ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ারের খোঁজে পুলিশ

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : ১৮ বছর আগের এক হত্যা মামলার পলাতক আসামী নারায়ণগঞ্জ বন্দরের মুছাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনকে খোঁজে বেড়াচ্ছে পুলিশ। তিনি ৫ বছর আগে এক সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যান। মারা যাওয়ার পর আদালতে উপস্থিত না থাকায় আদালত তার  বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। আসামী গ্রেফতারের জন্য আদালত ৫ বছর আগে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু আদালতের  নির্দেশ  দেয়ার ৫ বছর পর্যন্ত মামলার আমাসীকে গ্রেফতার করতে কখনো যায়নি পুলিশ এমনকি একদিনও খোঁজ করেনি। দীর্ঘ ৫ বছর দায়িত্বশীল পুলিশ ওয়ারেন্ট হাতে রেখেছে।

১৪ ফেব্রুয়ারী রবিবার দুপুরে কামতাল তদন্ত কেন্দ্রে নব যোগদানকারী এ এস আই সাইদুর রহমান বন্দর থানার মামলা নং ১৯ (৬) ১৯৯৮ সালের এক হত্যা মামলার ওয়া›রেন্ট নিয়ে গ্রেপ্তার করার জন্য খোঁজ নিতে যান লাঙ্গলবন্দ এলাকায়। ওখানে থাকা উপস্থিত লোকজনকে আনোয়ার হোসেন ওরফে আনার, পিতা- হাজী রফিকুল ইসলাম, সাং-লাঙ্গলবন্দ। এই নামের কাউকে চিনেন কিনা জানতে চাইলে উপস্থিত লোকজন বলেন যে, আনোয়ার মারা গেছেন। তিনি মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। ৫ বছর আগে তিনি সোনারগাঁয়ে এক সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যান। মারা যাওয়ার পর এখনো আনোয়ারকে হত্যা মামলায় খোঁজছে পুলিশ এ বিষয়টি   এলাকাবাসীর মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৮ বছর পূর্বে ১৮ জুন ১৯৯৮ সালের বন্দর উপজেলার মদনপুর এলাকার ব্যবসায়ী জুলহাস হত্যা মামলায় প্রতিপক্ষ হিসাবে আসামী করা হয়েছে আনোয়ার হোসেনকে। ঐ মামলায় আদালতে সে হাজিরা না দেয়ায় ৫ বছর  আগে তাকে গ্রেফতার করার জন্য পুলিশের কাছে ওয়ারেন্ট পাঠায় আদালত। পুলিশ সহকারী উপ পরিদর্শক সাইদুর রহমান সত্যতা স্বীকার করে  জানান, মারা যাওয়ার পর আদালতে উপস্থিত না থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। ৫ বছর আগে মারা যাওয়ার পরও ওয়ারেন্ট ফেরত দেয়নি থানায় দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তারা। পলাতক  আসামী একজন সুপরিচিত ব্যক্তি ছিল এবং তিনি মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি মারা যাওয়ার পর ঐ শূন্য পদ থেকে তার ছোট ভাই মাকসুদ হোসেনও চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার পিতা হাজী রফিকুল ইসলাম ও পাশ্বের ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। তারা উপজেলাবাসীর মধ্যে একটি আলোচিত পরিবার।

এছাড়াও আনোয়ার হোসেন ৪টি হত্যাসহ এক ডজন মামালার আসামী ছিলেন। সে পুলিশের তালিকা ভূক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী হয়েও জনগনের ভোটে মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় ব্যাপক আলোচিত হয়ে উঠেছিল। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পরপর নারী কেলেঙ্কারীর ঘটনায় এক যুবককে পুরুষাঙ্গে ইট বেধে ঘুরানোর ঘটনায় দেশ ব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল মরহুম চেয়ারম্যান আনোয়ার। এ জন্য তাকে হাইকোর্ট তলবও করেছিলেন। কিন্তু তিনি সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যাওয়ায় আর হাইকোটে তাকে যেতে হয়নি। মৃত্যুর ৫ বছর পর এক হত্যা মামলায় তাকে খোঁজা খুঁজি করায় আবারও তিনি আলোচনায় হয়ে উঠলেন।  এলাকাবাসী বলেন, যে ব্যক্তি ৫ বছর পূর্বে মারা গেছেন সে কথা থানা পুলিশও জানেন। তার পরেও হত্যা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা বহাল এটা পুলিশের বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলা বলে অবহিত করেন।

add-content

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও খবর

পঠিত