নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জের বন্দরে মাত্র ৫শ টাকার দ্বন্দ্বে খুন হয়েছিলো ডাইং শ্রমিক মিজান সিকদার মিশর (২৯)। গেল ৩ বছর হত্যা মামলাটির বিচার কার্যে ব্যপক বিশ্লেষনের পর আজ রায় দিয়েছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালত। সোমবার ( ০৩ রা অক্টোবর) সকালে এ রায়ে বিচারক মুন্সি মোহাম্মদ মশিয়ার রহমান একজনকে মৃত্যুদন্ড ও দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়াও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তদের আরও ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করেন, অনাদায়ে আরও ১ বছর সাজা প্রদান করেন।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত মিঠু বন্দর উপজেলার উত্তপড়ার নবীগঞ্জ এলাকার দেলোয়ার হোসনের ছেলে। যাবজ্জীবনপ্রাপ্তরা হলেন নোয়াদ্দা এলাকার মঞ্জুর হকের ছেলে মুন্না এবং একই এলাকার বংগার ছেলে শয়ন। রায় ঘোষণার সময় তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের (পরির্দশক) আসাদুজ্জামান জানান, মিজান গাজীপুরে একটি ডাইং ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন। ২০১৯ সালের ২২ জুলাই বড় ভাইয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য নিজ বাড়িতে অবস্থান করছিলেন মিজান। রাতে মশার কয়েল আনতে দোকানে গেলে পূর্বশত্রুতার জেরে মিঠু ও তার লোকজন কাইতাখালি এলাকার মৃত.শফিউদ্দিন সিকদারের ছেলে মিজান সিকদারকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। এঘটনায় নিহতের পরিবার হত্যা মামলা করলে দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে চার্জশিট জমা দিলে আদালত এ রায় ঘোষণা করে। আসামীদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রসিকিউশন শাওন শায়লা জানান, ঘটনার পর দিন নিহতের ভাই সানি বাদী হয়ে মিঠুকে প্রধান আসামি করে মামলা করে। পরে পুলিশ তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। আদালত দীর্ঘ শুনানি ও ১২ জনের সাক্ষ্যপ্রমান শেষে মিঠুকে মৃত্যুদন্ড, মুন্না ও শয়নকে যাবজ্জীবন প্রদান করেন। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তদের আরও ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করেন, অনাদায়ে আরও ১ বছর সাজা প্রদান করেন।
এ রায়ে নিহতের বড় ভাই সাঈদ সিকদার সানী সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, ২০১৯ সালের ২২ জুলাই রাতে দোকানে মশার কয়েল কিনতে গেলে পূর্বশত্রুতার জেরে মিঠু, মুন্না ও শয়নরা তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। মাত্র পাওনা ৫’শ টাকা চাওয়া নিয়ে আমার ভাইকে সন্ত্রাসীরা মেরে ফেলেছে। আমরা এ রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করছি। আমরা এখন এ রায়ের বাস্তাবায়নের অপেক্ষায় থাকবো। তাহলে আর কোন অপরাধী এ ধরণের কাজ করতে সাহস পাবে না। এ রায়ে এলাকাবাসীও খুশি হয়েছেন বলে তিনি জানান।
অপরদিকে, অপরদিকে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মুন্নার মা শাহিদা বেগম বলেন, এ রায়ে তারা সন্তুষ্ট নয়। তারা উচ্চ আদালতে যাবে। আসামীদের উপর অবিচার করা হয়েছে।