নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বিশেষ প্রতিবেদক ) : দীর্ঘ ১৩ মাস বিলুপ্ত হওয়া স্বেচ্ছাসেবক লীগের নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মাহনগর কমিটির নেতাকর্মীদের মধ্যে এখন ব্যপক উদ্দিপনা। নতুন নেতৃত্ব গঠনে বেড়েছে ব্যস্ততা। পদ প্রত্যাশীদের মধ্যে চলছে দৌড়ঝাপ। ইতমধ্যে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে চলছে ওয়ার্ডগুলোতে সম্মেলন। সবকিছু ঠিক থাকলে আজ মহানগরের আওতাধীণ ১৩, ১৪ ও ১৫নং ওয়ার্ডে ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
সূত্রমতে, এই তিনটি ওয়ার্ডে আজ সম্মেলনের মাধ্যমে দুইজন করে পদ প্রার্থী মনোনিত করবেন নেতারা। যেখানে একজন সভাপতি ও একজন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নামও ঘোষণা করা হবে। এরই মধ্যে প্রচারণায় পোস্টার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে ওয়ার্ডগুলো। অনুষ্ঠানকে ঘিরে সম্পন্ন হয়েছে সকল প্রস্তুতীও। রয়েছে পদ নিয়ে একাধিক প্রার্থীর ব্যপক প্রতিযোগীতাও।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানায়, এই ওয়ার্ডগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্ব বহন করে ১৩নং ওয়ার্ড। কারণ বিভিন্ন সময় দলের হয়ে মিছিল-সমাবেশে সবচেয়ে বেশী ভূমিকা রেখে আসছে এই ওয়ার্ডটি। তবে সঠিক নেতৃত্ব গড়ে না উঠায় এ ওয়ার্ডটি এখন অনেকটাই পিছিয়ে পড়ছে যুব নেতৃত্ব। আর ধীরে ধীরে বিএনপি-জামায়েতের নেতাকর্মীরা মাথা ঝাড়া দিয়ে উঠায়র চেষ্টায় রয়েছে। তাই এ ওয়ার্ডকে ঢেলে সাজানো এখন বাধ্যতামূলক হয়ে পড়েছে। যাতে করে কোনভাবেই হাইব্রীড এবং বিএনপি-জামায়েতে সখ্যতাকারীরা ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসবেক লীগ কমিটতে প্রবেশ না করতে পারে। সেজন্য দলে সক্রিয় এবং পরিচ্ছন্ন লোককেই চায় তৃণমূল।
আরো জানা গেছে, এই ওয়ার্ডে স্বেচ্ছাসবেক লীগের সভাপতি পদ প্রার্থী হিসেবে যার নাম প্রথমেই রয়েছে রাকিবুল হাসান। সে গলাচিপা এলাকার বাসিন্দা। দীর্ঘ যুগ ধরেই এ দলের কর্মী হিসেবে মাঠে সক্রিয় রয়েছে। যেকোন সভা-সামবেশ থেকে শুরু করে কর্মী সমর্থক নিয়ে মিছিল-মিটিংয়ে বিশাল শোডাউনে নাম রয়েছে তার। স্বেচ্ছাসেবক লীগের যেকোন কর্মসূচী বলতেই ১৩নং ওয়ার্ডে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে রাকিব। তার প্রতিদ্বন্ধি হিসেবে দুইজনের নাম উঠে এসেছে মো. রানা এবং রনি শেখ। যদিও এদের মধ্যে প্রত্যাহার করে নেয়ার গুঞ্জন চলছে। তবে স্থানীয়দের কাছে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রানা রাজনীতিতে সক্রিয় মুখ নয়। দলীয় কিংবা জাতীয় কর্মসূচীতেও নেই তোমন কোন অংশগ্রহন। পদকে ঘিরে নাম শুনা গেলেও এই ওয়ার্ডে নেতৃত্ব দিতে আগে কথনো দেয়া যায়নি। তার চলাফেরাও বিএনপি ঘেঁষা নেতাকর্মীদের সাথেই। সেক্ষেত্রে তাকে নিয়ে কমিটির ব্যপারে অনেকেরই নারাজী রয়েছে।
এদিকে, রনি মাসদাইর এলাকার বাসিন্দা। কিন্তু স্থানীয়দের কাছে তার রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিয়ে আওয়ামীলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের তেমন কোন কর্কৃত্ব নেই বলে জানায়। সম্প্রতি সভাপতি পদকে কেন্দ্র করেই বিভিন্ন সভায় তাকে লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়াও গুরুতর অভিযোগ উঠেছে ২০০১ সালের নির্বাচনী কেন্দ্রে বিএনপি দলের হয়ে দখল নৈরাজ্য চারায় রনি। তার বাবা মন্টু শেখ। একজন কট্টর পন্থি বিএনপি সমর্থক। আদর্শ স্কুলের কেন্দ্র দখলে নিতে আওয়ামীলীগ সমর্থকদের ধাওয়া করার ঘটনায় অন্যতম ভুমিকা পালন করেছেন। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নাম এসেছে ৩ জনের। নয়ন, সুমন মিয়া, মোক্তার।
পাশাপাশি, ১৪নং ওয়ার্ডে সভাপতি সুমন, সাধারণ সম্পাদক রাজিব। এদের নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে তেমন একটা কৌতুহুল দেখা যায়নি। তবে ১৫নং ওয়ার্ডে মো. তানহা ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রয়েছে আবেদ। যাদের মধ্যে মো. তানহা ইসলাম একজন পরিচিত মুখ। তিনি ছাত্রলীগের মিছিল-মিটিং থেকে শুরু করে আওয়ামীলীগের একজন কর্মী হয়ে ছেলেবেলা থেকেই রাজনীতির সাথে জড়িত রয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক লীগের যেকোন কর্মসূচীতেও তার অংশগ্রহন রয়েছে। তবে এবার সংগঠনের স্বার্থে নেতৃত্বে অংশ নিতে চায় তানহা।
জানা গেছে, সরকারী তোলারাম কলেজ প্রাঙ্গনে বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক লীগের এ সম্মেলনের স্থান নির্ধারিত করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হওয়ার কথা রয়েছে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল, প্রধান বক্তা বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসবেক লীগের সহ সভাপতি সুব্রত পুরকায়স্থ। বিশেষ অতিথি হয়ে থাকছেন স্বেচ্ছায় সদ্য অব্যহতি নেয়া মহানগর আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি মো. রবিউল হোসেন, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসবেক লীগের সদস্য নজরুল ইসলাম মুন্সি, নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমিটির সাবেক সভাপতি মো. জুয়েল হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহম্মেদ দুলাল প্রধান, সাবেক সদস্য জেলা সাবেক সদস্য কায়কোবাদ রুবেল, সাবেক সদস্য জামির হোসেন রনি, জেলা ছাত্রলীগ সাবেক সহ-সভাপতি আলী আহসান মো. সজীব। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক লীগের উপমহিলা বিষয়ক সম্পাদক শ্রীমতি ঊর্মী ঢালী, ও সঞ্চালনায় থাকবেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য টিপু সুলতান।