নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় গত মঙ্গলবার রাতে আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানসহ ১২৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জের একটি বাণিজ্যিক ভবনের তত্ত্বাবধায়ক (কেয়ারটেকার) নিহত মনির হোসেনের ছোটভাই সাখাওয়াত হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন বলে জানান থানার ওসি আবু বক্কর সিদ্দিক।
মামলায় শামীম ওসমানের ছেলে ইমতিনান ওসমান অয়ন, ভাতিজা আজমেরী ওসমান, আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য আনিসুর রহমান দিপু, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া, নাসিক কাউন্সিলর শাহজালাল বাদল, মতিউর রহমানসহ শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ অনুসারীদের আসামি করা হয়েছে।
মামলার নথিসূত্রে জানা যায়, ৫৬ বছর বয়সী মনির হোসেন সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদী নতুন মহল্লায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলায়। গত ২০ জুলাই বিকেলে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন চলাকালীন ছাত্র-জনতার উপর আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে নির্বিচারে গুলি করে শামীম ওসমান ও তার সহযোগীরা। ওই সময় গুলিবিদ্ধ হন মনির।
গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে প্রথমে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরদিন ২১ জুলাই চিকিৎসকের পরামর্শে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে অস্ত্রোপচার করে তার শরীর থেকে গুলি বের করা হয়। ওই হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় পরদিন বিকেলে মারা যান মনির।
বেসরকারি ওই হাসপাতালে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা বিল হয়। গ্রামের বাড়ির জমি ও স্বর্ণালঙ্কার বন্ধক রেখে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করেন নিহতের পরিবার। পরে মরদেহ নারায়ণগঞ্জে নিয়ে আসলে আওয়ামী লীগ নেতা মুজিবুর ও ইয়াছিন দ্রুত মরদেহ গ্রামে নিয়ে গিয়ে দাফন করতে চাপ দেন। পরে কুমিল্লায় গ্রামের বাড়িতে মনিরের দাফন হয়, বলে মামলায় উল্লেখ করেছেন তার ছোটভাই। এই মামলাতেও এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হননি বলে জানান ওসি।
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে হতাহতের ঘটনায় এখন পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের চারটি থানায় পাঁচটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। চারটি মামলারই প্রধান আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।