নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব প্রতিবেদক ) : পদের জন্য রাজনীতি করেন না জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেন, আমি ও আমার সমর্থকরা একমাত্র শেখ হাসিনার কর্মী থাকতেই পছন্দ করি। যারা এবার নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আর আওয়ামী লীগ করেছেন তারা যেন আগামীতে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে অন্তত রাজপথে আমাদের সঙ্গে থাকেন। আর আ মাদের কোনো কমিটিতে পদ লাগবে না। কর্মী হিসেবে রাইখেন। ২৯শে জানুয়ারি শনিবার বিকালে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের পাশে সদর উপজেলার ফতুল্লায় নম পার্ক প্রাঙ্গণে আয়োজিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে এক কর্মী সভায় তিনি এ কথা বলেন।
শামীম ওসমান বলেন, খেলা হবে। এবার আমরাও খেলবো। এবারের খেলা হবে কাবাডির মতো। লাফ দিয়ে প্রতিপক্ষের মাথায় উঠে চেপে বসবো। আমাদের ওপর আঘাত আসতে পারে। কিন্তু আমাদের রুখতে পারবে না কেউ। কারণ আমাদের সেনাপতি হলেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। আমরা তার সৈনিক। শেখ হাসিনার সৈনিকরা কখনো হারতে পারে না।
গত ২৭ জানুয়ারি সংসদ অধিবেশন চলাকালে শামীম ওসমানের মাথায় হাত বুলিয়ে দোয়া করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় ওসমান পরিবারের সদস্যদের স্মরণ ও সিটি নির্বাচনের জন্য শামীম ওসমানের প্রশংসাও করেন প্রধানমন্ত্রী। এসব কথা কর্মিসভার বক্তব্যে তুলে ধরেন শামীম ওসমান।
এমপি শামীম ওসমান বলেন, সেদিন সংসদের সেই ঘটনার পর আমার মনে আর কোনো কষ্ট নেই। তাই এবার নিজেদের ঝালাই দিতে চাচ্ছি। আমরাও মাঠে নামতে চাচ্ছি। আগামীতে দলের ও নেত্রীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হলে আর শেখ হাসিনা ডাক দিলে মৌমাছির মতো আমাদের লাখ লাখ মানুষকে নিয়ে ঢাকা ছুটে যেতে হবে। এবারও আমরা খেলবো। এবার খেলা হবে কাবাডির মতো। দেখি প্রতিপক্ষ কারা থাকে। শেষ মেশ আমরাই খেলায় জিতবো।
নির্বাচন প্রসঙ্গে শামীম ওসমান বলেন, সিটি নির্বাচনে আমি কোথাও ছিলাম না। একজন এমপি হিসেবে সংবাদ সম্মেলন করার দরকার ছিল করেছি। কিন্তু এরপরও আমাকে নিয়ে কত কথা। আমি নাকি তৈমূর সাহেবকে দাঁড় করিয়েছি। কিন্তু আমার দল কিংবা দলের কোনো নেতা আমাকে বলেনি তৈমূর সাহেবকে দাঁড় করাতে। এরপরও আমার বিরুদ্ধে নানা কথা বলা হয়েছে, এখনো হচ্ছে। ২০১১ সালে কি করেছি বলবো না, ২০১৬ সালে কি করেছি বলবো না, এবার কি করেছি সেটাও বলবো না। বললে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কিন্তু আমাকে আঘাত করে কথা বলা হয়েছে। আমাকে পছন্দ করেন এমন নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হয়েছে। তাদের মনে কষ্ট বেদনা আছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহিদ মো: বাদল, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলী, মহানগর আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি চন্দন শীল, সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম, ফতুল্লা থানা আওয়ামলীগের সভাপতি সাইফ উল্লাহ বাদল, সাধারণ সম্পাদক শওকত হোসেনসহ আওয়ামীলীগ ও সহযোগি সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।
নারায়ণগঞ্জের মেধাবী ছাত্র ত্বকী হত্যা নিয়ে সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেন, আর একটা দাবি জানাতে চাই সাংবাদিক ভাইয়েরা আপনাদের মাধ্যমে। কিছু দিন পর থেকে শুরু হবে আবার দশ জন দাড়াবে তিনজন শুনবে, দশ জন বক্তা আর তিনজন শ্রোতা। গত পাঁচ সাত বছর ধরেই চলতেছে ত্বকি হত্যার বিচার চাই। আজকে আমি সরকারকে জানাতে চাই, স্ব-রাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানাতে চাই, আমি দেশের আইন বিভাগকে বলতে চাই এই ত্বকী হত্যা নিয়ে কেউ কেউ আমাকে আর আমার পারবারের দিকে আঙ্গুল দেখাতে চান। আমি বলতে চাই অবিলম্বে এর বিচার করা হোক। প্রয়োজনে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি করে বিচার করা হোক। আমি দাবি তুলছি এই হত্যার বিচার হওয়ার জন্য। আমি জানি নারায়ণগঞ্জে এই কথা বলে সস্তা জনপ্রিয়তা নিতে চান। তাই আজকে দাবি করছি এই হত্যার বিচার করা হোক। পাশাপাশি শহরের দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই। আমরা নারায়ণগঞ্জে কারও পায়ে ভর দিয়ে রাজনীতি করি না। আমাদের নেতা একজনই শেখ হাসিনা। বাকি আর কাউকে নেতা হিসেবে গোনায় ধরি না। হুমায়ুন রবিউলকে সরিয়ে দিতে পারে। কিন্তু শেখ হাসিনার কর্মী হওয়া থেকে কেউ সরিয়ে দিতে পারবে না। যাদের অসম্মান করা হয়েছে লোকজন কড়তালি দিয়ে সম্মান প্রদর্শন করবে তাদের।