নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : গত নির্বাচনী হলফনামায় নিজ গাড়ি নেই উল্লেখ করেছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা। আর এবারে বছরে ব্যবসায় আয় কমেছে লাখ টাকারও বেশি। স্ত্রীর ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। যদিও স্বামী–স্ত্রীর নামে ব্যাংকে কোনো ঋণও নেই। তবে আয় কমলেও ৮৫ লাখ টাকার গাড়ি কিনেছেন তিনি। যা নিয়ে এখন আলোচনা সর্বত্রে। হয়েছেন বিভিন্ন গণমাধ্যমে শিরোনাম।
এদিকে, গাড়িটি নিয়ে নেতিবাচক কিছু দেখছেন না তার নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, একজন দুবারের জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে উনার একটি গাড়ি থাকাটা স্বাভাবিক। আর ব্যবসায়ী আয় কমলেও পারিবারিক আয় মিলিয়ে তিনি একটি গাড়ি ক্রয় করতেই পারেন। যেহেতু একজন সংসদ সদস্যের বিভিন্নস্খানে ছুটে যেতে হয়। এমনকি সংসদ ভবনেও উপস্থিত হতে হয়। সবমিলিয়ে নিরাপত্তার দিকে বিবেচনা করলে মূল্যবান গাড়ি হলেও তা নিয়ে আলোচনা থাকাটা স্বাভাবিক। তবে অতিরঞ্জিত সমালোচনা অনুচিত।
প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণে দেখা যায়, ব্যবসায় তাঁর বাৎসরিক আয় কমেছে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার। ৫ বছর আগে ব্যবসা খাতে স্ত্রী ডালিয়া লিয়াকতের আয় ছিল ১১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ১৬ হাজার টাকা। নগদ টাকার পরিমাণে ব্যবসায় পুঁজি ও হাতে ছিল ৯৮ লাখ টাকা, বর্তমানে তা কমে হয়েছে প্রায় ৭৭ লাখ টাকা। তবে স্ত্রীর ব্যবসার পুঁজি বেড়েছে প্রায় ২৭ লাখ টাকা। এছাড়াও ৫ বছর আগে লিয়াকত হোসেন খোকার বাড়ি–অ্যাপার্টমেন্ট–দোকান ভাড়া থেকে বাৎসরিক আয় ছিল ৪ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। ৫ বছরে এই খাতে তাঁর আয় বেড়েছে মাত্র ১৩ হাজার টাকা।
ব্যাংকে এমপি খোকার নিজের নামে ৫ বছর আগে জমা ছিল প্রায় ৪ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। এবার তা কমে হয়েছে ৪ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। স্ত্রীর ব্যাংকে জমা টাকা আগের তুলনায় ৮৭ হাজার টাকা কমে ৮ লাখ ১৩ হাজার হয়েছে। নির্ভরশীলের নামে আগে ১৫ লাখ ৮৮ হাজার টাকা থাকলেও এবার বেড়ে তা হয়েছে প্রায় ৪৮ লাখ। এই সংসদ সদস্য এবং তাঁর স্ত্রীর নামে দুইটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মাত্র ১৯ লাখ টাকার শেয়ার থাকলেও তিনি ও তাঁর স্ত্রী প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ টাকা দামের দুই গাড়িতে চড়েন।
৫ বছর আগে দেখানো হলফনামায় লিয়াকত হোসেন খোকার স্ত্রীর নামে গাড়ি থাকলেও তাঁর নিজের কোন গাড়ি ছিল না বলে উল্লেখ করেছিলেন। এবার তাঁর নিজের নামে একটি টয়োটা জিপের মূল্য দেখানো হয়েছে ৮৫ লাখ ২৭ হাজার টাকা। আগে তার নামে কোন জমি, প্লট না থাকলেও এবার ৬ লাখ ৬০ হাজার অগ্রিম দিয়ে রাজউকের একটি প্লট দেখিয়েছেন তিনি। স্ত্রীর নামে নতুন করে সোনারগাঁয়ে ৬ লাখ টাকা মূল্যের ৮ শতাংশ জমি কেনা হয়েছে। দায় দেনার মধ্যে মার্কেটের দোকান ভাড়া অগ্রিম হিসেবে নেয়া গত নির্বাচনের হলফনামায় দেখানো ৩১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবারও দেখানো হয়েছে। এছাড়া তার কিংবা তাঁর স্ত্রীর নামে ব্যাংকের কোন দায় দেনা নাই।