নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( রূপগঞ্জ প্রতিনিধি ) : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে নবির হোসেন (৩৫) নামে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর গলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া পূর্ণবাসন কেন্দ্রের ৬ নম্বর ঘাট থেকে নবির হোসেনের লাশ উদ্ধার করা হয়। নবীর হোসেন উপজেলা হাটাব আতলাশপুর এলাকার আব্দুল্লাহ মিয়ার ছেলে।
রূপগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফরিদ আহাম্মেদ জানান, শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে ৬ নম্বর ঘাটের শীতলক্ষ্যা নদীতে এক ব্যক্তির গলিত লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। খবর পেয়ে নবির হোসেনের মা হিরু বানু ও ভাবি রুজিনা বেগম লাশ সনাক্ত করেন। লাশ নারায়ণগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে, এক সপ্তাহ আগেই নবির হোসেনকে হত্যার পর শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেয়া হয়। তবে ময়না তদন্তের প্রতিবেদন আসলে প্রকৃত ঘটনা বলা যাবে।
নবির হোসেনের ভাই জাকারিয়া জানান, গত ২০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে নিজ বাড়ি হাটাব আতলাশপুর থেকে কাঞ্চন যাওয়ার কথা বলে একই এলাকার সুকুমারের ছেলে উত্তমের সঙ্গে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর বাড়ি ফিরেনি নবীর হোসেন। আত্মীয়স্বজনসহ বিভিন্ন স্থানে খোজাখুজির পরও তাকে পাওয়া যায়নি। নিখোঁজের ২ দিন পর জাকারিয়া বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেন। সাধারন ডায়েরী করার পর এক দুর্বৃত্ত নিজেকে মানিকগঞ্জের পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) পরিচয় দিয়ে জানায়, নবির হোসেন জখম অবস্থায় হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। বিকাশের মাধ্যমে চিকিৎসা বাবদ কয়েক হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। মানিকগঞ্জ যাওয়ার পর ওই প্রতারকের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এসব বিষয়ে রূপগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে বার বার অভিযোগ করলেও কোন ফলাফল পাওয়া যায়নি।
নবির হোসেনের মা হিরু বাবু, ভাবি রুজিনা, ভাই জাকারিয়াসহ পরিবারের অভিযোগ, নবির হোসেন একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী। একই বাড়ির সিঙ্গাপুর প্রবাসী কবির হোসেনের সঙ্গে নবির হোসেনের বাড়ির সীমানা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিলো। গত এক বছর আগে কবির হোসেনসহ তার লোকজন নবির হোসেনসহ পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা চালিয়ে মারধর করে। ওই ঘটনায় প্রতিবাদ করেছিলেন নবির হোসেন এবং হামলাকারীদের বিরুদ্ধে রূপগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলা দায়েরের পর (একটি মাথা কেটে নেবে বলে) হুমকি দিয়ে বিদেশে চলে যায় কবির হোসেন। বিদেশ থেকে আসার তিন দিন পরই নবির হোসেনকে অপহরণ করা হয়। এছাড়া বাড়ির জমি জবরদখলের করতে নানা ভাবে পায়তারা করে আসছিলো। বিভিন্ন সময় নানা ভাবে হুমকি-ধামকিও দিতো। কবির হোসেন প্রভাবশালী হওয়ায় পরিবারের কেউ প্রতিবাদ করার সাহস টুকুও পায়নি। নবির হোসেনকে প্রতিপক্ষের লোকজন অপহরণের পর পরিকল্পিত ভাবে হত্যার পর শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেয়া হয় বলে তারা দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, হত্যার ঘটনা রহস্য উদঘাটন করা হচ্ছে। অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।