল ইসলামও ওই স্কুলের শিক্ষক। এখানে বিকেল ৪টা হতে রাত ৮টা পর্যন্ত কোচিং পড়ানো হয়। প্রতিদিনের মত বিকেল সাড়ে ৪ টায় সে প্রাইভেট পড়ার জন্য আসে। বিকেল সোয়া ৬ টায় কোচিং শেষে ভবন থেকে নিচে নামার সময়ে বঙ্গবন্ধু সড়কে একটি সাদা রঙয়ের ক্যারিনা গাড়িতে করে কয়েকজন যুবক এসে তার গতিরোধ করে।

তখন তাকে বলে, তুমি কী ওয়াজেদ আলী খোকন স্যারের মেয়ে। প্রাপ্তি তখন হ্যাঁ বলার পর আগন্তক লোকজনরা বলে, তোমার বাবা তো গতকাল একটা ভালো কাজ করেছে। সে ভালো আইনজীবী। তাই তোমাকে মিষ্টি খাওয়াবো। তখন প্রাপ্তি মিষ্টি খেতে অনীহা প্রকাশ করে। এক পর্যায়ে লোকজন একটি পলিথিনে থাকা বিষাক্ত কিছু জোর করে প্রাপ্তির মুখে ঢেলে দেয়। তখন সে কোনমতে ওই স্থান থেকে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। এরপর আশেপাশের লোকজন বিষয়টি টের পেলে দুর্বৃত্তরা দ্রুত ২ নং রেল গেট দিকে পালিয়ে যায়।

এক পর্যায়ে প্রাপ্তি মুঠোফোনে বিষয়টি তার বাবা ওয়াজেদ আলী খোকনকে জানালে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে তাকে উদ্ধার করে। প্রথমে তাকে শহরের ৩০০ শয্যা হাসপাতালে পাঠানো হলে তাকে আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তার একেএম তারেক জানান, প্রাপ্তিকে বিষাক্ত কিছু খাওয়ানো হয়েছিল। সেটা ইতোমধ্যে ওয়াশ করা হয়েছে। সে এখন অবস্থা শংকামুক্ত।

add-content

আরও খবর

পঠিত