নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব প্রতিনিধি ) : নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর কয়লাঘাট এলাকায় এসকেএল ৩ নামে কার্গো জাহাজের ধাক্কায় এমভি সাবিত আল হাসান লঞ্চ ডুবিতে ৩৪ জনের মৃত্যুর ঘটনায় তিনজনকে অভিযুক্ত করে এবং ১১ জনকে অব্যাহতি দিয়ে দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন আদালত। ২৬শে এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুরুন্নাহার ইয়াসমিনের আদালত শুনানি শেষে অভিযোগপত্র গ্রহণ করে মামলাটি বিচারিক আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
অভিযুক্ত আসামিরা হলেন : এসকেএল ৩ কার্গো জাহাজের মাস্টার ওহিদুজ্জামান (৫০), সুকানি আনোয়ার মল্লিক (৪০) ও ইঞ্জিন চালক মো. মজনু মোল্লা (৩৮)।
সেই সঙ্গে অব্যাহতি প্রাপ্তরা হলেন : কার্গোর গ্রিজার হৃদয় হাওলাদার ও ফারহান মোল্লা, সুকানি নাজমুল মোল্লা, লস্কর রাজিবুল ইসলাম, মো. আবদুল্লাহ, নুর ইসলাম, সাকিব সরদার, মো. আফসার, সাগর হোসেন, আলিফ শেখ ও বাবুর্চি আবুল বাসার।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, বাদীর কোনো আপত্তি না থাকায় আলোচিত এ মামলার ১৪ আসামীর মধ্যে তিনজনকে অভিযুক্ত করে এবং ১১ জনকে অব্যাহতি দিয়ে দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন আদালত। তার আগে গত ২৩শে মার্চ অভিযোগপত্র থেকে ১১ আসামীদের নাম বাদ দেওয়ার বিষয়ে মতামত জানতে চেয়ে মামলার বাদীকে তলব করেছিলেন আদালত।
বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক (নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক) বাবু লাল বৈদ্য বলেন, আমি মামলার এজাহারে কারো নাম উল্লেখ করিনি। মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এই আসামীদের নাম উঠে এসেছে। এখন আদালত যাদের বিচার করা প্রয়োজন মনে করবেন তাদের বিচার করবেন। এতে আমার কোনো আপত্তি নেই।
লঞ্চ মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌযাত্রী পরিবহন সংস্থার জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি বদিউজ্জামান বাদল বলেন, শীতলক্ষ্যায় লঞ্চ ডুবির ঘটনায় তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। আমরা এমন ঘটনার আর পুনরাবৃত্তি চাই না। আমরা এই মামলাটির নিরপেক্ষ তদন্ত চাই। নিহতের পরিবার ও স্বজনরা বিচার চায়।
গত ২০২১ সালের ৪ঠাএপ্রিল বিকালে ৪৫ জন যাত্রী নিয়ে নারায়ণগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনাল থেকে এমভি সাবিত আল হাসান নামে একটি লঞ্চ মুন্সিগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এরপর ৬টা ১৫ মিনিটে লঞ্চটি শহরের কয়লাঘাট এলাকায় তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু অতিক্রম করার সময় পেছন থেকে এসকেএল ৩ কার্গো ধাক্কা দিয়ে ডুবিয়ে দেয়। ডুবে যাওয়া লঞ্চের ৪৫ যাত্রীর মধ্যে কয়েকজন সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও ২ শিশু, ১৭ নারীসহ ৩৪ জনের মৃত্যু হয়।