সিদ্ধিরগঞ্জে মাদরাসার ছাত্র হত্যার অভিযোগে শিক্ষকসহ গ্রেফতার ৭

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে এক ছাত্রকে হত্যার অভিযোগে রসুলবাগ মাঝিপাড়া রওজাতুল উলম কওমী মাদরাসার ৩ শিক্ষক ও ৪ ছাত্রসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ১১ই মার্চ বৃহস্পতিবার রাতে ওই মাদরাসা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। নিহত মাদরাসা ছাত্র ছাব্বির আহম্মেদ (১৪) নরায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানার বরপা এলাকার মো: জামাল হোসেনের ছেলে। তিনি রসুলবাগ মাঝিপাড়া রওজাতুল উলম মাদরাসার হিফজ বিভাগের আবাসিক ছাত্র ছিলেন।

১২ই মার্চ শুক্রবার নিহতের বাবা একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর দুপুরে ওই ৭ জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। ৩ শিক্ষককে ৭ দিন করে রিমান্ড আবেদন করা হলে রিমান্ড শুনানির জন্য রবিবার দিন ধার্য করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত। অপর দিকে ৪ শিক্ষার্থীকে কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

গ্রেফতার হওয়া শিক্ষক ও ছাত্ররাও রসুলবাগ মাঝিপাড়া রওজাতুল উলম মাদরাসার। গ্রেফতারকৃত শিক্ষকরা হলেন : চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ থানার মধুপুর এলাকার নূরুল ইসলাম মিয়াজির ছেলে শামীম, ময়মনসিংহের ফুলপুর থানার ইমাদপুর এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে মাহমুদুল হাসান ও ঢাকার গেন্ডারিয়া থানার শাখারিনগর এলাকার মোজাম্মেল হকের ছেলে আবু তালহা।

ছাত্ররা হলেন : নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার উত্তর লক্ষণখোলা এলাকার আবুল কালামের ছেলে আবু বক্কর, ময়মনসিংহের পাগলা থানার কাজা গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে শওকত হোসেন সুমন, একই জেলার ফুলপুর থানার ইমাদপুর গ্রামের মৃত আলাউদ্দিনের ছেলে জুবায়ের আহমেদ ও চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ থানার ভাটিরগাঁও গ্রামের মৃত তমসির মিয়ার ছেলে আব্দুল আজিজ।

মামলার বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, সাব্বির ওই মাদরাসার হিফজ বিভাগের আবাসিক ছাত্র ছিলেন। গত ১০ই মার্চ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শিক্ষক যুবায়ের মোবাইলে ফোন দিয়ে জামাল হোসেনকে জানান, ছাদে ওঠার সিঁড়ি সংলগ্ন রডের সাথে গলায় গামছা পেঁচিয়ে তার ছেলে সাব্বির আত্মহত্যা করেছেন।

খবর পেয়ে নিহতের বাবা মাদাসায় গিয়ে লাশ বাড়িতে নিয়ে দাফনের প্রস্তুতি নেন। লাশের গোসল করানোর সময় ঠোঁটে, কপালে ও মাথার ডান দিকে আঘাতের চিহ্নসহ গালায় রশির দাগ দেখা যায়। তখন সন্দেহ হয় যে হত্যাকে আত্মহত্যা বলা হয়েছে। বিষয়টি মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে জানালে একজন হুজুর (শিক্ষক) নিহতের বাবার মোবাইলে ফোন দিয়ে ছেলের মৃত্যুর বিষয়টি পুলিশকে না জানানোর জন্য বিভিন্ন ভাবে পরামর্শ দেন। এতে নিহতের অভিভাবক ও পরিবারের সদস্যরা নিশ্চিত হন যে সাব্বিরকে হত্যা করা হয়েছে।

তাদের ধারণা, মাদরাসার শিক্ষক বা শিক্ষার্থীদের আঘাতে নিহত হওয়ার পর এটি আত্মহত্যা বলে চালানোর জন্য লাশ গামছা দিয়ে ঝুঁলিয়ে রাখে মাদারাসা কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি পরে নিহতের বাবা জামাল হোসেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশকে জানায়। রাতে পুলিশ ওই ৭জনকে আটক করে ও লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নরায়ণগঞ্জ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মশিউর রহমান জানান, গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এবং লাশের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ ব্যাপারে আইনি প্রক্রিয়া চলছে।

add-content

আরও খবর

পঠিত