কিশোর সজিব খুন : মামলায় ২১ আসামী, গ্রেফতার ১১

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব প্রতিবেদক ) : নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ছুরিকাঘাতে মো. সজিব (১৭) নামে কিশোর নিহতের ঘটনার ২২ ঘন্টার ব্যবধানে ১১ আসামীকে গ্রেফতার করেছে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। ৩১ জুলাই রবিবার রাতে মরদেহ উদ্ধারের পর রাত থেকে ১লা আগস্ট সোমবার দুপুর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলো : সিয়াম (১৮), সাব্বির (১৮), তৈয়্যব (১৮), রাহাত (১৮), লিংকন চন্দ্র দাস (১৮), নাজমুল (১৮) ও হৃদয় ওরফে রাকিব (২০) কে রবিবার রাতে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া প্রধান আসামী বিপ্লব (২০), নাজমুল (২০) ও রাকিব (১৮) কে ১লা আগস্ট সোমবার দুপুরে গ্রেফতার দেখানো হয়। তাদের সকলেই বয়স ১৮ থেকে ২০ বছর।

এদিকে, ১লা আগস্ট সোমবার দুপুরে নিহতের বাবা কামাল হোসেন বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ ও ৭ থেকে ৮ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে ফতুল্লা মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক শেখ রিজাউল হক দিপু বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আধিপত্য ও প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে খুন হয় সজিব। সোমবার দুপুরে নিহতের বাবা বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছে। ইতিমধ্যেই মামলার প্রধান আসামীসহ এজাহার নামীয় ১১ আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মামলার বাদী কামাল হোসেন জানান, রবিবার সন্ধ্যায় বাড়ির সামনের খেলার মাঠ থেকে তৈয়্যব তার ছেলে সজিবকে চাঁনমারী নীট হাউসের সামনে ডেকে নিয়ে যান । সেখানে নিয়ে গিয়ে তার ছেলেকে অভিযুক্ত আসামীরা এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাত করে। এ সময় তার ছেলের চিৎকারে বন্ধু রিফাত এগিয়ে গেলে তাকেও আসামীরা ছুরিকাঘাত করে। পরে সজিব ও রিফাতের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে পালিয়ে যায়। এরপর তাদেরকে পথচারীরা নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সজিবকে মৃত ঘোষণা করে। সেইসঙ্গে রিফাতকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে দেন।

উল্লেখ্য, এরআগে গত ৩১ জুলাই রবিবার রাত ৮ টার দিকে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের পাশে চানঁমারির ঢাকা–নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় মো. সজিব (১৭) নামে এক কিশোর খুন হয়। এসময় রক্তাক্ত অবস্থায় ওই কিশোরকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত সজিব সদর থানা এলাকার চাষাড়া রামবাবুর পুকুড় পাড় ছোট মসজিদ এলাকার কামাল মিয়ার ছেলে। কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তার বন্ধু রিফাত।

প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবী সহকারী সিদ্দিকুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান , ‌আমি আদালত থেকে কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলাম। পথে দেখি পুলিশ সুপার কার্যালয় বরাবর লিংক রোডে কে বা কারা কিশোরে বয়সের এক ছেলেকে ছুরিকাঘাত করে ফেলে রেখেছে। আমি ছেলেটার নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে তাকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ছেলেটির পরনে ফুল প্যান্ট ও ফুলহাতা শার্ট ছিল। তার নাম–পরিচয় বলতে পারছি না।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান জানান, ওই কিশোরের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে তাকে ছুরা দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। যারা ঘটনার সাথে জড়িত তাদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।

add-content

আরও খবর

পঠিত