নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ডেস্ক রিপোর্টার ) : দ্বিতীয় বিয়ের কারণ জানিয়ে ৪ঠা এপ্রিল রবিবার ফেসবুকে পেজে স্ট্যাটাস দিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। এর আগে ৩ই এপ্রিল শনিবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও রয়্যাল রিসোর্ট এ মাওলানা মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করার ঘটনা ঘটে। মামুনুলের দাবি, স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে অমানবিক আচরণ করেছে ও হামলা চালিয়েছে।
বিয়ের কারণ জানিয়ে ফেসবুকে পেজে দেয়া একটি মানবিক বিয়ের গল্প শিরোনামের স্ট্যাটাসটি নারায়ণগঞ্জ বার্তার পাঠকদের জন্য হুবাহু তুলে ধরা হলো :
হাফেজ শহিদুল ইসলাম আমার ঘনিষ্ঠ সহকর্মীদের একজন। সাংগঠনিক কাজে আমার দুই-চার জন সহযোগীর অন্যতম। বেশ পুরোনো আমাদের সম্পর্ক। সম্পর্কের গভীরতা পারিবারিক পরিধি পর্যন্ত। পরিবারসহ একে অপরের বাসায় যাতায়াত আমাদের দীর্ঘদিনের। সেই সূত্রে তার পারিবারিক অভিভাবকত্ব করতাম আমি। পারিবারিকভাবে খুঁটিনাটি বিষয়ে পরামর্শের জন্য তারা আমার দ্বারস্থ হতো। দুই সন্তানের ছোট সংসার নিয়ে চলছিলো তাদের জীবন। একটা পর্যায়ে এসে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে শুরু হয় মনোমালিন্য। মনোমালিন্য থেকে বাদানুবাদ এবং সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু।
আজ থেকে তিন বছর আগের কথা। তখন তাদের সংসার টিকিয়ে রাখার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি আমি। তাদের উভয়ের সঙ্গে কথা বলি। কিন্তু কোনোভাবেই আর সেটি সম্ভব হয়নি। ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় তাদের। ছাড়াছাড়ির পর দ্বিতীয় সংসার শুরু করেন হাফেজ শহীদুল ইসলাম। সেই বিবাহ আমি পড়াই। তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে সুখে শান্তিতে দিনাতিপাত করছেন। সেই ঘরে জন্ম নিয়েছে ফুটফুটে আরেকটি সন্তান। অপরদিকে হাফেজ শহীদ ভাইয়ের স্ত্রী হয়ে যায় অনেকটা অসহায়। এক রকমের কূলকিনারাহীন। রাগের মাথায় সংসার ভেঙে গভীর সংকটে পড়ে যান তিনি। ওই পরিস্থিতিতে তার জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়ে। স্বাভাবিক ভাবেই তিনি আমার শরণাপন্ন হন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে করণীয় বিষয়ে পরামর্শ নেন। সেই দু:সময়ে সহযোগিতা করার মতো আমি ছাড়া আর কেউ ছিলো না তার। ইসলামী দৃষ্টিকোণ এবং অভিভাবকত্বের জায়গা থেকে আমি তার অর্থনৈতিক দায়িত্ব গ্রহণ করি। জীবনের করণীয় বিষয়ে দিক নির্দেশনার জন্য নিয়মিতই আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হয় তাকে। এমতাবস্থায় একজন বেগানা নারীর সঙ্গে এভাবে সম্পর্ক রাখাকে শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে আমার কাছে ঝুঁকিপূর্ণ মনে হয়।
তখন আমি সিদ্ধান্ত নিই, যত দিন তার অভিভাবকত্বের প্রয়োজন হবে আমার, তাকে বেগানা হিসেবে রেখে অভিভাবকত্ব করবো না বরং ইসলামী শরীয়তের আলোকে বৈধ একটা সম্পর্ক তৈরি করে নেবো। বিষয়টি নিয়ে ঘনিষ্ঠজনদের সংগে কথা বলি এবং এই বিষয়ে তাদের জানিয়ে শরীয়তের বিধান অনুযায়ী বিবাহের কালেমা পড়ে বিবাহ করে নিই। দুই বছর যাবত এভাবেই মানবিক ও ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে আমি তার অভিভাবকত্ব করছি এবং একজন অসহায় নারীর দায়িত্ব গ্রহণ করে একটি পুণ্যের কাজ করেছি বলে বিশ্বাস করি। আমি যা বললাম এটা আল্লাহর নামের হাজারবার শপথ করে বলতে পারবো। বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য কুল্লামার শপথও করতে পারি।
বিষয়টি খোলাসা করার পরেও যুবলীগ, আওয়ামী লীগের গুণ্ডারা আমার সঙ্গে যে অমানবিক আচরণ করেছে এবং হামলা করেছে, গায়ে হাত তুলেছে, আমি এর বিচার চাই আল্লাহর কাছে প্রশাসনের কাছে এবং জনগণের কাছে। পুলিশের উপস্থিতিতে তাদের এই হামলা ও আচরণ প্রমাণ করে বর্তমানে বাংলাদেশে মান-সম্মান কিংবা জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে চলাফেরা করা সম্ভব না।
সুত্র : বিভি নিউজ ২৪ ডট কম।