সরকার যেন ব্যর্থ ও স্বৈরাচার না হয়, দুটোই প্রতিরোধ করতে হবে

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেছেন, অন্তবর্তীকালিন সরকার ভোটে নির্বাচিত নয় তবে আমাদের সকলের সমর্থন আছে। এই সরকার যেন ব্যর্থ না হয় আবার স্বৈরাচারও না হয়; দুটোই আমাদের প্রতিরোধ করতে হবে।

সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টায় প্রেসক্লাব ভবনের সিনেমন রেঁস্তোরায় নারায়ণগঞ্জের সাংবাদিকদের সাথে জেলা বিএনপির মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, গত ১৬ বছরের আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। অন্যান্যরাও আন্দোলন করেছে তবে বিএনপির আন্দোলনের সাথে অন্যদের আন্দোলনের পার্থক্য ছিল। পরে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন দেড় মাসে গণঅভ্যুত্থান করে। যারা বলে এটি ছাত্রদের অর্জন তারা ষড়যন্ত্রের বেড়া জালে দেশকে নিমজ্জিত করতে চায়। স্বৈরাচার দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে, দ্রব্যমূল্য, বিদ্যুৎ, গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি, বিচার ব্যবস্থা ধ্বংস করার করায় মানুষের মধ্যে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। যখন ক্ষোভ চূড়ান্ত রূপ নিবে তখন কোটা বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। জনগণের ১৬ বছরের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে ছাত্র আন্দোলনের সময়। ছাত্রজনতার আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারের পতন ও দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।

গিয়াসউদ্দিন বলেন, এমন কোনো পেশা, শ্রেণি নেই স্বৈরাচার যাদের মাথা কিনে নেয়নি, সাহায্য পায়নি। শুধু সাংবাদিক না সকলেই সহযোগিতা করেছে। ব্যবসায়ীরা আজীবন শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। গত ১৬ বছর প্রশাসনে যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে তারা স্বৈরাচারের দোসর। বিচার ব্যবস্থাও আওয়ামী লীগ ছাড়া নিয়োগ হয়নি। সেখানে মেধার কোনো মূল্যায়ন করা হয়নি।

অন্তবর্তীকালিন সরকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই সরকারের একটি বিধ্বস্ত অর্থনীতি, প্রশাসন, বিচার ব্যবস্থাসহ রাষ্ট্র পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলি সবই বিধ্বস্ত প্রায়। আমাদের নেতা তারেক রহমান জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে বলেছেন, ৫ আগস্ট যে বিজয় হয়েছে তা চূড়ান্ত বিজয় নয়। আমরা ১৬ বছর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা চেয়েছি। কিন্তু অন্তবর্তীকালিন সরকার ভোটে নির্বাচিত না। তবে আমাদের সকলের সমর্থন আছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের নেতা এবং আমরা বলি, এই সরকার যেন ব্যর্থ না হয়। আবার এই সরকার যেন স্বৈরাচার না হয়। দুটাই প্রতিরোধ করতে হবে। ক্ষমতার লোভে যেন দীর্ঘদিন থাকার চেষ্টা না করে সে জন্য সাংবাদিকদের লিখনিতেও প্রকৃত সত্য আনতে হবে। সংস্কারকে আমরা সকলে স্বাগত জানাই। তবে অনন্তকালের জন্য সময় দিতে পারবো না। সংস্কারের পর ফের জনপ্রতিনিধি লাগবে; সংসদে গিয়ে পাশ করাতে হবে। তাহলে তো আইন আছে। কাজেই জনগণের ভোটাধিকারের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু পতিত স্বৈরাচারের যারা দেশে-বিদেশে আছে তারা ষড়যন্ত্র করবে এই অন্তবর্তীকালিন সরকারের কাজে বাধা দেয়া ও তাদের দুর্নাম করার জন্য।

গিয়াসউদ্দিন বলেন, ফতুল্লা শিল্প সমৃদ্ধ এলাকা। এটাকে সিটি কর্পোরেশনে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি। আমি উপদেষ্টাদের সাথে যোগাযোগ করছি। যদি ফতুল্লাকে সিটি কর্পোরশনের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারি তাহলে সেদিন আর জলাবদ্ধতার জন্য কোনো জায়গায় কোনো রকম দাবি-দাওয়া নিয়ে যেতে হবে না। একের ভিতরে অনেক। ড্রেন হবে, কালভার্ড হবে, ব্রিজ, রাস্তা, আলোকসজ্জা সকল সমস্যার সমাধান হবে। যেমনটা এখন দেখছেন বন্দর, সিদ্ধিরগঞ্জ এবং নারায়ণগঞ্জ শহরকে। এ রকম ফতুল্লাকেও আমরা উন্নত করতে চাই।

এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বস্তুনিষ্ঠার সাথে সত্য ও প্রকৃত তথ্য তুলে ধরার আহ্বান জানান তিনি।

নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আরিফ আলম দিপুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবনের সঞ্চালনায় এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সহ সভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব, ফতুল্লা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. আব্দুল বারী ভূইয়া, জেলা যুব দলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি প্রমুখ।

 

add-content

আরও খবর

পঠিত