জুয়েলারী ব্যবসায়ীকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলতে গিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার পুলিশ

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নগরীর কালীরবাজার স্বর্ণপট্টি এলাকায় জুয়েলারী ব্যবসায়ীকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলতে গিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছে খোদ সদর মডেল থানার  পুলিশের এএসআই আশরাফ। বুধবার ২২ ই জুন সকালে স্বর্ণপট্টি এলাকার এক জুয়েলারী ব্যাবসায়ীকে চোরাই স্বর্ণ ক্রেতা বানাতে গিয়ে নিজেই ফেঁসে যান পুলিশের এই অসাধু এএসআই ।এতে করে ব্যাবসায়ীরা ক্ষুব্দ হয়ে উঠে এবং এসময় আশরাফ নিজেকে পুলিশের বড় কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে উল্টো ব্যাবসায়ীদের কে গ্রেফতারের চেষ্টা করলে গনরোশের ঘটনা ঘটে ।

পুলিশের এই কর্মকান্ডের প্রতিবাদে স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ রেখে সড়ক অবরোধ করে রাখে। পরে সংবাদ পেয়ে গণপিটুনীর শিকার এএসআই ও তার সোর্স লিটনকে জনরোষের কবল থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মালেক।

ব্যবসায়ীরা জানান, সদর থানার সহকারী দারোগা আশরাফ তার সোর্স লিটনকে পাঠায় একটি ছিড়া চেইন বিক্রি করতে। কালীরবাজার স্বর্ণপট্টিতে নওয়াব প্লাজার দ্বিতীয় তলায় পান্ডব রায়ের মালিকানাধীন মা তাঁরা ষ্টোরে গিয়ে লিটন সেই চেইন বিক্রি করতে চাইলে দোকানদার কিনতে অস্বীকৃতি জানায়। তখন এএসআই আশরাফ সাদা পোষাকে গিয়ে লিটনকে গ্রেফতার করতে চাইলে সকল ব্যবসায়ীরা একসাথে দোকান থেকে বের হয়ে আসে এবং দারোগা আশরাফ ও লিটনকে মার্কেটের দোতলায় অবরুদ্ধ করে রাখে। এখবর পেয়ে মার্কেটের সকল ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ রেখে রাস্তায় পুলিশের শাস্তির দাবীতে মিছিল করতে থাকে। এমতাবস্থায় এএসআই আশরাফ তার কথিত ছিনতাইকারী লিটনকে নিয়ে বের হয়ে যেতে চাইলে উত্তেজিত জনতা আশরাফ ও লিটনকে গনপিটুনী দেয়। জনরোষ থেকে বাঁচতে আশরাফ লিটনকে নিয়ে পুঁনরায় দোতলায় আশ্রয় নেয়। এর কিছুক্ষণ পর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মালেক অতিরিক্ত ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা করেন। তিনি তার পুলিশ বাহিনী দিয়ে আশরাফ ও লিটনকে পুলিশ ভ্যানে উঠানোর সময়ও জনতা তাদের গন ধোলাই দিতে থাকে। গনপিটুনী খেতে খেতেই তারা থানার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়।

ব্যবসায়ীরা আরো অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ প্রায়ই নিজেদের লোকদের আমাদের এখানে আগে চোরাই স্বর্ণ বিক্রি করতে পাঠায়। কোন দোকানদার সেই স্বর্ণ কিনলে তাকে সহ বিক্রেতাকে থানায় ধরে নিয়ে যায় এবং ৫০ হাজার ১ লাখ টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়।

আমরা নিরীহ ব্যবসায়ীরা সদর থানার পুলিশের হাতে জিম্মি হয়ে গেছি। পুলিশের এ ধরনের অনৈতিক কার্যক্রমে ফুঁসে উঠেছে কালীরবাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। দিনের পর দিন পুলিশের অত্যাচার সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে বলে জানায় তারা। আর তাই আজ তারা সবাই রাস্তায় নেমে এসেছেন। তারা সকলে পুলিশের প্রতারনার জাল থেকে অসহায় ব্যবসায়ীদের উদ্ধারের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। প্রায় দুই ঘন্টা পর তারা রাস্তা অবরোধ তুলে নেয়। কিন্তু এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে দোষী পুলিশ সদস্য আশরাফের উপযুক্ত বিচার না হলে তারা আবার রাজপথে নামার ঘোষনা দেয়। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মালেক বলেন, আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো।

add-content

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও খবর

পঠিত