নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বন্দর প্রতিনিধি ) : বন্দরে পারিবারিক কলহের জের ধরে ও ২ মাসের গর্ভবতী গৃহবধুকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম ও পেটে লাথি মেরে আহত করেছে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ীর লোকেরা। রবিবার রাত ৯টায় বন্দর কলাবাগ এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় গৃহবধু হ্যাপি বেগম (২২) কে বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, থানার কলাবাগ এলাকায় দেড়বছর পূর্বে মোঃ হারুনুর রশিদের মেয়ে হ্যাপি বেগমের সাথে হাফেজীবাগ এলাকার মোঃ আশরাফ মিয়ার ছেলে ফয়সালের সাথে দেড় বছর পূর্বে ইসলামী শরিয়া মোতাবেক বিয়ে হয়। বিয়ের ১মাস না পেরুতেই হ্যাপি বেগমের সাথে স্বামী ফয়সালের ঝগড়া শুরু হতে থাকে। ফয়সাল ধীরে ধীরে মাদকাশক্ত ও ভবঘুরে হয়ে যায়। রাতে বাসায় ফিরে সামান্য ব্যাপারে স্ত্রী হ্যাপির সাথে ঝগড়ায় মেতে উঠত এবং কথায় কথায় হ্যাপির পিত্রালয় হতে টাকা আনতে বলত। এভাবে দিনের পর দিন চললেও ফয়সালের বাবা, মা নিজ ছেলেকে শাষন না করে ওল্টো হ্যাপিকে গাল-মন্দ করত। এভাবে দিনের পর দিন হ্যাপি বেগম স্বামী ও শ্বশুর , শ্বাশুরীর নিযার্তন মুখ বুজে সহ্য করত। এদিকে হ্যাপি ২মাসের অন্তসত্ব্যা। ফয়সালের সন্তান হ্যাপির গর্ভে। তারপরও শ্বশুর বাড়ী ও স্বামীর অত্যাচার থেকে রেহাই পায়না নিরিহ গৃহবধু হ্যাপি। যৌতুকের টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে ফয়সাল ও তার বাবা, মা। আর ফয়সাল প্রায়ই তার গর্ভবতী স্ত্রী হ্যাপিকে নেশার টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করত এমনকি প্রহারও করত। দেড় মাস পূর্বে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ীর এই অত্যাচার থেকে রেহাই পেতে নিজের গর্ভের সন্তানকে বাচাঁতে নিজ পিত্রালয়ে চলে আসে হ্যাপি বেগম। ফয়সাল তার শ্বশুর বাড়ী গিয়েও তার গর্ভবর্তী স্ত্রীকে নেশার টাকার জন্য মারধর করত। গত শনিবার নেশার টাকার জন্য শ্বশুর বাড়ীতে গিয়ে স্বামী ফয়সাল তান্ডব চালায় এবং টাকা না পেয়ে স্ত্রী হ্যাপিকে বেদম প্রহার করে চলে আসে। এর ধারাবাহিকতায় রবিবার হ্যাপির স্বামী ফয়সাল,হ্যাপির শ্বাশুরী আক্তার বানু, বিল্লাল, আশরাফ সবাই মিলে হ্যাপির পিত্রালয়ে গিয়ে জোড়পূর্বক ফয়সালের নিজ বাড়ীতে নিয়ে আসার জন্য চাপ দেয়।
হ্যাপি গর্ভাবস্থায় পিত্রালয় থেকে স্বামীর বাড়িতে যেতে আপত্তি জানালে তাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে এবং তার শ্বাশুরী গর্ভের সন্তান অন্য কারো বলে অপবাদ দেয়। এক পর্যায়ে ফয়সাল তার স্ত্রীকে চুলের মুঠি ধরে উপর্যুপরি প্রহার কওে রক্তাক্ত জখম করে এবং শ্বাশুরী আক্তার বানু গর্ভবতী হ্যাপির সন্তানকে হত্যার উদ্দেশে তলপেটে লাথি মারে। অসহায় হ্যাপির আর্ত্ম-চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসার আগেই স্বামী ফয়সাল ও শ্বশুর বাড়ীর লোকজন সটকে পড়ে। স্বজনরা হ্যাপিকে গুরুতর আহত অবস্থায় উপজেলা কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়ার ব্যবস্থা করে। এ ব্যাপারে বন্দর থানায় সাধারন ডায়েরী হয়েছে।