নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব সংবাদ দাতা ) : নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী, দলের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানসহ দলের নেতাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির মনোনিত মেয়র প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খান। দুপুরে নারায়ণগঞ্জে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র কেনার পর পর এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, এই বৈঠক নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন।
নারায়ণগঞ্জে আইভী ও শামীমের মধ্যে পুরনো দ্বন্দ্ব এই নির্বচানে যেন কোনোভাবে প্রভাব না ফেলে সে দিকে সতর্ক আওয়ামী লীগ। সোমবার দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং মঙ্গলবার রাতে সভাপতি শেখ হাসিনার তার সরকারি বাসভবন গণভবনে নারায়ণগঞ্জের আলোচিত এই দুই নেতা এবং অন্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী আইভীর পক্ষে শামীম ওসমানকে কাজ করতে নির্দেশ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, অন্যথা হলে তিনি মেনে নেবেন না।
বিএনপির প্রার্থী ঘোষিত হওয়ার পর থেকেই বর্তমান মেয়র আইভীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন সাখাওয়াত। এই অভিযোগের সর্বশেষ সংযোজন মঙ্গলবারের গণভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠক।
দলের সভাপতির সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের নেতাদের বৈঠক কীভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘনের মধ্যে পড়ে-জানতে চাইলে সাখাওয়াত বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেহেতু একজন প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন-এতে করে স্থানীয় প্রশাসনে প্রভাব পড়তে পারে। কারণ প্রধানমন্ত্রীর চাওয়া পাওয়াকে প্রাধান্য দিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা সরকারদলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করার কলকাঠি নাড়তে পারে।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিরুদ্ধেও আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলেন সাখাওয়াত। তিনি বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দল একের পর এক আচরণবিধি লঙ্ঘন করে চলেছে। মেয়র আইভী এখন সরকারি গাড়ি, ও অফিস ব্যবহার করে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে, মিডিয়ার সঙ্গেও কথা বলছেন। এটাও এক ধরনের আচরণবিধি লঙ্ঘনের মধ্যে পড়ে।
এসব বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে কোনো অভিযোগ দিয়েছেন কি না- জানতে চাইলে সাখাওয়াত বলেন, না লিখিত জানাইনি, তবে আপনাদের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
সাখাওয়াতের এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমন্বয়কারী চৌধুরী মুহিবুল হাসান নওফেল বলেন, সেলিনা হায়াৎ আইভী ও শামীম ওসমানের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক তো কোনো রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি ছিল না। এটা আমাদের দলের কর্মসূচি ছিল। আর এই নির্বাচন তো দলীয়ভাবেই হচ্ছে। এখন দলের সভাপতি বৈঠক করলে সেটা আচরণবিধির লঙ্ঘন হবে কেন?’
এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, বিএনপি নির্বাচনে আসার ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইছে। এর আগেও তারা একই ধরনের কাজ করেছে। অকারণ অভিযোগ তুলে বিতর্ক তৈরি করা তাদের স্বভাব।
যোগাযোগ করা হলে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, আমি এখন পর্যন্ত যেহেতু প্রার্থী হইনি, তাই আচরণবিধি লঙ্ঘনের প্রশ্নই উঠে না। তার এসব বক্তব্যের জবাব আমি দেবো মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর।