স্বজনদের কান্নায় ভারি শীতলক্ষ্যা পাড়, উদ্ধার হলো ৫ লাশ

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে কার্গো জাহাজের ধাক্কায় রাফিত আল হাসান নামে মুন্সিগঞ্জগামী একটি লঞ্চ অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে যাওয়ার ঘটনায় আরো ৪টি নারীর লাশ উদ্ধার করেছেন ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা। রাত ১১টার দিকে এক এক করে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়। তাদের দুইজনের হাতে শাখা ও দুইজন বোরকা পরিহিত ছিল। এতে ধারনা করা হচ্ছে দুই জন সনাতনধর্মালম্বী ও দুই জন মুসলিম নারী। এরআগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আরও এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পর ওই নারীকে সন্ধ্যায় এ ঘটনায় এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। এ ঘটনায় উদ্ধার হয়েছে মোট ৫টি লাশ। বর্তমানে তবে তার পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। এছাড়া এখন পর্যন্ত ২০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। ৪ঠা এপ্রিল রবিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ নৌ পুলিশের পুলিশ সুপার (এসপি) মীনা মাহমুদা তথ্য জানান।

এরআগে ৪ঠা এপ্রিল রবিবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে  শীতলক্ষ্যা নদীর চর সৈয়দপুর এলাকার ব্রিজ সংলগ্ন স্থানে ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যা ৬টার কিছু সময় পরে লঞ্চটি নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সিগঞ্জের দিকে রওনা দেয়। একটি মালবাহী একটি মালবাহী কার্গো জাহাজের ধাক্কায় এটি ডুবে যায় বলে জানা গেছে।

নৌ পুলিশের পুলিশ সুপার (এসপি) মীনা মাহমুদা বলেন, কিছুক্ষণ আগে ডুবুরিরা আরো ৪ জন নারীকে উদ্ধারে করেছে। ৪জনই মৃত। তবে প্রাথমিকভাবে তাদের নামপরিচয় এখনো জানতে পারেনি আমরা। উদ্ধার কার্যক্রম চলছে। ফায়ার সার্ভিসের আট জন ডুবুরিসহ একাধিক ইউনিট কাজ করছে। এরআগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আরও এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পর ওই নারীকে সন্ধ্যায় এ ঘটনায় এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। এ ঘটনায় উদ্ধার হয়েছে মোট ৫টি লাশ।

এর আগে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো.মোস্তাইন বিল্লাহ জানিয়েছেন, লঞ্চটি ৪৬ জন ছিলো। ২০ জন সাঁতার কেটে পার হয়ে উঠতে পেরেছে।

নারায়ণগঞ্জ নৌপুলিশের ইন্সপেক্টর শহিদুল ইসলাম জানান, শীতলক্ষ্যা নদীতে চায়না ব্রিজের নিচে সাবিত আল হাসান নামে একটি লঞ্চ অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে গেছে। ঘটনাস্থলে নৌপুলিশ ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন।

লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি বদিউজ্জামান বাদল সংবাদিকদের জানান, লঞ্চটি সন্ধ্যা ৬টার কিছু সময় পর নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে যায়। পথিমধ্যে ঝড়ের কবলে পড়লে এটি দুর্ঘটনার শিকায় হয় এবং অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে যায়।

একই ঘটনা প্রসঙ্গে মুন্সিগঞ্জ নৌপুলিশের কর্মকর্তা কবির হোসেন খান জানিয়েছেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে যাত্রী নিয়ে নারায়ণগঞ্জ লঞ্চঘাট থেকে মুন্সিগঞ্জ আসছিল লঞ্চটি। মদনগঞ্জের কয়লাঘাট এলাকায় কার্গো জাহাজের ধাক্কা দিলে লঞ্চটি ডুবে যায়। ইতোমধ্যে উদ্ধারকারী জাহাজ ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার কাজ শুরু করেছেন।

এই দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) পরিচালক (নৌ নিরাপত্তা ট্রাফিক) মো. রফিকুল ইসলামকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। উদ্ধার অভিযানে এক সঙ্গে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনী, নৌপুলিশ, কোস্ট গার্ড উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়।

এদিকে লঞ্চ ডুবির খবর পেয়ে যাত্রীদের স্বজনরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। স্বজনদের কান্নায় ভারি শীতলক্ষ্যা পাড়। ওদিকে লঞ্চ ডুবির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো.মোস্তাইন বিল্লাহ, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম, সদর উপজেলার ইউএনও নাহিদা বারিক প্রমুখ।

add-content

আরও খবর

পঠিত