নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( রূপগঞ্জ প্রতিনিধি ) : হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভোলাবো ইউনিয়নের চারিতালুক এলাকার শতাধিক বিঘা ফসলি জমি ও জলাশয়ে বালু ভরাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জমি ক্রয় না করেই কৃষকদের ফসলি জমি আবাসন প্রকল্প পূর্বাচলইটালিয়ান সিটি অবাধে এ কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। প্রতিবাদ করলেই কৃষকরা হামলা ও মামলার শিকার হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ফসলি জমি ও জলাশয়ে বালু ভরাট চলছে। কৃষকরা আতংকিত হয়ে পড়েছে। বহিরাগতদের আনাগোনা বেড়েছে। কোন কোন স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। হামলা ও হামলার ভয়ে কৃষকরা আতংকিত। সন্ত্রাসীদের নিয়োজিত করে কৃষকদের জমি বালু ভরাট করে দখলে নেওয়ার পায়তারা করা হচ্ছে। অপরিকল্পিতভাবে প্রজেক্ট প্ল্যান, পরিবেশের ছাড়পত্র, জেলা প্রশাসকের ছাড়পত্র, ডিজিটাল সার্ভে ও টাউন প্ল্যান ছাড়াই সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আবসন প্রকল্প দুটির কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
২০১৭ সালে চারিতালুক এলাকার বাদশা মিয়া বাদী হয়ে মোচারতালুক মৌজার কৃষি জমি রক্ষার্থে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন। রিট পিটিশন নং ১৪৮৬৪/১৭ । হাইকোর্ট পূর্বাচল ইটালিয়ান সিটির বিরুদ্ধে কৃষি জমি ভরাট না করার জন্য নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের এ নির্দেশ অমান্য করে আবাসন প্রকল্প দুটি জমি ক্রয় না করেই কৃষকদের ফসলি জমিতে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে অবাধে বালু ভরাট করছে। পরে কৃষকদের জমিতে বালু ভরাট ও ভয়ভীতির অভিযোগে রূপগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে বালু ভরাট কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়।
ভুক্তভোগী কৃষকরা জানায়, পূর্বাচল ইটালিয়ান সিটির প্রকল্প পরিচালকআল আমিন ও বশীর আহমেদ স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের দিয়ে কৃষকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে জিম্মি করে জোর পূর্বক তাদের ফসলি জমিতে বালু ভরাট করছে। তাদের ফসলি জমিতে জোর পূর্বক সাইনবোর্ড লাগানো হচ্ছে।
অভিযোগ তদন্তকারী এস আই সেলিম রেজা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে আবাসন প্রকল্প দুটির বালু ভরাট কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আবারো বালু ভরাট কার্যক্রম চালু করা হয়েছে পুলিশের তা জানা নেই। তবে সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি জানান।
ভোলাবো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন টিটু বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে ও জমি ক্রয় না করে ফসলি জমিতে বালু ভরাট কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য তাদেরকে নোটিশ প্রদান করেছি। অপরিকল্পিতভাবে বালু ভরাট করা হলে এখানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে কৃষকরা ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
পূর্বাচল ইটালিয়ানসিটির চেয়ারম্যান ডা. আব্দুল কবির বলেন, আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে আমার প্রকল্পে বালু ভরাট করা হচ্ছে তা আমার জানা নেই। তবে কেউ জমি ক্রয় না করে ও হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে জোর পূর্বক বালু ভরাট করলে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা উচিত।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ নুসরাত জাহান বলেন, কৃষকদের দেওয়া অভিযোগ পেয়েছি। সুষ্ঠু তদন্ত করে শীঘ্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।