নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বদলগাছী, নওগাঁ প্রতিনিধি ) : নওগাঁর বদলগাছীতে স্কুল শিক্ষিকার প্রহারে ১০ জন শিক্ষার্থি আহত হওয়ার ঘটনার ১৮ দিন অতিবাহিত হলেও শিক্ষিকা নাদিরা বহালতবিয়তে থাকায় এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রাখতে উপজেলা শিক্ষাকমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ওই শিক্ষিকাকে গয়েশপুর সরঃ প্রাঃ বিঃ থেকে সরিয়ে একই ইউপির কাটগাড়া সরকারী প্রাঃ বিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা প্রার্থমিক শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষিকা নাদিরা আক্তারের বিরুদ্ধে তাৎক্ষনিক ভাবে ঘটনা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি সদস্য উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ,কে এম খোকন,মোঃ রুহুল আমিন ও রিতা রাণী মহন্ত ৩ দিনের মধ্যে তদন্ত কার্যক্রম সম্পূর্ন করে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট জমা দিলে তা গত ১৫ অক্টোম্বর ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট প্রেরণ করা হয়েছে। সেখান থেকে এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি।
এদিকে ঘটনার ১৮ দিন অতিবাহিত হলেও অভিযুক্ত শিক্ষিকার কোন প্রকার ব্যাবস্থা না হওয়ার কারনে অভিযোগকারী ও আহত ১০ জন শিক্ষার্থির অভিভাবক সহ এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষিকা বহাল তবিয়তে পার্শবর্তী কাটগাড়া স্কুলে শিক্ষকতা চালিয়ে যাচ্ছে। এবং আহত ১০ শিক্ষার্থির মধ্যে ৭ জন মডেল টেষ্ট পরিক্ষায় অংশ গ্রহন করতে পারলেও গুরুত্বর ৩ জন পরিক্ষায় অংশ গ্রহন করতে পারেনি। পরবর্তীতে বিশেষ ব্যবস্থায় আহত ৩ শিক্ষার্থির পরিক্ষার ব্যবস্থা করা হলেও তাদের মধ্যে ১ জন পরিক্ষায় অংশ গ্রহন করলে ও ২ জন শিক্ষার্থি পরিক্ষায় অংশ গ্রহন করতে পারেনি বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ছানাউল হাবিব এর সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, শিক্ষিকা নাদিরা আক্তারের বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তারা যথা শিগ্রহ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন এবং তদন্তে ওই শিক্ষিকার প্রহারে ১০ শিক্ষার্থি আহত হওয়ার বিষয়টি প্রমানিত হয়েছে। বিধায় অভিযুক্ত শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জেলা প্রার্থমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট প্রেরণ করা হয়েছে এখন পর্যন্ত কোন প্রকার সিদ্ধ্যান্ত আসে নাই। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সিদ্ধ্যান্ত অনুয়ায়ী শিক্ষিকা নাদিরা আক্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ১১ অক্টোম্বর বুধবার স্কুল চলাকালীন সময়ে উপজেলার গয়েশপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চলতি পিএসসি মডেল টেষ্টে অংশ গ্রহন করবে এমন ১০শিক্ষার্থি স্কুল মাটে আগত মুড়ির দোকান থেকে মুড়ি খাওয়ার অপরাধে শিক্ষিকা নাদিরা আক্তার ওই শিক্ষার্থিদের হাতে নির্মম ভাবে বেত্রাঘাত করে। এতে ১০ শিক্ষার্থি আহত হয়। তার মধ্যে শিক্ষার্থি নুসরাত জাহান, মোশারাত মালিহা চৌধুরী ও সুমাইয়া মাহমুদ হাতে গুরুত্বর আঘাত প্রাপ্ত হলে ঘটনার পরের দিন তার মডেল টেষ্ট পরিক্ষায় অংশ গ্রহন করতে না পারায় ১২ অক্টোম্বর শিক্ষার্থির অভিভাবক ছারোয়ার জাহান চৌধুরী বিষয়টি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এবং ওই দিন ৩ শিক্ষার্থিকে বদলগাছী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য আনা হলে তাদের হাতের তালু এক্স-রে করে দেখা যায় শিক্ষার্থি মোশারাত মালিহা চৌধুরীর ডান হাতের তালু সহ বৃদ্ধাঙ্গুলীর গোড়ায় সামান্য ফাকচার হয়েছে বলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডাঃ জাহিদ নজরুল চৌধুরী জানিয়েছেন। এমন ঘটনার ১৮ দিন অতিবাহিত হলে ও শিক্ষকা নাদিরা আক্তারের বিরুদ্ধে এখন কোন বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন না করায় আহত শিক্ষার্থির অভিভাবক সহ এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা প্রার্থমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বদরোজ্জেহা এর সাথে গতকাল শনিবার মোবাইলে বার বার যোগাযোগ করার করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই।