নারায়ণগঞ্জ র্বাতা ২৪ (সোনারগাঁও প্রতিনিধি) :নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও পৌরসভার রাইজদিয়া গ্রামে বুধবার ৩ আগস্ট সন্ধা সাড়ে ৬টার দিকে আব্দুল মতিন (৪৮) নামের এক পান ব্যবসায়ীকে মাদক বিক্রেতা আখ্যা দিয়ে ধাওয়া করে পানিতে ফেলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে থানা পুলিশের এক সদস্য। এসময় এলাকাবাসীও ক্ষুদ্ধ হয়ে আরিফ নামের পুলিশের সেই সদস্যকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করে।
এদিকে নিহতের বড় মেয়ে শিউলি আক্তার জানান, তার বাবা আদমপুর বাজারের পান ব্যবসায়ী। তাছাড়াও তারা বেশ কয়েকটি গরু লালন পালন করেন। বুধবার বিকেলে মা ও বাবা মিলে বাড়ির পাশের একটি খড়রের স্তুপ থেকে গরুর জন্য খড় আনতে যায়। এসময় একটি মোটরসাইকেলে করে সাদা পোশাকে এএসআই ফখরুল ইসলাম ও কনস্টেবল আরিফুর ওই ঘটনাস্থলে গিয়ে আবদুল মতিনের হাতে খড় দেখে তাকে ধাওয়া করেন। তখন আবদুল মতিনও ভয়ে দৌড়ে পাশের একটি পুকুরে পড়ে যায়। ওই সময়ে কনস্টেবল আরিফ নৌকায় করে পুকুরে মাঝে গিয়ে লাঠি দিয়ে মতিনকে পিটিয়ে আহত করে তার কাধের উপর চড়ে পানিতে ডুবিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এ দৃশ্য দেখে আশেপাশের লোকজন পুকুরের চারদিক ঘিরে কনষ্টেবল আরিফুরকে লক্ষ করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এ সময় এএসআই ফখরুল ইসলাম তার কাছে থাকা পিস্তল বের করার চেষ্টা করলে এলাকাবাসী বিষয়টি বুঝতে পেরে তাকেও ধাওয়া করে। তবে এএসআই ফখরুল পালিয়ে গেলেও কনষ্টেবল আরিফকে স্থানীয়রা পানিতে ডুবিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পুলিশ বলছে, নিহত ব্যক্তি আবদুল মতিন (৪৮) মাদক বিক্রেতা। আর নিহত পরিবারের দাবী আবদুল মতিনের পানের দোকান রয়েছে সে কোন মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত না। নিহত আবদুল মতিনের বাবার নাম মোছলেহউদ্দিন। তার বাড়ি সোনারগাঁও পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের রাইজদিয়া গ্রামে।
এ বিষয়ে সোনারগাঁও পৌরসভার সংরক্ষিত নারী (৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ড) কাউন্সিলর জায়েদা আক্তার মনি বলেন, আমি যতটুকু জানি মতিন পানের দোকানদারী করতো। মুরগির ব্যবসা করতো। তার বৌ গরু পালন করে। সে তিনটা মেয়ে বিয়ে দিয়েছে। আমার জানামতে সে খুব ভাল লোক ছিল। কখনও তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ শুনিনি।
সোনারগাঁও থানার ওসি মঞ্জুর কাদের নারায়ণগঞ্জ র্বাতা ২৪ এর প্রতিবেদককে জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় এএসআই ফখরুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম সোনারগাঁও পৌরসভার রাইজদিয়া এলাকাতে আবদুল মতিন নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে ধরতে অভিযানে যায়। ঐ সময়ে আবদুল মতিন দৌড়ে পালাতে গিয়ে একটি পুকুরে পড়ে যায়। তাকে ধরতে পুলিশের কনস্টেবল আরিফুর রহমানও পুকুরে ঝাপ দেয়। এতে পুকুরে ডুবে আবদুল মতিনের মৃত্যু ঘটে। পরে আরিফুর রহমান তীরে উঠার সময়ে এলাকার লোকজন ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এছাড়া তাকে পিটুনীও দেয়। গণপিটুনি খেয়ে পুলিশের কনস্টেবল আরিফুর মারা যায়।
এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার ফোরকান শিকদার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।