নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টার ) : বিএপির নেদৃত্বাধীণ জোটের শরীক দল এলডিপি এর নারায়ণগঞ্জ সভাপতি কামাল প্রধানের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে প্রবাসীর জমি বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও সাংবাদিক ও এলডিপি নেতা পরিচয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রতারণায় লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ারও পাওয়া গেছে বিস্তর অভিযোগ।
জানা গেছে, বিভিন্ন সময় এসব ঘটনায় রয়েছে একাধিক মামলা। কিন্তু একাধিক পত্রিকার সম্পাদক ও এলডিপির পরিচয়কে ঢাল করে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে দিব্বি চালিয়ে যাচ্ছে তার প্রতারণার কার্যক্রম। শাস্তি প্রাপ্য হলেও সে যেন আইনের উর্ধ্বে! তাই সে অধরা বলে দাবী করেন ভুক্তভোগীরা।
সোমবার ( ৩ নভেম্বর ) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী প্রবাসী আনিসুর রহমান। এসময় আবেগাপ্লুত হয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, সৌদিতে থাকাকালীন কষ্টে উপার্জিত অর্থ দিয়ে বন্দর উপজেলার কুশিয়ারা এলাকায় তিনি জমি ক্রয় করেছিলেন। গত ২০১৭ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৭ সালের ২৯ জুলাই ছুটিতে এসে তিনটি দলিল মূলে ১০,৪ এবং ২শতাংশের জমিটি বুঝে নেন। এ বিষয়টি নিয়ে বর্তমান কাউন্সিলর শফিউদ্দিন প্রধান সমাধানের আশ্বাসে উভয় পক্ষকে নিয়ে একটি বৈঠক কিরেছিল। তখন কামাল প্রধান উল্লেখিত জায়গাটি বিক্রি করেছে বলেও স্কীকার করেছিলেন। কিন্তু এখন শফিউদ্দিন প্রধাণের কাছে গেলে তিনিও এতে র্ব্যথ বলে ভুক্তভোগীদের সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।
তিনি আরো জানায়, পরে সৌদিতে কর্মস্থলে চলে গেলে ২০১০ সালে ডিসেম্বরেপরিবারের কাছে জানতে পারে তার সাক্ষর জালিয়াতী করে পাউয়ার অব অ্যাটর্নির মাধ্যমে কামাল প্রধান আক্তারুজ্জামান নামের অপর এক ব্যক্তির কাছে জায়গাটি বিক্রি করে দিয়েছে। পরে তার ছোটবোনকে দিয়ে জমি সংত্রান্ত মামলা করলেও নানা হুমকী ও ধমকীতে তারা এখন ভীতসন্ত্রস্ত। বাধ্য হয়েই ২০১০ সালের ১৫ ডিসেম্বর দেশে চলে আসে। সম্প্রতি পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দিলে গোয়েন্দা সংস্থ্যা ডিবি পুলিশ তৎপরতা চালালে পত্রিকায় অপপ্রচার চালাচ্ছে ও মামলা তুলে নিতে চাপ দিচ্ছে কামাল প্রধান।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হন কামাল প্রধানের কাছে প্রতারণার শিকার হওয়া আরো দুইজন ব্যক্তি। এদের মধ্যে বন্দর উপজেলায় আইয়ুব আলী নামে ভুক্তভোগীর কাছ থেকেও জায়গা বিক্রি করে অনত্রে বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া যায়। এছাড়াও মনির নামে অপর ব্যক্তি জানায় তার কাছ থেকেও তিন লক্ষ বিশ হাজার টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে কামাল প্রধান।
সংবাদ সম্মেলনে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, ভুক্তভোগী আনিসুর রহমানের ছোট বোন মামলার বাদি শান্তি, বড় ভাইয়ের স্ত্রী শাহীনুর বেগম, ভাতিজা মো. হৃদয় ও জুয়েল।
প্রসঙ্গত, মো. কামাল প্রধান গত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হয়েছিলেন এবং বর্তমানে এলডিপির নারায়ণগঞ্জ সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জে তার মালিকানায় দুইটি প্রিন্ট পত্রিকা প্রকাশ হচ্ছে ।
এদিকে সম্প্রতি ওই কামাল প্রধান নিজেকে তিনটি পত্রিকার প্রকাশক উল্লেখ করে গণমাধ্যমে প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে দাবি করেছেন, জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের এসআই আলমগীর তাকে ডিবি কার্যালয়ে জোরপূর্বক ডেকে নিয়ে হুমকি ধামকি প্রদান করেছেন!
এ বিষয়ে জানতে কামাল প্রধানের মুঠোফোনে ব্যবহৃত নাম্বারে একাধিকবার কল দেয়া হলেও সংযোগ স্থাপন না হওয়ায় কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে, ডিবি পুলিশর এসআই আলমগীর এ ব্যাপারটি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, এসপি বরাবর আনিসুর রহমান নামক এক ব্যক্তি একটি অভিযোগ দেন। সেটির তদন্ত করতে দায়িত্ব দেওয়া হয় আমাকে। কিন্তু কামাল প্রধান কে, সেটি চিনতে পারছিলাম না। এর মধ্যে কোর্ট এলাকার একটি ক্যান্টিনে বাদি আনিসুর দেখিয়ে দেন উনিই কামাল প্রধান। তখন তাকে ঘটনাটা বলি এবং উভয় পক্ষকে বসে এর একটা সমাধান করার জন্য বলি। পরে তিনি নিজে সময় দিয়েছিলেন আসবেন বলে। কিন্তু তিনি না এসে পরের দিন পত্রিকাতে একটি সংবাদ প্রকাশ করান যার সাথে বাস্তবতার কোনো মিল নেই।