নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বন্দর প্রতিনিধি ) : বন্দর উপজেলাধীন মদনপুর সংলগ্ন নাসিক ২৭নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত ফুলহরের ছাত্রলীগ নেতা রিপন হত্যাকান্ডের বিষয়ে নিহত রিপনের শাশুড়ী হাজেরাকে অর্থ লোভ দেখিয়ে মামলাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। আর এই অপচেষ্টার আড়ালে অপর মারাত্মকভাবে আহত ছাত্রলীগ নেতা অহিদকে হত্যা মামলায় জড়িত করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে সর্বত্র। বিশ্বস্ত সূত্র মতে একটি মহল অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করতে বা হয়রানী করে স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে নিহত রিপনের শাশুড়ীকে দিয়ে মিথ্যে বক্তব্য দেয়াচ্ছেন এবং এ বক্তব্য দেয়ার জন্য বিপুল পরিমানের অর্থ লোভ দেখানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাছাড়া এ ধরণের ইস্যুতে হাজেরার বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ঘটনাটি ভিন্নদিকে নিতে কিছু সংখ্যক গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে ভিন্ন ধরনের মনগড়া সংবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে, প্রায় এক সপ্তাহ আগে বন্দরের ইস্পাহানী বাজার থেকে অহিদ, নাজমুল ও রিপন সন্ধ্যার পর মদনপুরের দিকে আসছিলেন, একটু পরে পথিমধ্যে হুমায়ুন ও তার সাথে অজ্ঞাতনামা অপর এক ব্যক্তির সাথে দেখা দেয়, সেখানে একটি মোবাইল ফোনকে কেন্দ্র করে নাজমুল ও হুমায়ুনের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়, তার এক পর্যায়ে ধৃত হুমায়ুন অহিদের সাথে থাকা নাজুলকে ধাক্কা দিলে, তখন অহিদ হুমায়ুনকে ধাক্কা দেয়। তখন হুমায়ুন তার সাথে থাকা ধারালো ছুড়ি দিয়ে অহিদকে আঘাত করলে অহিদ মারাত্মকভাবে আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং পরক্ষণে হুমায়ুন উক্ত রিপন ও নাজমুলকে এলোপাথাড়ীভাবে ছুরি দিয়ে আঘাত করলে তারাও মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। সেক্ষেত্রে নাজমুলের আঘাত কম হলেও সেখানে ছাত্রলীগ নেতা রিপন মারাত্মকভাবে আহত হন। আহতরা দ্রুত ধামগড় ফাঁড়িতে ফোন দিলে ধামগড় ফাঁড়ির কর্তব্যরত ইনচার্জ এস আই মাজহার ও সঙ্গীয় ফোর্স এসে ঘটনাস্থল থেকে হুমায়ুনকে গ্রেফতার করে এবং কোর্টে চালান করে। পরবর্তী দিনে আহত রিপনের ভাই মাসুদ, রিপনকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে বন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এদিকে শুক্রবার সকালে রিপন ৭ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। মৃত্যুর সংবাদটি দ্রুত বন্দর সহ সমগ্র নারায়ণগঞ্জে ছড়িয়ে পড়লে আ:লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ সহ অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিমর্ষ হয়ে পড়েন এবং এর সাথে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনার দাবী জানান। এদিকে গতকাল প্রকাশিত স্থানীয় কিছু পত্রিকায় ছাত্রলীগ নেতা রিপন হত্যার বিষয়ে অপর ছাত্রলীগ নেতা অহিদ, আমজাদ, নাজমুল ও মোমেনের জড়িত থাকার ইঙ্গিত দিয়ে খবর প্রকাশের ভিত্তিতে স্থানীয় এলাকাবাসী ও আ:লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ সহ অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন এবং তাদের দাবী যেখানে অহিদ ও নাজমুল রিপনের সাথে থেকে গুরুতর আহত হলো, এখন তাদেরকে এ বিষয়ের সাথে জড়িত করার কোন কারণ খুজে পাচ্ছিনা আমরা। আমরা এ বিষয়ের সুষ্ঠু তদন্ত আশা করছি। এটা অহিদ তথা বন্দর থানা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে আমরা মনে করি। এদিকে অসুস্থ ছাত্রলীগ নেতা অহিদের সাথে কথা বললে তিনি জানান আমি মারাত্মকভাবে আহত। ঠিকমত কথা বলতে পারছিনা। আমরা আমাদের কাছের মানুষকে হারিয়ে খুব বেদনাহত এবং আমার শরীরের আঘাতের স্থানে প্রায় ৪৫টি সেলাই দেয়া হয়েছে। আমিও অন্যান্যদের মত এ হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবী করছি।