নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর চর সৈয়দপুর আল আমিন নগর এলাকায় কার্গো জাহাজের ধাক্কায় ডুবে যাওয়া লঞ্চটি উদ্ধার করা হয়েছে। ২১শে মার্চ সোমবার ভোর ৫টায় উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয় ডুবে যাওয়া লঞ্চটিকে নদীর তীরে টেনে তুলেছে। তবে এসময় কোনো মরদেহ পাওয়া যায়নি।
এর আগে ২০শে মার্চ রবিবার দুপুরে সিটি গ্রুপের মালিকানাধীন কার্গো জাহাজ এমভি রূপসী ৯ এর ধাক্কায় নারায়ণগঞ্জ টু মুন্সীগঞ্জগামী এম এল আফসার উদ্দিন নামে লঞ্চটি ডুবে যায়। লঞ্চ ডুবির ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এরমধ্যে ৬ জনের লাশ এবং ২ জনের লাশ সোমবার সকালে উদ্ধার করা হয়। পরে স্বজনদের কাছে ৬ জনের লাশ হস্তান্তর করা হয়। ৬ জনের মধ্যে একজন হাসপাতালে মারা গেছেন। অপর দুইজন নারী, একজন পুরুষ ও দুই শিশু। সেই সঙ্গে ১৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন ১৭ জন।
লাশের পরিচয় হচ্ছে : জয়নাল ভুইয়া (৫০) পিতা মৃত: জুলফিকার আলী, উত্তর ইসলামপুর, মুন্সীগঞ্জ সদর, আরিফা বেগম (৩৫) স্বামী–দ্বীন ইসলাম, রমজানগো, মুন্সীগঞ্জ, তার শিশু পুত্র সাফায়েত হোসেন (১৫ মাস), স্মৃতি রাণী বর্মণ (১৯), পিতা জয়রাজ বংশী, ইসমাইলের চর, গজারিয়া, মুন্সিগঞ্জ, উম্মে খায়রুন ফাতেমা (৪৫), স্বামী আবু তাহের সরকার, দেলরবাগ, সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ, সালমা (৩৩), পিতা : আজিজ, মির্জাগঞ্জ, পটুয়াখালী, ফাতেমা (৭), পিতা– ইউনুছ খলিফা, মির্জাগঞ্জ, পটুয়াখালী এবং অজ্ঞাতনামা একজন। নিহত উম্মে খায়রুন ফাতেমা নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বৈদ্যরবাজার হারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শতাধিক যাত্রী নিয়ে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় লঞ্চ টার্মিনাল থেকে এম ভি আফসার উদ্দিন নামে মুন্সীগঞ্জগামী একটি লঞ্চটিকে এমভি রূপসী ৯ নামের কার্গো ধাক্কা দেয়। কার্গোটি ওই লঞ্চকে ঠেলে অনেক দূর নিয়ে যায়। এতে ওই লঞ্চটি মুহূর্তেই ডুবে যায়।
দুর্ঘটনার পর ধাক্কা দেওয়া কার্গো জাহাজ এমভি রূপসী ৯ আটক করেছে নৌ পুলিশ। রবিবার দুপুরে চর সৈয়দপুরের আল আমিন নগর এলাকায় এ দুর্ঘটনার পরই রবিবার সন্ধ্যার দিকে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া হোসেন্দী সংলগ্ন মেঘনা নদী থেকে জাহাজটি মুন্সিগঞ্জের হোসেন দি ডকইয়ার্ডে নোঙ্গর করে। পরে গজারিয়া কোস্ট গার্ড ও নৌ পুলিশ সেখান থেকে কার্গোটি আটক করে। ওই সময় কার্গো জাহাজ থেকে ৮ জনকে আটক করা হয়।
এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল আরেফীন জানান, ডুবে যাওয়া লঞ্চটি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ভেতরে কোনও লাশ পাওয়া যায়নি। তবে ভাসমান অবস্থায় দুটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট লাশের সংখ্যা ৮জন। তিনি আরও জানান, উদ্ধার কাজে ফায়ার সার্ভিস ছাড়াও নৌ–পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএর ডুবুরি দল ও কোস্ট গার্ডসহ একাধিক সংস্থা অংশ নেয়।