নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : আমার স্বাধীন কে ওরা চীর জীবনের জন্য স্বাধীন করে দিয়েছে। স্বাধীনকে মীরুর ক্যাডাররা খুন করছে। রাজনীতি করাটাইকি স্বাধীনের অপরাধ, আমরাতো কারো ক্ষতি করিনি তবে ওরা কেন আমাদের এত বড় ক্ষতি করলো, ওহ আল্লাহ আমি এখন কোথায় যাব, কি করবো? এমন আকুতি করে হাউমাউ করে কাঁদছে নিহত স্বাধীনের স্ত্রী পারভীন হোসেন। তার আর্তনাদে পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। আর্তনাদের গতিটা একটু থামতেই নিহত স্বাধীনের স্ত্রী পারভীনকে প্রশ্ন করা হলে উত্তরে বলেন, সন্ত্রাসী মীরুর ক্যাডাররা আমার স¦াধীনকে খুন করেছে। এটা প্রতিহিংসার বলি। আমার স্বাধীনের রাজনৈতিক উত্থান সহ্য করতে না পেরে পরিকল্পিত ভাবে মীরুর ক্যাডাররা খুন করার জন্য স্বাধীনের উপর হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন সদ্য বিদবা তরুনী গৃহবধূ পারভীন (২৬)।
শেখ মনির হোসেন স্বাধীনের স্ত্রী পারভীন (২৬) ও পারভীনের বড় বোন রেখা (৪০) ও স্বাধীনের ভাগ্নে আশরাফুল মোড়ল নিউজ ২৪ এর প্রতিবেদককে জানান, ১৮ অক্টোবর মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে স্বাধীন ও তার স্ত্রী পারভীন এবং পারভীনের বড় বোন রেখা ঢাকায় আত্মীয়ের বাড়ী থেকে অনুষ্ঠান শেষে নারায়ণগঞ্জে ফতুল্লা নিজেদের বাড়ীতে ফিরছিলেন। এসময় আগে থেকেই পাগলার রাস্তায় উৎপেতে থাকা সন্ত্রাসী মীরুর লোকজন আমাদের উপর হামলা চালায় এবং স্বাধীনকে ধারলো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। এসময় স্বাধীনকে বাঁচাতে গেলে স্ত্রী ও তার বড়বোন আহত হন। এরপর তিন জনকেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । তখন স্বাধীনের অবস্থা খুব খারাপ থাকাতে তাকে দ্রুত চিকিৎসা দেয়া হয় এবং আইসিইউতে অভজারবেশনে রাখা হয় । এরপরদিন বুধবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্বাধীনের মৃত্যু হয়। নিহত শেখ শখ মনির হোসেন ফতুল্লা থানার রসুলপুর এলাকার মোসলেম শেখের ছেলে।
এলাকাবাসী জানান, সম্প্রতি ডিশ লাইনের দখল নিয়ে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সন্ত্রাসী মীর হোসেন ওরফে মীরু বাহিনীর সঙ্গে মনির হোসেনের ঝগড়া হয় । এরপর মীর বাহিনী সংর্ঘষের ঘটনায় স্বাধীনসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলাও করে।
বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেন ফতুল্লা মডেল থানার সার্কেল এএসপি শরফুদ্দীন জানান, লাশের ময়নাতদন্ত শেষে এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হবে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার ৮ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা শিল্পাঞ্চলের অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রণকর্তা মীর হোসেন মীরু ওরফে ল্যাংড়া মীরুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরআগে শুক্রবার রাতে পাগলা রেলস্টেশন এলাকায় চার যুবককে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে আহত ও গুলি ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টির ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় মীরুকে গ্রেফতার করা হয়। সরকারি দলের স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের ছত্রছায়ায় গত কয়েক বছর ধরে ফতুল্লার পাগলা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে আসছে এই মীরু ও তার বাহিনী। এতদিন অপরাধে জড়িত থাকলেও ছিল ধরাছোঁয়ার বাইরে। অবশেষে ফতুল্লা থানারওসি কামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী মীরুকে তার ফতুল্লা পাগলা এলাকার নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। মীরু ওই এলাকার মৃত নূর মোহাম্মদের ছেলে এবং স্থানীয় কুতুবপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক।