আড়াইহাজারে কিশোরী গণধর্ষণে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ৪

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪: নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় মধ্যরাতে ঘরের দরজা ভেঙে ঢুকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এক কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

গত রোববার দিবাগত রাতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি জানান র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল তানভীর মাহমুদ পাশা৷ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি জানান, ডাকাতির উদ্দেশ্যে ওই বাড়িতে গিয়ে কিশোরীকে গণধর্ষণ করেন গ্রেপ্তার আসামিরা৷

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- মূল পরিকল্পনাকারী আড়াইহাজার উপজেলার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মো. আব্দুল্লাহ (২৪), তার সহযোগী নরসিংদীর মাধবদীর মৃত মনসুর আলীর ছেলে মো. মতিন (৩৫), আড়াইহাজারের রহিম মিয়ার ছেলে চাঁন মিয়া (২৮) ও মফিজউদ্দিনের ছেলে আয়নাল (২৫)৷

অভিযানে তাদের কাছ থেকে ভুক্তভোগীর মোবাইলসহ একটি দেশীয় তৈরি ওয়ানশুটার গান, একটি শাবল, একটি দা, দুইটি রামদা ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত সিএনজি জব্দ করা হয় বলে জানায় র‌্যাব

মামলার নথির বরাতে র‌্যাবজানায়, গত ১৫ মে আনুমানিক রাত আড়াইটার দিকে ১৭ বছরের এক কিশোরীকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে৷ এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরী নিজে বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আড়াইহাজার থানায় অজ্ঞাতনামা ৫-৬ জনকে আসামি করে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন৷ চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে র‌্যাব

প্রাথমিক তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদে আসামিদের দেওয়া তথ্যের বরাতে তানভীর মাহমুদ জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা সংঘবদ্ধ একটি ডাকাত চক্রের সদস্য, যার মূলহোতা আব্দুল্লাহ। এই চক্রে ১০-১২ জন সদস্য রয়েছে। আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে তারা গত ২ বছর যাবৎ বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি করে বেড়ায়৷

“ঘটনার রাতে তারা ডাকাতির উদ্দেশ্যে ওই বাড়িতে যায়৷ আব্দুল্লাহ ও মতিন ঘরের জানালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে৷ এ সময় ঘরে থাকা ভুক্তভোগী কিশোরী ও তার মায়ের ঘুম ভেঙে গেলে তাদেরকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখে। পরে তারা বাকি সহযোগীদের নিয়ে মা-মেয়ের হাত, পা ও মুখ বেঁধে ফেলে৷ঘরে কোনো মূল্যবান জিনিস না পেয়ে ভুক্তভোগীর হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পাশে একটি ফাঁকা ঘরে নিয়ে গিয়ে মুুখে ওড়না পেঁচিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে৷ পরে ভুক্তভোগী কিশোরীকে অসুস্থ অবস্থায় রেখে তার মাকে এ বিষয়ে কাউকে না জানাতে হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়৷”

এ ডাকাত চক্রের মূলহোতা গ্রেপ্তার আব্দুল্লাহ এক সময় একটি স্পিনিং মিলে কাজ করতো৷ পরে ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়লে ডাকাত চক্রটি গড়ে তোলে৷ সে ডাকাতি পেশাকে আড়াল করতে বাসচালকের সহযোগী হিসেবে কাজ করতো এবং কখনো রিকশা চালাতো বলে জানান এ র‌্যাবকর্মকর্তা৷

তার অন্যতম সহযোগী মতিনও ডাকাত পরিচয়কে আড়াল করতে সিএনজি চালাতো এবং বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতির টার্গেট নির্ধারণ করে ডাকাতির পরিকল্পনা করে আব্দুল্লাহকে জানাতো৷ তার বিরুদ্ধে নরসিংদীর মাধবদী থানায় অস্ত্র, ডাকাতি ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনো অন্তত তিনটি মামলা রয়েছে৷ গ্রেপ্তার অপর ব্যক্তি চান মিয়ার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ থানায় অস্ত্র, ডাকাতি ও চুরিসংক্রান্ত তিনটি মামলা রয়েছে৷ আয়নালও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা একটি মামলার আসামি বলে জানায় র‌্যাব।

 

add-content

আরও খবর

পঠিত