নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি ) : নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইলস্থ টাইগার মিল অস্থায়ী পশুর হাটে তোলা হয়েছে ৩০ মণ করে ৬০ মণ ওজনের দুটি গরু। গরু দুটির একটির নাম রাজা ও অপরটির নাম বাদশা। হাটে আসা সব ক্রেতা ও বিক্রেতার নজর কাড়ছে রাজা ও বাদশা। ৩০ মণ করে ওজনের রাজা ও বাদশা-এর দাম হাঁকা হচ্ছে ১২ লাখ টাকা করে।
গরুর মালিক গফুর আলী বলেন, দুই বছর সন্তানের মতো করে বাড়িতে রেখে গরু দুটিকে অনেক আদর আর যত্ন করে লালন-পালন করেছি। শখ করে গরু দুটি নাম দিয়েছি রাজা ও বাদশা। খয়েরী রংয়ের টার নাম রাজা ও লাল রংয়েরটার নাম বাদশা। অনেক শান্ত রাজা-বাদশা। তবে দুইটার ওজনই এক। ৩০ মণ করে। গত ৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকালে গরু দুটি হাটে নিয়ে এসেছি। গরু দুইটার দাম ১২ লাখ টাকা চাচ্ছি।
গরু দুটির জন্য এখন পর্যন্ত ক্রেতারা কত টাকা দাম বলেছেন-জানতে চাইলে গফুর আলী বলেন, এখন পর্যন্ত ৭ লাখ টাকা বলেছেন ক্রেতারা। তবে ১০ লাখ টাকা হলে বিক্রি করবেন বলে জানিয়েছেন। বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা।
গরুর মালিক গফুর আলীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, স্ত্রী, ৪ মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে গফুর আলীর সংসার। বড় মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে নওগাঁয়। ঈদের পর ঘটা করে মেয়ের বিয়ে দিতে চান রাজা-বাদশাকে বিক্রি করে। তিনি আরো বলেন, বাছুর কিনে নিজেই বাড়িতে লালন পালন করি। পরে হাটে বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে সারা বছর সংসার চলে।
তাছাড়া সরেজমিনে ৯ আগস্ট শুক্রবার বিকালে গরুর পশুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের পঞ্চাশোর্ধ বাসিন্দা গফুর আলীর চোখে মুখে রাজ্যের স্বপ্ন আর আশার প্রতিচ্ছবি। তার এই আশা আর স্বপ্ন তার লালন পালন করা বিশালাকৃতির রাজা-বাদশাকে ঘিরে। রাজা-বাদশাকে বিক্রি করে ঈদের পর বড় মেয়ের বিয়ে দেবেন। মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়ে আছে। এখন শুধু আনুষ্ঠানিকতা বাকি। গফুর আলী তাই কিঞ্চিত চিন্তিতও বটে। কারণ রাজা-বাদশা (গরু দুটি) বিক্রির উপর নির্ভর করছে অনেক কিছু।
এদিকে রাজা-বাদশাকে দেখতে টাইগার রি-রোলিং মিল হাটে ভিড় করছেন বিভিন্ন বয়সের মানুষ। তাদের বেশ কয়েকজনকে গরুর সঙ্গে সেলফি তুলতেও দেখা গেছে। তারা বলছেন, বিশাল আকারের গরু দুটি অনেকটা হাতির মতো। এটাকে স্মৃতি হিসেবে রাখার জন্য ছবি তুলে রাখছি। কারণ, কোরবানি হাট ছাড়া এত বড় গরু সচরাচর চোখে পড়ে না।
হাটের ইজারাদার মো: শফি বলেন, শাহজাদপুর থেকে আসা গরুর বেপারী গফুর আলীর আনা দুটি বিশাল গরু হাটের শ্রী বৃদ্ধি করেছে। ক্রেতাদেরও দৃষ্টি আকর্ষন করেছে গরু দুটি। আশা করছি গফুর আলী ভাল দাম পাবেন। তার জন্য আমাদের শুভ কামনা রইলো।
এছাড়াও পশুর হাটের পরিবেশ, পরিচ্ছনতা, নিরাপত্তা, যোগাযোগ ব্যবস্থা সব দিক বিবেচনা করে বেপারীরা এই হাটে বিভিন্ন সাইজের ও দামের গরু নিয়ে এসেছে। মহিষ, ছাগল, খাসীও উঠেছে হাটে। ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত কোরবানির পশু বিক্রি হবে বলে জানা যায়।