নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রির্পোটার ) : নারায়ণগঞ্জে দিনে দুপুরে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে সাংবাদিকের স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে র্দুবৃত্তরা। আহত ক্যামেলিয়া আক্তার নাসরিন (৩৮), নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আমার দেশের স্টাফ রিপোর্টার আবু সাউদ মাসুদের স্ত্রী। বুধবার ২১ সেপ্টেম্বর বিকেলে নগরীর জামতলা ধোপাপট্টি এলাকার নিজ বাড়িতে হামলার শিকার হন নাসরিন। ঘটনার সময় তার স্বামী-সন্তান কেউ বাসায় ছিলেন না। গুরুতর আহতবস্থায় নাসরিনকে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ নূর মহল বলেন, আহতের মাথার বাম পাশ, বাম হাত এবং পিঠে ৪টি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এরমধ্যে মাথার আঘাতটি গুরুতর। তার শরীরে মোট ৪০টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
ঘটনার খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মঈনুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন, সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার শরফুদ্দিন, সদর মডেল থানার ওসি আসাদুজ্জামান খান, ফতুল্লা মডেল থানার ওসি কামাল উদ্দিনসহ পুলিশের কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যম কর্মীরা হাসপাতালে ছুটে যান।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নাসরিন বলেন, স্বামী ও এক ছেলে সন্তানসহ তিনি ৮৫/৩ দক্ষিণ জামতলায় নিজ বাড়িতে থাকেন। গতকাল দুপুর আড়াইটার দিকে তিনি জোহরের নামাজ পড়ছিলেন। ৫ বছর বয়সী ছেলে নাইয়াব ই নূর ওই সময় পাশের বাসায় খেলতে যায়। নামাজরত অবস্থায় বাসার দরজা নক করলে তিনি দরজা খুলে দেন। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে তাকে ধাক্কা দিয়ে এক নারী ও ৩ পুরুষ ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে। এবং কিছু বুঝে উঠার আগেই তাকে ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে। অজ্ঞাত পরিচয় ওই নারী তার গলায় ছুরি ধরে রাখেন। ২ পুরুষ তাকে মাথা, হাত ও পিঠে ছুরিকাঘাত করেন। এরপর ৭ দিনের মধ্যে বাড়ি ছেড়ে দেবার হুমকি দিয়ে তারা বাইরে থেকে দরজার ছিটকিনি লাগিয়ে চলে যায়। তারা চলে যাবার পর তিনি ঘরের জানালা দিয়ে তার বাড়ির ভাড়াটেদের ডেকে ঘটনা জানালে তারা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
নাসরিন আরো জানান, গত কয়েক দিন আগে হামলাকারী এই চারজন বাসায় এসে তাকে ৭ দিনের মধ্যে বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি দিয়ে গিয়েছিল। বিষয়টি তিনি স্বামী মাসুদকে জানালেও তিনি তা আমলে নেননি।
এ ব্যাপারে আবু সাউদ মাসুদ বলেন, তিনি এ ঘটনার নেপথ্যে ৩টি বিষয়কে সন্দেহ করছেন। প্রথমত: জামতলা ধোপা পট্টি এলাকায় যারা মাদক ব্যবসা করতো তাদের তিনি ও তার স্ত্রী বাধা দিতেন এবং মাদক ব্যবসায়িদের কয়েকজনকে ধরিয়েও দিয়েছেন পুলিশে। দ্বিতীয়ত: সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে বর্তমান কমিটি তার সদস্যপদ খারিজ করে দেয়। তিনি আদালতে মামলা করে কমিটির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রায় পান। একই ঘটনায় আরেকটি মামলার রায়ের জন্য অপেক্ষমান। প্রেস ক্লাবের যে গ্রুপটির সঙ্গে তার বিরোধ তারা তাকে ভয় দেখাতে এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। তৃতীয়ত: তার প্রথমে পক্ষের স্ত্রী লিপি ও তার পরিবার এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। বণিবনা না হওয়ায় ৭ বছর আগে মাসুদ তার প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেন। পরে নাসরিনকে বিয়ে করেন। আগের সংসারে তার ২ ছেলে সন্তান রয়েছে। বর্তমান সংসারে এক সন্তান আছে।
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলেন, প্রাথমিক ভাবে ঘটনাটি সম্পত্তিগত বিরোধ বলে মনে হচ্ছে না। তবে যারাই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের অকি শিঘ্রই আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।