সিটি করপোরেশনের চেয়ারে বসবে এমপি সেলিম ওসমান !

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টার ) : নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলরবৃন্দ, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানবৃন্দ সহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ একাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে পুনরায় প্রার্থী ঘোষনা করেছেন। তবে সেলিম ওসমান নিজের প্রার্থীতা ঘোষণার দেওয়ার জন্য আগামী সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত সময় চেয়েছেন। ওই সময়ের পূর্বে তিনি সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সহ সবার সাথে আলোচনায় বসতে চান। এ জন্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলরদের মাধ্যমে মেয়র আইভীকে আলোচনায় বসার আহবান রেখেছেন। যদি তিনি বসতে রাজি না হয় তাহলে নারায়ণগঞ্জের সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ থেকে মুক্তি এবং নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নে স্বার্থে আগামী সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৫ থেকে অন্য কেউ এমপি হবে। আমি সিটি কর্পোরেশনের চেয়ারে বসবো। গতকাল নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর আয়োজনে একেএম সেলিম ওসমানের সংসদ সদস্য হওয়ার চার বছর পূর্তি উপলক্ষে গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্যকালে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তিনি বলেন, আমি সিটি করপোরেশনের সাথে কথা বলতে চাই। এতগুলি কাউন্সিলর এসেছেন আপনাদের দায়িত্ব, যদি উনি না বসেন তাহলে এমনও হতে পারে। আমি অপেক্ষা করবো অন্য সংসদ সদস্য হবে, আল্লাহ যদি আমাকে বাচাঁয় রাখে তাহলে সিটি করপোরেশনের চেয়ারে বসবো। আমাদের নাারায়নগঞ্জের মানুষ কিন্তু ভুক্তভোগী, মশার কামড় খায়, ডায়রিয়ায় ভোগে, রাস্তা দিয়ে হাটতে পারেনা ময়লার স্তুপ।

ব্যবসায়ী সংগঠনটির সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজলের সভাপতিত্বে এসময়  উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা, ক্রীড়া সংগঠক কুতুবউদ্দিন আকসির, জেলা বিএমএ সভাপতি ডা. শাহনেওয়াজ, জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের, বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান, সেক্রেটারী হাজী ইয়াছিন, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি চন্দন শীল, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, মহাননগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জুয়েল হোসেন, কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু, নাজমুল আলম সজল, সাইফুউদ্দিন আহমেদ দুলাল, আবদুল করিম বাবু, আফজাল হোসেন, হান্নান সরকার, জমশের আলী ঝন্টু, আরিফুল হাসান, সুলতানউদ্দিন নান্নু, ব্যবসায়ী এম সোলায়মান, শিরিন আক্তার, কামরুল হাসান মুন্না, শারমিন হাবিব বিন্নী, আলী হোসেন আলা সহ সদর ও বন্দর উপজেলা জনপ্রতিনিধি ও  প্রমুখ।

তিনি আরও বলেন, ছোট বোন তোমার বাবা আমার অত্যন্ত প্রিয় মানুষ। ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। তুমি চেয়ারে বসে থাকো, তুমি খালি আমাকে অনুমতি দাও। রাস্তা কিভাবে পরিস্কার করতে হয়, যানজট কিভাবে ছুটাতে হয়। এটা করোনা কোন জনপ্রতিনিধি কিছুই করোনা। আমি ভবিষ্যতে জনপ্রতিনিধি হবো। তার জন্য আমি পাঞ্জাবী টেনে ধওে রাখবো। উন্নয়ন করতে দিবনা।

আরে আমার হায়াত কতক্ষন আছে। কোথায় গেলো আমার ভাই, কোথায় গেলো আমার চুনকা চাচা, কোথায় আমার বাবা সামসুজ্জোহা, জালাল হাজি সাহেব। কোথায় নারায়ণগঞ্জে বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও আওয়ামীলীগ। রক্তের সাথে যাদের আওয়ামীলীগ ও বঙ্গবন্ধু। হৃদয় বলে শেখ হাসিনা। আমরা দায়িত্ব পালন করি, নাসিম ওসমান দায়িত্ব পালন করেছে।

নারায়ণগঞ্জ শহরের মর্গ্যান স্কুলের ভবন ভাঙা প্রসঙ্গে সেলিম ওসমান বলেন, মর্গ্যান স্কুলের একটি দেয়াল ভেঙে দেওয়া হয়েছে। রাতের আঁধারে কেন ভেঙে দেওয়া হলো সেটা বোধগম্য না। এ স্কুল নিয়েও রাজনীতি হচ্ছে। আগামীতে মর্গ্যান স্কুলের উন্নয়ন সবার আগে হবে। অনেকেই আমাকে বলেন আপোষ করতে। কার সাথে আপোষ করবো, যাঁরা রাতের আঁধারে মর্গ্যান স্কুলের দেয়াল ভেঙে দেয় তাঁদের সাথে? তাঁদের দাবি জায়গাটি সিটি করপোরেশনের। যদি তাই হয় তাহলে আলোচনা করতে পারতো। দেয়াল ভাঙতে হলে সংসদ সদস্যকে বলতে হতো। তা না করে রাতের আঁধারে দেয়াল ভেঙে দিয়ে যাঁরা তাঁদের সাথে কি করে আপোষ করবো?

শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত প্রসঙ্গে সাংসদ সেলিম ওসমান আক্ষেপ করে বলেন, ফাঁসির কাষ্ঠে যেতেও আমি রাজি আছি, দরকার হলে ফাঁসি দিন তারপরও তাঁদের বিরুদ্ধে লড়াই করবো যাঁরা আল্লাহর নামে কটাক্ষ করে। তাঁদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না। মুক্তিযুদ্ধের সময় শহীদ হইনি। দরকার হলে আল্লাহর নামে কটাক্ষকারীদের বিরুদ্ধে লড়াই করে শহীদ হবো। এজন্য আমাকে ফাঁসি দিতে চাইলে দিন।

এছাড়াও নিজেকে ব্যর্থ হিসেবে উল্লেখ করে সাংসদ সেলিম ওসমান বলেন, একটি নগরকে সাজাতে হলে সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসনকে নিয়ে কাজ করতে হয়। সেদিক থেকে আমি ব্যর্থ। আমার একটাই ব্যর্থতা আমার ছোট বোনকে টানতে পারিনি। কারা আমাদের মধ্যে ঝগড়া লাগায়, কারা আমাদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করছে।

add-content

আরও খবর

পঠিত